রিকশাচিত্র

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

রিকশাচিত্র বা রিকশা আর্ট বা ত্রিচক্রযানচিত্র বাংলাদেশের[১], নব্য-রোমান্টিকতার মধ্যে আবির্ভূত একটি শিল্প ধারা। এই শিল্পকে বহমান ঐতিহ্য বা লিভিং ট্রেডিশনও বলা হয়।এই ধরনের চিত্রকর্ম ভারতের কিছু জায়গায়ও দেখা যায়।

এ ক্ষেত্রে স্থানীয় রাস্তার শিল্পী কর্তৃক ক্যানভাস হিসাবে রিকশার পিছনে ছোট ছোট অনুষঙ্গে এই বিশেষ চিত্রকলা লক্ষ করা যায়। যেখানে রিকশার মালিকের ইচ্ছায় হুডে বিভিন্ন ল্যান্ডস্কেপ ও পোর্ট্রেট চিত্রায়ন করা হয়।

২০২৩ সালে ইউনেসকোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায় ঢাকা শহরের ‘রিকশা ও রিকশাচিত্র’।[২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বিশ শতকের প্রথমভাগে, মূলত ত্রিশের দশকে, ঢাকাসহ বাংলাদেশের আরো কয়েকটি জায়গায় রিকশার প্রচলন ঘটে। তবে সেসময়কার অর্থাৎ ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে বাংলাদেশের রিকশাচিত্র সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য জানা না গেলেও পঞ্চাশ ও ষাটের দশক থেকে এর ধারাবাহিক ইতিহাস জানা যায়। এই দীর্ঘ সময়ে অসংখ্য মোটিফ এঁকেছেন শিল্পীরা।

উদ্দেশ্য[সম্পাদনা]

রিকশাকে সুসজ্জিত ও আকর্ষণীয় করাই হলো রিকশা আর্টের মূল লক্ষ্য। সাধারণত শিল্পীরা মহাজন এবং ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ছবি এঁকে থাকেন।

বাংলাদেশে রিকশাচিত্র[সম্পাদনা]

বাহারী ও শৌখিন পরিবহন হিসেবে ঢাকায় রিকশার আগমন ১৯৪৭-এর দেশভাগের পর এবং তখন থেকেই সূত্রপাত রিকশাচিত্রের, পঞ্চাশ ও ষাটের দশক থেকে যা এ অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বাংলাদেশে রিকশাচিত্র ১৯৫০ এর দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায় জ্যামিতিক নকশার পাশাপাশি ফুল, পাখি এমনকি জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকাদের ছবি আঁকারও প্রচলন ছিল। যদিও উচ্চবিত্ত শ্রেণীর লোকজন রিকশাচিত্রের মর্যাদা সম্পর্কে অতোটা ওয়াকিবহাল নন এবং কিছুটা হেয় করেই দেখে থাকেন.।[৩]

ষাটের দশকে চলচ্চিত্র তারকাদের প্রতিকৃতি, স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধ ও সত্তরের দশকের পর বর্ধিত ঢাকার কাল্পনিক দৃশ্য রিকশাচিত্রের প্রধান উপজীব্য ছিল। এ ছাড়া গ্রামীণ জনজীবন, প্রাকৃতিক দৃশ্য, মিথ বা ধর্মীয় কিংবদন্তি, স্মৃতিসৌধ, সংসদ ভবন, শহীদ মিনার, তাজমহল, সিনেমার দৃশ্য, রাস্তা ও পশুপাখির ছবি রিকশাচিত্রকে করেছে বৈচিত্র্যময়।

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বাংলাদেশের রিকশাচিত্র"প্রথম আলো। ১৩ এপ্রিল ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৭ 
  2. ইউনেসকোর স্বীকৃতি পেল ঢাকার রিকশাচিত্র, ইত্তেফাক, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩
  3. Marshall Cavendish Corporation (২০০৭)। World and Its Peoples: Eastern and Southern Asia। Marshall Cavendish। পৃষ্ঠা 479। আইএসবিএন 0-7614-7631-8। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ৬, ২০১০