রবিশস্য
রবিশস্য, রবি ফসল, চৈতালি ফসল বা রবিখন্দ (হিন্দি: रबी, উর্দু: رَبِیع, গুরুমুখী: ਰੱਬੀ) গ্রীষ্মকালে রোপিত কৃষিজাত ফসল। চাষাবাদকৃত এ ফসল পরবর্তীতে গ্রীষ্মকালে উত্তোলন করা হয়। এ পরিভাষাটি আরবি শব্দ থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যার অর্থ বসন্ত। রবিশস্য পরিভাষাটি ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। এটি বসন্তকালীন ফসল হলেও ভারতীয় উপমহাদেশে প্রধানত শীতকালীন ফসলরূপে আখ্যায়িত। হেমন্তকালে বীজ বুনে যে ফসল কৃষক বসন্তকালে ঘরে তোলে তা-ই রবিশস্য।


আরবি ভাষায় রবী শব্দের অর্থ বসন্ত। মধ্য-নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত রবি মৌসুমের মেয়াদকাল। শীতকালীন ফসলের জন্যে বর্ষাকালে সঞ্চিত পানি প্রধান উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিকল্প ব্যবস্থায় জমিতে সেচ প্রয়োগ করা হয়। গভীর কিংবা অগভীর নলকূপ, খাল-বিল, নদী-নালার পানি রবিশস্যের জন্য প্রয়োজন। খারিফ ফসলের জন্যে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত প্রয়োজন হলেও তা রবিশস্যের জন্যেও ব্যাপক গুরুত্ব বহন করে। মৌসুমী বৃষ্টিপাতের পরপরই রবি ফসল উত্তোলন করা হয়। এপ্রিল/মে মাসেই সাধারণতঃ কৃষক রবিশস্য গুদামজাত করে থাকে।
ধরন
[সম্পাদনা]গম, মসুর ডাল, যব, পেঁয়াজ, মটরশুটি ইত্যাদি ফসলকে প্রধান রবিশস্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে উপমহাদেশের বাজারগুলো সবুজ ফসলে ভরে যায়। তন্মধ্যে ভরা মৌসুম হিসেবে ফেব্রুয়ারিকে ধরা হয়ে থাকে।[২] খারিফ এবং রবি মৌসুমে অনেক ধরনের ফসল চাষাবাদ করা হয়। উপমহাদেশের কৃষিজাত ফসলগুলো অনেকাংশেই প্রকৃতি ও মৌসুমী বায়ুর উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।[৩] মৌসুমী বায়ুর প্রত্যাবর্তনের সাথে সম্পর্ক রেখে যে শস্যের চাষ করা হয় অর্থাৎ শীতের শুরুতে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে যে শস্যের চাষ করা হয় তাকে রবি শস্য বলে।[৪]
এইসব ফসল শীতের শুরুতে রোপণ করা হয় এবং শীতের শেষ বা গ্রীষ্মকালের শুরুতে কাটা হয়।
উদাহরণ
[সম্পাদনা]গম, জোয়ার ,তৈলবীজ, আউস ধান, আলু, গাজর, কপি প্রভৃতি রবিশস্যের উদাহরণ।
বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]এই চাষ জলসেচ নির্ভর হলেও শুষ্ক জমিতে শস্য উৎপাদন করা যায় ।
হেক্টরপ্রতি উৎপাদন বেশি হয়।
অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসের সময় এই শস্য রোপণ করা হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ (Guitarist), Ravi (১৯৯৮)। "Ravi."। ওসিএলসি 52820197।
{{সাময়িকী উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি journal এর জন্য|journal=প্রয়োজন (সাহায্য) - ↑ Balfour, Edward (১৮৮৫)। The Cyclopaedia of India and of Eastern and Southern Asia (3 সংস্করণ)। London: Bernard Quaritch। পৃ. ৩৩১।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৫ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ দাস, দুলাল (২০১৭)। দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ। কলকাতা: ছায়া প্রকাশনী। পৃ. ১০৯।