মহানামব্রত ব্রহ্মচারী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডঃ মহানামব্রত ব্রহ্মচারী
শ্রী শ্রী মহানামব্রত ব্রহ্মচারী
জন্ম২৫ ডিসেম্বর ১৯০৪
মৃত্যু১৮ অক্টোবর ১৯৯৯
পরিচিতির কারণধর্মীয় গুরু
পিতা-মাতাপিতা: কালীদাস দাসগুপ্ত
মাতা: কামিনীসুন্দরী দেবী

মহানামব্রত ব্রহ্মচারী (২৫ ডিসেম্বর ১৯০৪ - ১৮ অক্টোবর ১৯৯৯) হিন্দু ধর্মীয় মহানাম সম্প্রদায়ের একজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি বৈষ্ণব ধর্মীয় শাখার একজন ধর্মগুরু, লেখক, সংগঠক এবং দার্শনিক হিসেবে বহুল পরিচিত।

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

২৫ এ ম্বর ভৌগোলিক মানদন্ডে ছোটদিন হলেও দিনপঞ্জিতে বড়দিন হিসেবে চিহ্নিত কারণ এদিন ত্রাণকর্তা যীশু এসেছিলেন বেথেলহামের ছোট্ট গোশালে। উদ্ধার করেছিলেন পৃথিবীর বহু মানুষকে। ঐ একইদিনে অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর আর এক মহামানব এলেন বাংলাদেশের বরিশাল জেলার খলিশাকোটা গ্রামে।ত্যাগ তিতিক্ষার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত,যুগের লোক সংগ্রাহক,বিশ্ববরেণ্য দার্শনিক,বৈষ্ণব মুকুটমণি,ভাগবত গঙ্গোত্রী, পরা ও অপরা জগতের সেতু বন্ধনকারী এক বিশাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাত্র তিন বৎসর বয়সে বাড়ীর ভিতরের পুকুরে জলে ডুবে গেলে শিউলী ভাই নামে এক প্রতিবেশী।মা বলেদিলেন,শিউলি ভাই তোমাকে নবজীবন দিলেন।সেইথেকে তাঁকে তিনি পিতৃবৎ মান্য ও শ্রদ্ধা করতেন।অসাম্প্রদায়িকতার চেতনায় ঋদ্ধ হলেন ঐ শিশু অবস্থা থেকে। তাঁর ভূমিষ্ট হবার সময় মাকে আতুর ঘরে নেয়ার পথেই উন্মুক্ত আকাশের নিচে মৃত্তিকাপরি বন্ধনহীন অবস্থায় জন্ম নিলেন তিনি।গৃহের বেষ্টনী ছিলনা।তাই সারাটি জীবনই তিনি ছিলেন আকাশের মত উদার,মৃত্তিকার মত সহনশীল এক বন্ধনহীন ব্যক্তিত্ব।না ছিল হিংসা, না ছিল বিদ্বেষ, পরমতসহিষ্ণুতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনি। মা বাবা নাম রেখেছিলেন বঙ্কিম, উত্তরজীবনে বহু বঙ্কিম মত ও পথের মহামিলন দেখা যায় এই মহামানবে। অন্ধ বাবাকে গীতা, ভাগবত,রামায়ণ,মহাভারত পাঠ করে শোনাতে শোনাতে শৈশবেই ধর্ম শাস্ত্র বিষয়ক পান্ডিত্যে পারদর্শী হন।

গৃহত্যাগী জীবন[সম্পাদনা]

তৎকালীন গুরু রাজেনদার কাছ থেকে প্রভু জগদ্বন্ধু সম্পর্কে শোনার পর পাগল হয়ে যান তাঁকে দর্শনের জন্য।মাত্র ১১ বছর বয়সে শিশুরা যখন হেলা খেলায় মত্ত থাকে তখন তার মধ্যে দেখা যায় ভগবদ দর্শনের সুতীব্র লালসা।৮০ মাইল পথ পায়ে হেঁটে বরিশাল থেকে ফরিদপুর শ্রীঅঙ্গনে আসেন প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের দর্শনের জন্য,সাধু হওয়ার জন্য কিন্তু বাবা মায়ের অনুমতি না নিয়ে আসা ও এন্ট্রান্স পাশ না করে আসার জন্য এ যাত্রায় তাঁকে ফেরত যেতে হল। ব্রিটিশের স্লেভ মেকিং মেশিনারি শিক্ষাকে বয়কট করে স্বদেশ আন্দোলনে যোগ দিয়ে চড়কায় সুতোবুনে দেশজ খদ্দরের পোশাক পড়তেন।সাধু হওয়ার তাগিদে আবার পড়া শুরু করে কৃতিত্বের সাথে ১ম বিভাগে এন্টান্স পাশ করে মায়ের অনুমতি নিয়ে সাধু হতে আঙ্গিনা আসেন ও সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য মহেন্দ্রজীর কাছ থেকে দীক্ষা গ্রহণ ও প্রভুর প্রসাদী চন্দন তুলসীতে ভূষিত হন। তারপর শুরু হয় এই বিশাল মহীরুহের সুতীব্র সাধনা।

ভারত ভাগ এবং পরবর্তী কর্মকাণ্ড[সম্পাদনা]

১৯৩৩ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত ২য় বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলনে যোগদান করেন। সম্মেলনের পরে মহানামব্রত আমেরিকাতে পিএইচডি করতে শুরু করেন এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩৭ সালে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। বিভিন্ন ধর্মসভা করু ৫বছর ৮মাস পর তিনি দেশে ফিরে আসেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও প্রভুকে স্বমর্যাদায় শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গনে সমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রায় এক বছর তিনি অন্ন গ্রহণ করেন নি। দেশপ্রেম আর ভগবদ প্রেমের বিমূর্ত প্রকাশ দেখা যায় তাঁর মধ্যে। স্বাধীনতা উত্তর বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পূনর্নির্মাণে হাত দেন তিনি।সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পরাশান্তির আশ্রয়স্থল মন্দিরগুলো সংস্কার, কোথাও নতুন বিনির্মাণ করে বিপন্ন হিন্দুদের দুরবস্থা দুর করতে বহু মিটিং,বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের কাছে সাহায্য সহায়তা চাওয়া,সংবাদ সম্মেলন করা অর্থাৎ এককথায় তাদের মনোবলকে সমুন্নত করার প্রয়াস নিয়ে ছুটেছেন। তিনি বহু মঠ-মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন কিন্তু কখনোও মঠাধীন হন নি।


গ্রন্থসম্ভার[সম্পাদনা]

ড.মহানামব্রত ব্রহ্মচারী ছিলেন একাধারে ধ্যানমগ্ন দ্রষ্টা, বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্যাখ্যাতা।

তিনি রচনা করেছেন ৬৩খানা গ্রন্থ,

সম্পাদনা করেছেন ১০খানা গ্রন্থ,

তাঁর রচনা ও ভাষন সম্পর্কে রয়েছে ৪খানা গ্রন্থ,

সম্পর্কে রয়েছে ৪খানা গ্রন্থনষনষ

তার উপর লিখিত হয়েছে অগণিত গ্রন্থ।

মানবপন্থী মহানাম তিমির বিনাশী এক অমৃত সূর্যের নাম। তার রচিত বইসমূহ: ১. গীতাধ্যান

২.মানবধর্ম

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]