মারাঠি বৌদ্ধ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মারাঠি বৌদ্ধ
দীক্ষাভূমি স্মারক, যা মহারাষ্ট্রের নাগপুরে অবস্থিত, ১৯৫৬ সালে বি. আর. আম্বেডকর এখানেই বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহন করেন, এটি এশিয়ার সবচেয়ে বড় স্তুপ।[১]
মোট জনসংখ্যা
 India 6,531,200 (2011)
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
Maharashtra
ভাষা
Marathi
ধর্ম
Navayana Buddhism
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী
Marathi people

মারাঠি বৌদ্ধ হল মারাঠি জাতি এবং ভাষার সন্নিধিতে অন্তর্ভুক্ত বৌদ্ধ ধর্ম অনুসরনকারী জন সম্প্রদায়। এই ধর্মীয় সম্প্রদায় ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে বসবাস করে। তাদের মাতৃভাষা হিন্দি এবং মারাঠি। মারাঠি বৌদ্ধ সম্প্রদায় ভারতের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ সম্প্রদায়। ২০১১ সালের ভারতীয় জনগণনা অনুসারে, মহারাষ্ট্রে বসবাসকারী মারাঠি বৌদ্ধদের সংখ্যা হল ৫.৮১% যা দেশের মোট বৌদ্ধ জনসংখ্যার ৭৭%।[২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহন করার মুহূর্তে বি. আর. আম্বেডকর -এর ভাষণ, নাগপুর, ১৪ অক্টোবর, ১৯৫৬

প্রায় সব মারাঠি বৌদ্ধ নবায়ন প্রথা -এর অনুসরণকারী। নবায়ন প্রথা হল একটি বৌদ্ধ পুনরুদ্ধার আন্দোলন যা ২০ শতকের ভারতে বৌদ্ধ ধর্ম পুনরুদ্ধার করার উদ্দেশে সংগঠিত হয়। বি. আর. আম্বেডকর এই আন্দোলনের প্রমুখ মুখপাত্র ছিলেন। তিনি হিন্দুধর্মের জাতি ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা ও বর্ণাধিকার থেকে উদ্ভুত অন্যায়ের বিরুদ্ধে সামাজের নিম্নস্তরের শোষিত মানুষদের বৌদ্ধ ধর্মে‌ ধর্মা‌ন্তরিত হতে আহ্বান করেন।[৩]

বৌদ্ধধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার তার প্রথম ইচ্ছা প্রকটের প্রায় ২০ বছর পর ১৪ অক্টোবর ১৯৫৬ সালে বি. আর. আম্বেডকর নাগপুরের দীক্ষাভূমিতে সার্বজনীনভাবে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহন করেন। এই অনুষ্ঠানে বৌদ্ধধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তিজন যেমন, মেধারথি, তার প্রধান শিষ্য ভোজ দেব মুদিত এবং মহাস্তবীর বোধনন্দের শ্রীলঙ্কার উত্তরসূরি ভান্তে প্রজ্ঞানন্দ উপস্থিত ছিলেন।[৪] তার অনুপ্রেরনায় প্রায় ছয় লক্ষ মানুষ বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহন করেন।[৫]

আম্বেডকর দলিতদের জন্য ঐতিহ্যমূলক বৌদ্ধধর্ম(হীনযান, মহাযান এবং বজ্রযান) থেকে পৃথক এক নতুন ধারা অনুসরন করতে উপদেশ দেন। বৌদ্ধধর্মের তার এই নিজস্ব সংস্করণকে নবায়ন বা নিও বুদ্ধিজ্ম‌ বা নতুন বৌদ্ধধর্ম বলে অভিহিত করা হয়। বহু বৌদ্ধধর্ম অনুসরণকারীরা অম্বেদকরাইট বুদ্ধিজ্‌ম বা অম্বেদকরের বৌদ্ধধর্ম কথাটি উল্লেখ করে যা আম্বেদকরের বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের ঘটনাকে উল্লেখ করে।[৪]

জনস্ংখ্যা[সম্পাদনা]

বেশিরভাগ বৌদ্ধ মারাঠি মানুষ প্রাক্তন মহার সম্প্রদায়ের অন্তর্গত যারা ১৯৫৬ সালে আম্বেদকরের সাথে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।[৬][৭]

ভারতের ১৯৫১ সালের আদমশুমারি অনুসারে মহারাষ্ট্রে ২৪৮৭(০.০১%) জন বৌদ্ধধর্ম অনুসরনকারীর বসবাস। বি.আর. আম্বেদকর ১৯৫৬ সালে তার লক্ষাধিক অনুসারীদের সাথে নবায়ন বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের পর ১৯৬১ সালের আদমশুমারিতে মহারাষ্ট্রে বৌদ্ধধর্ম অনুসরণকারীর সংখ্যা বেড়ে দেখায় ২,৭৮৯,৫০১ (৭.০৫%) জন।[৮]

সবচেয়ে সাম্প্রতিক জনগননা অনুসারে মুম্বাইয়ের মোট জনসংখ্যার ৪.৮৫% বৌদ্ধ। রাজ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ নবায়ন বৌদ্ধ বাস করে।[৯]


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bhagwat, Ramu (১৯ ডিসেম্বর ২০০১)। "Ambedkar memorial set up at Deekshabhoomi"The Times of India। ১৬ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৩ 
  2. "Population by religion community – 2011"Census of India, 2011। The Registrar General & Census Commissioner, India। ২৫ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. Thomas Pantham; Vrajendra Raj Mehta; Vrajendra Raj Mehta (২০০৬)। Political Ideas in Modern India: thematic explorations। Sage Publications। পৃষ্ঠা 48। আইএসবিএন 0-7619-3420-0 
  4. Bellwinkel-Schempp, Maren (২০০৪)। "Roots of Ambedkar Buddhism in Kanpur" (পিডিএফ)। Jondhale, Surendra; Beltz, Johannes। Reconstructing the World: B.R. Ambedkar and Buddhism in India (পিডিএফ)। New Delhi: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 221–244। Archived from the original on ১ আগস্ট ২০১২। 
  5. Robert E. Buswell Jr.; Donald S. Lopez Jr. (২০১৩)। The Princeton Dictionary of Buddhism। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 34। আইএসবিএন 978-1-4008-4805-8 
  6. Jaffrelot, Christophe (২০০৫)। "The 'Solution' of Conversion"। Dr Ambedkar and Untouchability: Analysing and Fighting Caste। Orient Blackswan Publisher। পৃষ্ঠা 119–131। আইএসবিএন 8178241560 
  7. Zelliot, Eleanor (১৯৭৮)। "Religion and Legitimation in the Mahar Movement"। Smith, Bardwell L.। Religion and the Legitimation of Power in South Asia। Leiden: Brill। পৃষ্ঠা 88–90। আইএসবিএন 9004056742 
  8. Kantowsky, Detlef (1997). Buddhisten in Indien heute, Indica et Tibetica 30, 111
  9. "बौद्ध बढ़े, चुनावी चर्चे में चढ़े"aajtak.intoday.in (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৮