বিষয়বস্তুতে চলুন

ব্যবহারকারী:KEmel49/খেলাঘর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে


পাতি কালিদামা তার বাসায় ডিমে তা দিচ্ছে।

পাখির বাসা বা পাখির নীড় হচ্ছে পাখিদের থাকার জায়গা যেখানে তারা বসবাস করে, ডিম দিয়ে তা দেয় এবং এখানেই ছোটো ছোটো বাচ্চা পাখিদের বড়ো করে তোলা হয়। মোটকথা পাখির বাসার দ্বারা এমন গঠনশৈলীকে বোঝায় যা পাখিদের দ্বারাই তৈরী হয়।যেমন— ঘাসের ছোলা দ্বারা কাপ আকারে তৈরী আমেরিকান রবিনের বা ইউরাশিয়ান কালোপাখির বাসা অথবা গাছের মধ্যে ঝুলন্তভাবে তৈরী মন্টেজুমা অরোপেন্ডোলা অথবা বাবুই পাখিদের বাসা,—যদিও এই সংজ্ঞাটি খুবই সীমাবদ্ধ। কিছু কিছু পাখিদের ক্ষেত্রে, তাদের বাসা বালির মধ্যে গভীর গর্তের মধ্যে থাকে; আবার কিছু কিছু পাখির ক্ষেত্রে, তাদের বাসা হচ্ছে গাছের ডালের মধ্যে গর্ত করা, মাটির মধ্যে গর্ত করা, মাটির পচনশীল স্তূপ অথবা শুকনো লালা দিয়ে তৈরি একটি প্রবেশদ্বার সুড়ঙ্গ সহ মাটির গম্বুজ।কিছু কিছু পাখিদের একদম ছোটো বাসা হয়ে, সেক্ষেত্রে হামিংবার্ডের বাসা উল্লেখযোগ্য। এধরনের বাসা ছোটো কাপের মতো হয়ে যা প্রস্তে ২ সেমি (০.৮ ইঞ্চি) এবং উচ্চতায় ২–৩ সেমি (০.৮–১.২ ইঞ্চি) হয়ে থাকে।[১] অন্যদিকে ডাস্কি স্ক্রাবফৌলের বাসা অত্যন্ত বড়ো থাকে যা মাপে ১১ মি (৩৬ ফু) ব্যাস ও ৫ মি (১৬ ফু) উচু হয়।[২] পাখির বাসাকে নিয়ে পড়াশোনা করাকে ক্যালিওলজি বলা হয়।
সকল পাখিরাই বাসা বুনে না, কিছু কিছু পাখি সরাসরি মাটিতে অথবা পাথুরে স্তবকের উপর ডিম দিয়ে দেয়। যদিও পরজীবী পাখিরা অন্য পাখির বাসায় ডিম পাড়ে এবং তাদের বাচ্চারা অন্যান্য পাখিদের দ্বারাই প্রতিপালিত হয়ে বড়ো হয়ে উঠে। কোকিল পাখি ঠিক এইভাবেই কাকের বাসায় ডিম পেড়ে চলে যায়, পরে বাচ্চারা বড়ো হয়ে নিজের থেকে চলে যায়।যদিও বাসাকে প্রধানত প্রজননের কাজে ব্যবহার করা হয় তবুও অ-প্রজননের ঋতুতে পাখিরা বাসাকে তাদের বিশ্রামের জায়গা হিসেবে বেছে নেয়। আবার কিছু কিছু পাখিরা বিশেষ ভাবে শয়নালয় অথবা শীতকালীন বাসা তৈরী করে যা বিশ্রামের কাজে বিশেষ ভাবে ব্যবহৃত হয়।[৩]বেশিরভাগ পাখিই প্রতি বছরে নতুনকরে বাসা তৈরী করে অথবা পুরোনো বাসা সংস্কার করে।[৪]ঈগল পাখিরা তাদের বাসাকে অনেক বছর পর্যন্ত ব্যবহার করে ।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারী-পাখিরাই বাসা বুনার কাজ করে আর কিছু ক্ষেত্রে পুরুষ-পাখিরাও সহযোগিতা করে।কোনো কোনো সময়ে পুরুষ বাসা তৈরীর কাজ করে আর মহিলারা বাসাকে সজ্জিত করে তুলে।[৫][৬]কিছু বহুকামী পাখিদের ক্ষেত্রে, যদিও পুরুষ-পাখিরা বাসা তৈরীতে সবচেয়ে বেশী সহযোগিতা করে,তারা প্রীতি প্রদর্শনেও সক্রিয়তা দেখায়,যেমন বাবুই। উচ্চ-গুণসম্পন্ন ও মানসম্পন্ন বাসা পছন্দ করার ক্ষমতা এই গোত্রের মহিলাদের মধ্যে প্রবল।কিছু কিছু গোত্রের মধ্যে আগের বাচ্চারা ও ছোটোরা তাদের পিতা-মাতাদের বাসা তৈরীতে সহযোগিতা করে।

ধরন[সম্পাদনা]

সকল পাখিরাই বাসা তৈরী বা ব্যবহার করে না। দৃষ্টান্তস্বরূপ—কিছু পাখি,যাদের মধ্যে auk, common murre, thick-billed murre এবং razorbill—ছোটো পাথুরে স্তরে বা স্তবকে ডিম দেয়, তারা সেখানেই প্রজনন কার্য সম্পাদনা করে।[৭]এই পাখিদের ডিমের এক কোনা বেড়ে থাকে,তাই ডিমগুলো নাড়ালে চক্রাকারে ঘুরতে থাকে।এই ডিমগুলোর বাঁচার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়,কারণ এদের কোনো বাসা নেই যা এই ডিমগুলোকে পাথুরে স্তবক থেকে পড়ে যেতে রক্ষা করবে। সম্ভবত এই ধরনের দুর্বলতার জন্য এই গোত্রের মাতা-পিতারা খুবই কম সময়ে বাসা থেকে বের হয়।[৮]বাসার স্থান এবং গঠনশৈলীতে স্থানীয় ভূ-সংস্থানের দৃঢ় প্রভাব দেখা যায়।[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Campbell ও Lack 1985, পৃ. 386
  2. Campbell ও Lack 1985, পৃ. 345
  3. Skutch, Alexander F (১৯৬০), "The nest as a dormitory", Ibis, 103 (1): 50–70, ডিওআই:10.1111/j.1474-919X.1961.tb02420.x. 
  4. smithsonianscience.org 2015-04-20 Bird nests: Variety is Key for the world's avian Architects ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে
  5. Campbell ও Lack 1985, পৃ. 387
  6. Felix, Jiri (১৯৭৩)। Garden and Field Birds। Octopus books। পৃষ্ঠা 17। আইএসবিএন 0-7064-0236-7 
  7. Ehrlich এবং অন্যান্য 1994, পৃ. 228–232
  8. del Hoyo 1992, পৃ. 692
  9. Hogan 2010