কুরঙ্গনয়নী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কুরঙ্গনয়নী (ইংরেজি: Kurangayani) আহোম স্বর্গদেউ রাজেশ্বর সিংহর পত্নী এবং প্রধান রাণী ছিলেন। স্বর্গদেব মায়ানমারের কবল থেকে মণিপুরের সিংহাসন উদ্ধারের জন্য করা সহায়তার চিহ্নস্বরূপ জয় সিংহ‌ তাঁর কন্যা কুরঙ্গনয়নীকে ১৭৬৮ সালে রাজেশ্বর সিংহ‌ের সাথে বিয়ে দেন।[১] আগের সময়ে মণিপুরের মানুষকে অসমীয়ারা মগলু বা মগলৌ বলত। মণিপুরের কন্যা হওয়ার জন্য কুরঙ্গনয়নী মগলু কুঁবরী বা মগলৌ কুঁবরী বলেও ডাকা হয়। অন্যদিকে মণিপুরিরা তাঁকে তেখাও-লেইমা বা আসাম কুঁবরী বলে স্মরণ করেন। প্রথম মোয়ামরীয়া বিদ্রোহ দমনের ক্ষেত্রে কুরঙ্গনয়নী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

১৭৬৯ সালে রাজেশ্বর সিংহর মৃত্যুর পরে তাঁর ভাি চুণ্যেউফা লক্ষ্মী সিংহ নাম নিয়ে রাজ্যপাট পান এবং কুরঙ্গনয়নীকে বিয়ে করেন। কিছুদিন পরে আহোম রাজ্যে রাঘ নেওগের নেতৃত্বে মোয়ামরীয়া বিদ্রোহর সূত্রপাত হয়। বিদ্রোহীরা আহোম রাজধানী অধিকার করে নাহরখরার রমানন্দকে সিংহাসনত বসায় এবং লক্ষ্মী সিংহকে বন্দী করে। রাঘ নেওগ কুরঙ্গনয়নীর সাথে রাজেশ্বর সিংহের বিধবা পত্নী এবং লক্ষ্মী সিংহর পত্নীদের জোর করে নিজের কাছে রাখে।[২]

প্রজারা পূর্বের স্বর্গদেউর প্রধানদের অসমর্থন করতে রাজি না হলে রাজা রমাকান্ত অসন্তুষ্ট হয়ে সকল প্রধান এবং লক্ষ্মী সিংহকে হত্যা করতে পরিকল্পনা করেন। এই কথার অনুমান করে পূর্বের সকল প্রধান এক হয়ে বিদ্রোহ দমন করতে সংকল্প নেয়। ইতিমধ্যে বিদ্রোহীদের বেশিরভাগই বাড়ি গেছিল এবং রাজধানীতে রমাকান্তের সাথে কয়েকজন সহকারী ছিল। ১৭৭০ সালের এপ্রিলে বহাগ বিহুর আগের রাতে রাঘের ঘর ঘেরাও করা হয় এবং তাঁকে বাইরে টেনে এনে হত্যা করা হয়। অনেকের মতে কুরঙ্গনয়নীই পিছনদিক থেকে প্রথম আঘাত করেছিলেন।[২] রমাকান্ত সমায়িকভাবে পালিয়ে যান কিন্তু তাঁর বাবা, আত্মীয় এবং প্রধানদের ধরে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এইভাবে প্রথম মোয়ামরীয়া বিদ্রোহর অন্ত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Pathak, Guptajit (২০০৮)। "Assamese Women in Indian Independence Movement: With a Special Emphasis on Kanaklata Barua"। Mittal Publications, New Delhi। পৃষ্ঠা 20–21। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৭ 
  2. Gait, E. A. (১৯০৬)। A History of Assam। Calciutta: Thacker, Spink & Co.। পৃষ্ঠা 186-87।