মিতা চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাংলাদেশের টিভি ও মঞ্চনাটকের শিল্পী মিতা চৌধুরী। সত্তর-আশির দশকে নাট্যাঙ্গনের পরিচিত মুখ ছিলেন মিতা চৌধুরী।[১] মিতা চৌধুরী নামে পরিচিত হলেও তিনি মিতা রহমান নাম ব্যবহার করতেন। মঞ্চনাটকে সূক্ষ্ম অভিনয় বা টিভি পর্দায় জাঁদরেল অভিনেত্রী হিসেবে আলোচিত ছিলেন তিনি। [২]

শৈশব ও প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

মিতা চৌধুরীর জন্ম ১৯৫৮ সালের ২২ জানুয়ারি পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়াতে। তাঁর বাবা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর আমিনুল হক চৌধুরী, মা নূর-ই–আক্তার বানু গৃহিণী ছিলেন। তিনি লক্ষ্মীবাজারের সেন্ট ফ্রান্সিস হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং হলি ক্রস গার্লস কলেজ থেকে এইএচএসসি পাস করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি এইচএসসিতে মেয়েদের মধ্যে মেধাতালিকায় প্রথম এবং সম্মিলিত মেধাতালিকায় অষ্টম হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা করেন। মিতা চৌধুরীর দুই সন্তান। দুই ভাই কাইজার চৌধুরী, সিজার চৌধুরী। ২০২২ সালের অক্টোবরে ক্যানসারে মারা যান তাঁর স্বামী শহীদুর রহমান।[৩]

অভিনয়জীবন[সম্পাদনা]

দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় নাট্যজগতে কাজ শুরু করেন মিতা চৌধুরী। তিনি একসময় বিটিভিতে অভিনয় করতেন আর বেতারে খবর পড়তেন এবং ‘ওয়ার্ল্ড মিউজিক’ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করতেন। বিটিভিতে মিতা চৌধুরীর প্রথম নাটক আতিকুল হক চৌধুরীর ‘আরেকটি শহর চাই’। প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘শান্ত কুটির’। ১৯৭৫-৭৬ সালের দিকে ‘বরফ গলা নদী’ নাটকটির পর মিতা চৌধুরীর আলাদা অবস্থান তৈরি হয়। ‘বরফ গলা নদী’ নাটকে মিতা চৌধুরীর চরিত্রের নাম ‘লিলি’। ‘নন্দিত নরকে’ তাঁর অভিনীত আরেকটি উল্লেখযোগ্য নাটক। শুধু টিভি নাটকই নয়, মঞ্চে ‘সূচনা’ ও ‘গুড নাইট মা’–এর মতো প্রযোজনায় নিজেকে জড়িয়েছেন। ২০১৫ সালে ‘অমানুষ’ নাটকে মামুনুর রশীদের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। মিতা চৌধুরী অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা ‘বিষ’, ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ ও ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। ২০০৬ সালে দেশে ফিরে নাটকে কাজ করেছিলেন। সে যাত্রায় প্রায় ১০ বছর ছিলেন ঢাকায়। এ সময় তাঁকে দেখা গেছে ‘ডলস হাউস’, ‘যোগ-বিয়োগ’ ইত্যাদি নাটকে। আবার ফিরে যান লন্ডনে, সেখানেই শেষ হয় তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনযাত্রা। সুবর্ণা মুস্তাফা প্রথম টিভি নাটকে “বরফ গলা নদী” মিতার সঙ্গে অভিনয় করেন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

২৯ জুন ২০২৩ তারিখে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায় লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ক্যানসারে ভুগছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. প্রতিবেদক, বিনোদন (২০২৩-০৬-৩০)। "বোর্ড পরীক্ষায় মেধাতালিকায় প্রথম হয়েছিলেন মিতা চৌধুরী"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-৩০ 
  2. "অভিনেত্রী মিতা চৌধুরী মারা গেছেন"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-৩০ 
  3. রিপোর্ট, স্টার অনলাইন (২০২৩-০৬-২৯)। "মিতা চৌধুরী আর নেই"The Daily Star Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-৩০ 
  4. "চলে গেলেন অভিনেত্রী মিতা চৌধুরী"চ্যানেল আই অনলাইন (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৬-২৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-৩০