লতাকাটা যুদ্ধ
লতাকাটা যুদ্ধ বলতে আহোম স্বর্গদেউ রাজেশ্বর সিংহর সময়ে মণিপুরে চালানো অসফল প্রথম অভিযানকে বোঝানো হয়। চুখ্রংফা বা রুদ্র সিংহর চতুর্থ পুত্র চুরাম্ফা রাজেশ্বর সিংহ নাম নিয়ে ১৭৫১ সালে রাজ্যপাট পান। মায়ানমারের আক্রমণে রাজ্য হারানো মণিপুররের রাজা জয় সিংহ ১৭৬৫ সালে স্বর্গদেউকে সহায়তার জন্য অনুরোধ করেন। প্রধানদের সাথে আলোচনা করে স্বর্গদেব জয় সিংহকে সহায়তা করতে রাজি হলেন। একদল সৈন্য তৈরি হল কিন্তু বহু প্রধানই অজুহাতে দলের নেতৃত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। তাঁদের প্রধান পদ থেকে সরিয়ে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হল। অবশেষে হরনাথ ফুকনকে সেনাপতি করে সৈন্যদলটি সরাইদেউর দক্ষিণ দিয়ে মণিপুরে অভিযান আরম্ভ করে।[১] কিন্তু পথ এমনই বিপদসংকুল ছিল যে তাঁদের পথ পেরোতে বহু শক্তি এবং সময় যায়। বহু সৈন্যের আহারের অভাবে, নাগাদের আক্রমণতলে এবং সর্পদংশনে মৃত্যু ঘটে। রাজার কানে এই কথা গেলে তিনি সৈন্যদলটিকে ফিরে আসতে নির্দেশ দেন। মণিপুরের দুর্গম পথ দিয়ে যাওয়ার সময় সাপে (লতা) কাটার ফলে আহোম সৈন্যের অগ্রসর না হওয়ার জন্য এই অসফল অভিযানকে "লতাকাটা যুদ্ধ" বলা হয়।[২]
১৭৬৮ সালের নভেম্বরে দ্বিতীয় একদল সৈন্য রহা ও কাছাড়ি রাজ্যের মধ্য দিয়ে পাঠানো হয়। মূল দলটি রহাতে থাকে এবং দশ হাজার সৈন্য জয় সিংহের সাথে মিরাপ নদী পর্যন্ত যায়। জয় সিংহ নাগাদের একটি দল গঠন করে মায়ানদের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠা করা কেলেম্বাকে তাড়িয়ে দেয়। কৃতজ্ঞতার চিহ্নস্বরূপ জয় সিংহ রাজেশ্বর সিংহকে বহু উপহার দেওয়ার সাথে কন্যা কুরঙ্গনয়নীকে তাঁর বিয়ে দেন। কুঁবরীর সাথে আসা বহু মণিপুরী লোক দিছৈর কাছে থাকতে আসাতে এই স্থান মগলুহাট বা মণিপুরী বজারো' নামে পরিচিত হয়।[১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Gait, E. A. (১৯০৬)। A History of Assam। Calciutta: Thacker, Spink & Co.। পৃষ্ঠা 182।
- ↑ Gogoi, Padmeswar (১৯৬৮)। The Tai and the Tai kingdoms। Guwahati: Gauhati University। পৃষ্ঠা 518।