সরকার (প্রশাসনিক একক)
সরকার হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল আমলে ব্যবহৃত একটি ঐতিহাসিক প্রশাসনিক একক।[১] মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিটি সুবাহ বা প্রদেশ বেশ কয়েকটি সরকারে বিভক্ত ছিল।[২] একটি সরকারকে পুনরায় মহল্লা বা পরগনায় ভাগ করা হয়েছিল।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]মুঘল সম্রাট আকবর সিংহাসনে আরোহণের চল্লিশ বছর পর তাঁর শাসনাধীন সমগ্র সাম্রাজ্যকে ১২টি সুবার অধীনে সর্বমোট ১০৫টি সরকারে বিভক্ত করেন। একই ধারাবাহিকতায় সরকারগুলোকে পুনরায় ২০৩৭ টি মহল/মহল্লা বা পরগনায় ভাগ করা হয়।[১]
বাংলায় সরকার ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]মুঘল সম্রাট বাংলা দখলে সক্ষম হলে টোডরমলের ব্যবস্থাপনায় ১৫৮২ সালে রাজস্ব সংগ্রহ আরও সহজ করার লক্ষ্যে সুবাহ বাংলাকে ১৯টি সরকারে বিভক্ত করেন। সরকারগুলো পরিচালনার লক্ষ্যে তিনজন প্রধান সরকারি কর্মকর্তার অধীনে এই ১৯টি সরকারের দায়িত্ব প্রদান করেন। তাঁরা হলেন সিকদার-ই-সিকদারান (অর্থ, প্রশাসন ও সেনাদলের দায়িত্বে), মুনসিফ-ই-মুনসিফান (রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে) ও কাজি (বিচারিক প্রধান)। [১]
সম্রাট আকবর সুবাহ বাংলার ১৯টি সরকারকে মোট ৬৮২টি মহল/মহল্লা বা পরগণায় বিভক্ত করেন। ১৬৫৬ সালে বাংলার সুবাহদার শাহ সুজা সরকার ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার করেন। এছাড়াও তিনি উড়িষ্যাকে সুবাহ বাংলার সাত্থে যুক্ত করেন। ফলে সুবাহ বাংলায় ৫টি সরকার বৃদ্ধি পেয়ে মোট ২৪টি সরকারের অধীনে মহল বা পরগনার সংখ্যা হয় ৭৮১টি। [১]
আঠারো শতকের গোড়ার দিকে বাংলার নবাব মুর্শিদকুলি খান সরকার ব্যবস্থাটি বিলুপ্ত করে চাকলা ব্যবস্থা চালু করেন। [৩]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ আক্তার, নাসরীন (২০১২)। "সরকার"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ (দ্বিতীয় সংস্করণ)। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি।
- ↑ চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Circar"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ। 6 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 380।
- ↑ আখতার, শিরীন (২০১২)। "চাকলা ব্যবস্থা"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ (দ্বিতীয় সংস্করণ)। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি।