ব্যবহারকারী আলাপ:ZakariaChowdhury77625

পাতাটির বিষয়বস্তু অন্যান্য ভাষায় নেই।
আলোচনা যোগ করুন
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বিসিএস এর সোনার হরিণ ধরতে!


প্রতিবছরই বিসিএস’এর প্রতি শিক্ষার্থীদের আবেদন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিসিএস’এ আবেদনকারীর সংখ্যা প্রতিবছর নতুন রেকর্ড গড়ছে। ৪১তম বিসিএসে ২ হাজার ১৩৫টি পদের বিপরীতে আবেদন করেছিলেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার জন। ৪০তম বিসিএসে আবেদনকারী ছিলেন ৪ লাখ ১২ হাজার জন। এর আগে ৩৮তম বিসিএসে আবেদন করেছিলেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩২ জন, ৩৭তম বিসিএসে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭৬ জন।

বর্তমানে বিসিএস নিয়ে প্রচন্ড আগ্রহ দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না, অধিকাংশ স্নাতক লেভেলে পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষিত যুবসমাজের ‘এইম ইন লাইফ’ এর তালিকায় বিসিএস এখন সবার শীর্ষে। কে, কীভাবে পড়াশোনা করে টিকেছেন, কাকে কতটা তীব্র লড়াই করতে হয়েছে- সবই এখন নিউজ আইটেম। বিসিএস’এ আবেদনকারীর সংখ্যা প্রতিবছর নতুন রেকর্ড গড়ছে। ৪১তম বিসিএসে ২ হাজার ১৩৫টি পদের বিপরীতে আবেদন করেছিলেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার জন! ৪০তম বিসিএসে রেকর্ড আবেদনকারী ছিলেন ৪ লাখ ১২ হাজার জন। এর আগে ৩৮তম বিসিএসে আবেদন করেছিলেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩২ জন, ৩৭তম বিসিএসে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭৬ জন।

বাংলাদেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পেশা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বা বিসিএস এ বর্তমানে জেনারেল ও টেকনিক্যাল ক্যাডার মিলিয়ে মোট ২৭টি ক্যাডার আছে। জেনারেল ক্যাডারগুলোতে একাডেমিক যোগ্যতাসম্পন্ন যে কোন বিষয়ের শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারেন। তবে টেকনিক্যাল ও পেশাগত ক্যাডারের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা থাকতে হয়। প্রতিনিয়ত ক্যাডার সার্ভিসের প্রতি স্নাতক লেভেলে পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষিত যুবসমাজের চাহিদা বাড়ছে। তার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো — ১) চাকরির নিরাপত্তা আছে। ২) চাকরির সামাজিক মর্যাদা বেশি। ৩) উচ্চশিক্ষার জন্য ৫ বছরের শিক্ষা ছুটি নেওয়া যায়। ৪) প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশ সফর করার সুযোগ আছে। ৫) রাষ্ট্র পরিচালনায় সরাসরি অংশ নেওয়ার সুযোগ।

খ্যাতিমান Mentor Myron Sta. Ana উক্তি করেছেন, "A good plan is a success half-done whereas a bad plan is a possible failure in progress." অর্থাৎ একটি সুন্দর পরিকল্পনা করতে পারলে তাতে সফলতার পথে অর্ধেক এগিয়ে যাওয়া যায়, পক্ষান্তরে খারাপ পরিকল্পনা সাফল্যের পথে ব্যর্থতার কারণ হয়ে দাঁঁড়ায়।

সঠিক পন্থায় ক্যারিয়ার প্ল্যানিং করতে না পারলে ও প্ল্যান অনুযায়ী পরিশ্রম না করলে জীবনে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। যারা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে আসতে পরিকল্পনা করেছেন তাঁদের নিজেকে অনেক আগে থেকে সময়ের সাথে সাথে প্রস্তুত করা অবশ্যই করণীয় কারণ অধিকাংশের স্বপ্ন থাকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) ক্যাডার হওয়ার; ফলে বিসিএস চাকরীর পাওয়ার প্রতিযোগিতা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।

