লাইশরাম সরিতা দেবী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লাইশরাম সরিতা
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামসরিতা দেবী
জাতীয়তাভারতীয়
জন্ম (1982-03-01) ১ মার্চ ১৯৮২ (বয়স ৪২)
থৌবাল খুনৌ, থৌবাল, মণিপুর, ভারত
উচ্চতা১৬৮ সেমি
ওজন৬০ কেজি
ক্রীড়া
ক্রীড়ামুষ্টিযুদ্ধ
ওজন শ্রেণীলাইটওয়েট
ক্লাবঅল ইণ্ডিয়া পুলিশ
পদকের তথ্য
মহিলাদের অপেশাদার বক্সিং
 ভারত-এর প্রতিনিধিত্বকারী
ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ২০০৬ নতুন দিল্লি লাইট ব্যান্টামওয়েট
ব্রোঞ্জ পদক - তৃতীয় স্থান ২০০৫ পোডলস্ক ব্যান্টামওয়েট
ব্রোঞ্জ পদক - তৃতীয় স্থান ২০০৮ নিংবো লাইট ব্যান্টামওয়েট
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ২০০৩ হিসার ব্যান্টামওয়েট
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ২০০৫ কাওশিউং সিটি ব্যান্টামওয়েট
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ২০০৮ গুয়াহাটি লাইট ব্যান্টামওয়েট
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ২০১০ আস্টানা ফ্লাইওয়েট
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ২০১২ উলানবাতার লাইটওয়েট
রৌপ্য পদক - দ্বিতীয় স্থান ২০০১ ব্যাংকক ফেদারওয়েট
ব্রোঞ্জ পদক - তৃতীয় স্থান ২০১৭ হো চি মিন সিটি লাইট ওয়েল্টারওয়েট
ব্রোঞ্জ পদক - তৃতীয় স্থান ২০১৯ ব্যাংকক লাইটওয়েট
এশিয়ান গেমস
ব্রোঞ্জ পদক - তৃতীয় স্থান ২০১৪ ইনছন লাইটওয়েট
কমনওয়েলথ গেমস
রৌপ্য পদক - দ্বিতীয় স্থান ২০১৪ গ্লাসগো লাইটওয়েট

লাইশরাম সরিতা দেবী (জন্ম ১লা মার্চ ১৯৮২) হলেন মণিপুরের একজন ভারতীয় বক্সার। তিনি একজন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন এবং লাইটওয়েট ক্লাসে প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।[১] ২০০৯ সালে, তিনি তাঁর কৃতিত্বের জন্য ভারত সরকার কর্তৃক অর্জুন পুরস্কারে ভূষিত হন।[২]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

সরিতা দেবী খুনৌ থৌবালে একটি মৈতৈ হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তিনি ছিলেন আট ভাইবোনের মধ্যে ষষ্ঠ। তিনি বাবা-মাকে কাঠ সংগ্রহে সাহায্য করতেন এবং ক্ষেতে সাহায্য করার জন্য নিজের সময় ব্যয় করতেন। এর ফলে তাঁর মধ্যে যে সহনশক্তি তৈরি হয়েছিল, বর্তমানে সেই শক্তি তাঁকে টিঁকে থাকতে সাহায্য করে।[৩] সরিতা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ওয়াইথউ মাপাল হাইস্কুলে পড়েছিলেন এবং তারপর ম্যাট্রিকুলেশন শেষ করেন থৌবলের বাল বৈদ্য মন্দির থেকে। এরপরে নিজের ব্যস্ত বক্সিং সময়সূচী সামলানোর জন্য তিনি প্রথাগত বিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষা লাভের জন্য একটি উন্মুক্ত বিদ্যালয়ে ভর্তি হন।[৩]

খেলোয়াড় জীবন[সম্পাদনা]

মুহম্মদ আলীর কৃতিত্ব দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ২০০০ সালে সরিতা দেবী বক্সিংয়ে পেশাদার হন। পরের বছর, তিনি ব্যাংককে এশিয়ান বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং নিজের ওজন শ্রেণিতে রৌপ্য পদক জিতেছিলেন।[৪] এই জয়ের পর, তিনি নতুন দিল্লিতে ২০০৬ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা সহ বিভিন্ন টুর্নামেন্টে পদক জিতেছিলেন। ২০০৫ সালে, রাশিয়ার তৃতীয় বিশ্ব মহিলা বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক জেতার জন্য মণিপুরের পুলিশ বিভাগ তাঁকে সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পদের প্রস্তাব দেয় এবং ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ডিএসপি পদে উন্নীত হন।[৫] তিনি গ্লাসগোতে ২০১৪ কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্য পদকও জিতেছিলেন।[৬]

