রাহুকাল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাহু গ্রহ

হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্রে, রাহুকাল ( সংস্কৃত: राहुकाल ) বা রাহুকালম ( সংস্কৃত: राहुकालम् ) হলো দিনের একটি অশুভ সময়।[১] এই সময়টিকে কোন ভাল কাজ শুরু করার জন্য অনুকূল বলে মনে করা হয় না। রাহুকাল প্রতিদিন সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের মধ্যে প্রায় ৯০ মিনিটের জন্য বিস্তৃত থাকে।

মুহুর্ত গণনার সময় এই অশুভ সময়টিকে কঠোরভাবে এড়ানো হয়। তবে ইতিমধ্যেই শুরু করা প্রাত্যহিক কাজগুলিকে এই সময়ের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।[২]

জ্যোতিষশাস্ত্র[সম্পাদনা]

পুরাণ[সম্পাদনা]

রাহু হলো একটি ছায়া গ্রহ। হিন্দু গ্রন্থে উল্লিখিত নবগ্রহের (নয়টি গ্রহ) মধ্যে একে উল্কার রাজা বলা হয়।[৩] পৌরাণিক কাহিনীতে সমুদ্র মন্থনের সময় রাহু স্বরভানু নামে একজন অসুর দেবের ছদ্মবেশে লুকিয়ে অমৃতত্ব লাভের জন্য দিব্য অমৃতের কয়েক ফোঁটা পান করে। সূর্য্য ও চন্দ্রদেব তাকে চিনতে পেরে ভগবান বিষ্ণুকে জানায়। স্বরভানু পরে ধরা পড়ে যান। অমৃত গলাধঃকরণের পূর্বেই বিষ্ণু আপন সুদর্শন চক্রের মাধ্যমে স্বরভানুর ধড় থেকে মুন্ড ছিন্ন করে দেন। বিষ্ণুর সুদর্শন চক্রের দ্বারা তার দেহ দুই টুকরো করা হয়। অমৃত পানের জন্য মুন্ডটি অমরত্ব লাভ করে রাহু গ্রহটির উৎপত্তি হয়। বাকী মুন্ডহীন দেহটির নাম হয় কেতু।

রাহুকে একটি ক্ষতিকারক গ্রহ হিসাবে বিবেচনা করা হয় যা সূর্য গ্রহণের[৪]

হিসাব[সম্পাদনা]

রাহুকালকে সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে নির্ধারিত সময়ে পূর্বনির্ধারিত পদ্ধতিতে গননা করা হয়। তবে এই কাল সূর্যোদয়ের সময় অনুসারে পরিবর্তিতও হতে পারে। স্থানভেদে এর দৃষ্টান্তও পরিবর্তিত হয়।[২] সূর্যোদয়ের সময়টি পঞ্চাঙ্গম (পঞ্জিকা) এ চিহ্নিত করা হয়েছে। দিনের ১২ ঘন্টা সময়টিকে আটটি সমান ভাগে বিভক্ত (ভারতীয় সময় সকাল ৬:০০ থেকে সন্ধ্যে ৬:০০) করা হয়। রাহুকালের সময়কাল দিনের প্রথম অংশে ঘটে না এবং বাকি সাতটি অংশ দিনের অন্যান্য বিভিন্ন অংশের জন্য দায়ী করা হয়।[২] সমসাময়িকভাবে:

  • সোমবার: সকাল ৭:৩০থেকে সকাল ৯:০০ (২য় অংশ)
  • মঙ্গলবার: বিকেল ৩:০০ থেকে বিকেল ৪:৩০ (৭ম অংশ)
  • বুধবার: বেলা ১২:০০ থেকে বেলা ১:৩০ (৫ম অংশ)
  • বৃহস্পতিবার: বেলা ১:৩০ থেকে ৩:০০ (৬ষ্ঠ অংশ)
  • শুক্রবার: সকাল ১০:৩০ থেকে বেলা ১২:০০ (৪র্থ অংশ)
  • শনিবার: সকাল ৯:০০ থেকে সকাল ১০:৩০ (৩য় অংশ)
  • রবিবার: বিকাল ৪:৩০ থেকে সন্ধে ৬:০০ (৮ম অংশ)

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Grimes, John A. (১৯৯৬-০১-০১)। A Concise Dictionary of Indian Philosophy: Sanskrit Terms Defined in English (ইংরেজি ভাষায়)। SUNY Press। পৃষ্ঠা 253। আইএসবিএন 978-0-7914-3067-5। ২০২৩-১০-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-০৫ 
  2. Narayanam, A. Sathya (২০১৭-১২-১৪)। "What is Rahu Kaal and Timing of Rahu Kaal Every Day"The Times of India। ২০২০-১১-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-০৬ 
  3. Dalal, Roshen (২০১০)। Hinduism: An Alphabetical Guide। Penguin Books। পৃষ্ঠা 280, 324। আইএসবিএন 978-0-14-341421-6 
  4. Kramrisch, Stella; Burnier, Raymond (১৯৭৬)। The Hindu temple। Motilal Banarsidass Publ.। পৃষ্ঠা 325–6। আইএসবিএন 978-81-208-0224-7। ৩০ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২৩