বিসিএস প্রস্তুতিতে যা করণীয় — ক) যারা অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ছে, তাদের উচিত নিজ একাডেমিক বিষয়কে অবহেলা না করে ও অপ্রয়োজনীয় কাজে সময় নষ্ট না করে প্রস্তুতি শুরু করা। তবে যারা অন্যান্ন বর্ষে পড়ছে, তাদের অবশ্যই অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হবে। প্রবাদ আছে, ‘সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়”। প্রথমেই বিসিএসের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসটা খুব ভালো করে পড়ে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। খ) গাইডকে কম গুরুত্ব দিয়ে বিসিএস সিলেবাস সংশ্লিস্ট বেসিক বইগুলো বিভাগের একাডেমিক পড়ার পাশাপাশি পড়াটা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন নির্বাচন করে ক্লাস সিক্স টু ক্লাস টেন এর বোর্ডের বই সহ এইচএসসি এর পৌরনীতি ও কম্পিউটার বই মনোযোগ সহকারে পড়াটা আবশ্যক। গ) কোচিং সেন্টারে বা টিউশনে ইংরেজি, গণিত বা বিজ্ঞান পড়ালে তা বিসিএস প্রস্তুতিতে নিজেরও কাজে লাগবে এবং একই সাথে বিসিএস ভাইভায় কথা বলার আড়ষ্টতা কাটবে। ঘ) স্নাতক অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তির শুরু থেকে বা স্নাতক অনার্স ভর্তির যত শীঘ্র সম্ভব ভালো মানের বাংলা ও ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা নিয়মিত মনোযোগ সহকারে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খাতায় নোট রাখলে বাংলাদেশ বিষয়াবলী ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী প্রস্তুতিতে ভিত (Base) তৈরি করতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি বিবিসি বাংলা খবর ও বিবিসির বিশ্লেষণধর্মী আন্তর্জাতিক নিউজ এই প্রস্তুতিতে কাজে লাগবে। ঙ) বিসিএস সিলেবাস অনুযায়ী ইংরেজি গ্রামার ও লিটারেচার প্র্যাকটিসের পাশাপাশি ইংরেজি vocabulary (শব্দভাণ্ডার) নিয়মিত বৃদ্ধি করাটা জরুরী। ইংরেজি পত্রিকা থেকে প্রতিদিন অন্তত ৫টি Words (প্রত্যেকটির Synonyms and Antonyms সহ) মেমোরাইজ করে নোট খাতায় লিখে রাখতে হবে এবং শেখা Words পরে পুনরায় প্র্যাকটিস করতে হবে। চ ) বাংলা সাহিত্য ও ইংরেজি লিটারেচারের কবি ও সাহিত্যিকদের পরিচিতি ও বইগুলোর নাম ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংগ্রহ করে নোট খাতায় লিখে বারবার চর্চা করতে হবে।

বিসিএস প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো — বিসিএস প্রস্তুতিতে কিছু মৌলিক বই আছে। যেমন- ১) অসমাপ্ত আত্মজীবনী (শেখ মুজিবুর রহমান) ২) লাল নীল দীপাবলি (ড. হুমায়ুন আজাদ) ৩) বিদ্যাকোষ; বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি (ড আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ) ৪) Applied English Grammar and Composition (P. C. Das; ভুল এড়ানোর জন্য ভারতের অরিজিন্যাল বইটি বেশী উপকারী) ৫) A Passage to the English Language (S. M. Zakir Hussain) ৬) বিশ্বরাজনীতির ১০০ বছর (ড. তারেক শামসুর রেহমান) ৭) বাংলাদেশের ইতিহাস (১৯০৫-১৯৭১) লেখক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন ৮) নয়া বিশ্বব্যবস্থা ও সমকালীন আন্তর্জাতিক রাজনীতি (ড. তারেক শামসুর রেহমান)।

বিসিএস সাফল্যের মূল বিষয় হলো — স্নাতক লেভেলে ভর্তির পর যথাশীঘ্র সম্ভব প্রস্তুতি আরম্ভ করে অপ্রয়োজনীয় কাজে সময় নষ্ট না করে সঠিকভাবে নিয়মিত কঠোর পরিশ্রম করা। যারা এই কষ্টসাধ্য কাজটি পারবে না, তাদের উচিৎ সময় নষ্ট না করে ক্যারিয়ারের অন্য অপশনে চেষ্টা করা। কারণ কোন কঠিন কাজে সফল হতে হলে, নিজের সর্বোচ্চ দিয়েই তা অর্জন করতে হয়। বিসিএস সাফল্যে মেধার ভূমিকা ১% ও নিয়মিত যথাযথভাবে কঠোর পরিশ্রমের ভূমিকা ৯৯%। পরিশ্রমীদের জন্য শুভকামনা।

—Zakaria Chowdhury

বাংলা উইকিপিডিয়ায় আপনাকে স্বাগতম[সম্পাদনা]