তিনি ০-৩ পয়েন্টে ভিক্টোরিয়া টরেসের কাছে হেরে যাওয়ার পর, ২০১৬ রিও অলিম্পিকের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হন।[৭] ২০১৮ সালে, তিনি ইন্ডিয়ান ওপেন ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ, নতুন দিল্লিতে রৌপ্য পদক জিতেছেন এবং সিনিয়র ন্যাশনাল বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ, রোহতকে স্বর্ণপদক জিতেছেন।[৮] তিনি মহিলা বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপেও সান্দ্রা ডায়ানার বিরুদ্ধে ৪-০ ব্যবধানে জয়লাভ করেন।[৯]

২০১৪ এশিয়ান গেমস বিতর্ক[সম্পাদনা]

লাইটওয়েট বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দক্ষিণ কোরিয়ার ইন্‌ছনে ২০১৪ সালের এশিয়ান গেমসে প্রবেশ করেন দেবী। রাউন্ড অফ ১৬ এবং কোয়ার্টার ফাইনাল উভয় ক্ষেত্রেই ৩-০ ব্যবধানে জয়ের পর, তিনি ৩০শে সেপ্টেম্বর সেমিফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার পার্ক জি-না-এর মুখোমুখি হতে বক্সিং রিংয়ে প্রবেশ করেন। ম্যাচের পরে, তাঁকে ম্যাচের বিচারকদের দ্বারা ০-৩ পরাজয়ের রায় দেওয়া হয়, যা অত্যন্ত বিতর্কিত হয়ে ওঠে। প্রথম ও দ্বিতীয় রাউন্ড জুড়ে সরিতা দেবী পার্ককে প্রচুর মুষ্ট্যাঘাত করেছিলেন। এরপর তৃতীয় রাউন্ডে তিনি পার্ককে ছিটকে বাইরে ফেলে দিয়েছিলেন এবং চতুর্থ রাউন্ডও তাঁর লড়াই প্রত্যয়জনক ছিল।[১০][১১] এর পরে, ভারতীয় দল এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়, যা এআইবিএ এর প্রযুক্তিগত কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছিল।[১২] পদক প্রদান অনুষ্ঠানে, দেবী তাঁর ব্রোঞ্জ পদক গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন এবং রৌপ্য পদক বিজয়ী পার্কের হাতে তা তুলে দেন।[১৩] যদিও পরে তিনি পদক গ্রহণ করেন।[১৪] এর পর এআইবিএ তাঁর প্রশিক্ষকদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। এআইবিএ তাঁকে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।[১৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Laishram Sarita Devi defeats Alexandra Kuleshova of Russia in Boxing World Championships"sportskeeda.com। ১১ সেপ্টেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৪ 
  2. "Mary Kom and Sarita Devi receive Awards"। newstrackindia। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২৩ 
  3. E-Pao!। "Laishram Sarita Devi - 'Arjuna Award' Awardee in the field of Women Boxing -"About Sarita Devi। E-Pao!। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১২ 
  4. "Woman boxer Laishram Sarita Devi crowned with Arjuna Award"oneindia.in। ২৯ আগস্ট ২০০৯। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৪ 
  5. "profile of sarita" 
  6. "CWG Silver Medallist Boxer Sarita Devi To Quit After Olympics 2016"। NDTV। ২০ আগস্ট ২০১৪। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৪ 
  7. "2016 Rio Olympics" 
  8. "L sarita devi" 
  9. "women world championship" 
  10. India Today। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ http://indiatoday.intoday.in/story/asian-games-sarita-devi-loses-controversial-bout-settles-for-bronze/1/393454.html। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৪  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  11. "Asian Games 2014: Sarita Devi Loses Controversial Boxing Semifinal, Husband Loses Cool"। NDTV। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪। ৩ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৪ 
  12. "Indian boxing team protest against Sarita's loss rejected"The Hindu। ১ অক্টোবর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৪ 
  13. "Inconsolable Sarita refuses bronze, medal with organisers"The Hindu। ১ অক্টোবর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৪ 
  14. "Boxer Sarita Devi Accepts Bronze Medal After Olympic Council of Asia Hearing"। NDTV। ৩ অক্টোবর ২০১৪। ২ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৪ 
  15. "Sarita let off with one-year ban"The Tribune। ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৮ 

টেমপ্লেট:ফুটার বিশ্ব মহিলা অপেশাদার চ্যাম্পিয়ন লাইট ব্যান্টামওয়েট