ব্যবহারকারী:Akhasan-2001/খেলাঘর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভাঙো দুর্দশার চক্র (আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ ) : বই পর্যালোচনা :

বইটি মূলত কোয়ান্টাম মেথড এ দেয়া আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের  বক্তব্যসমূহের একটি লিখিত সংকলন । বইটিতে স্যার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বিভিন্ন দিক ও উপকারিতা তোলে ধরেছেন । তাছাড়া এটিতে সেলফ ডেবেলোপমেণ্ট  সংক্রান্ত আলোচনাও করা হয়েছে। বইটির কিছু চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরার ছোট্ট প্রয়াস ।

শুরুতে স্যার রক্তদান কর্মসূচি ও  রক্ত দাতাদের উৎসাহ দিতে গিয়ে মার্কিন কবি জেমস রাসেল লয়েল এর একটি কবিতার লাইন উদ্ধৃতি করেছেন

                                         "  As one lamp lights another ,nor grows less

                                           so nobleness enkindleth nobleness "

"অর্থাৎ একটা প্রদীপ যেমন হাজার প্রদীপকে প্রজ্বলিত করে কিন্ত নিজে কমে না ,তেমনি মানুষের মহত্ত্বও অন্যকে মহৎ করে তোলে নিজে এতটুকু না কমে । রক্ত না দিলে এটি নিজের শরীরের ভিতরে মরে যাবে কিন্ত দিলে অন্যের শরীরে গিয়ে নতুন জীবন জাগিয়ে তুলবে। তখন আপনার তুচ্ছ রক্ত অন্যের জীবন হয়ে এই পৃথিবীতে কথা বলবে, গান গাইবে  হয়ত মানুষকে নতুন আশ্বাসে উজ্জীবিত করবে । তাদের মাধ্যমে আপনার রক্ত দীর্ঘকাল ধরে পৃথিবীতে টিকে থাকবে , পাতা মেলে ফুল ফুটিয়ে যাবে"।

ভালো কাজ কিভাবে শুরু করবে এই বিষয়য়ে বলেন,  "ভালো কিছু করতে চাইলে প্রথমত আমাদের হৃদয়ের সততা দিয়ে ওই ভালোতে বিশ্বাস করতে হবে । এরপরে দিতে হবে অনেক কিছু । আমাদের যা আছে সবই " ।

মেডিটেশন সম্পর্কে  স্যার বলেছেন,  "মেডিটেশন করলে বুঝা যায় মনের এই শান্ত ও শিথিল অবস্তাতে মন হয়ে উঠে সবচেয়ে শক্তিশালী । রবীন্দ্রনাথ বলেছেন উত্তেজনা এবং শক্তি এক নহে । ইহারা পরস্পর বিরোধী । অর্থাৎ উত্তেজিত মুহূর্তে আমরা সবচেয়ে শক্তিহীন । এখানেও রেগে গেলেন তো  হেরে গেলেন । কেন হারব ?কারণ সেই মুহূর্তে আমরা উত্তেজিত । তাই আমাদের যুক্তি কাজ করছেনা। অথচ এর বিপরীতে আমরা যদি মনকে শান্ত ও যুক্তিপূর্ণ করে তুলতে পারি তখন মনের ক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায় " ।

নেতিবাচক চিন্তা দূর করার ব্যাপারে স্যার বলেন " আমাদেরকে সাহসী হতে হবে। যা করতে যাব তার উপর সাহসী হয়ে আমাদের  অন্ধের মত ঝাঁপিয়ে পড়তে  হবে । জীবনে যা  হবার তা যখন হবেই তখন ইতিবাচক হয়েই তার মোকাবেলা করা উচিত । নেতিবাচক মনের মধ্যে কথা বলতে চাইলে ঝট করে ইতিবাচকতার দিকে সরে যেতে হবে । নেতিবাচকতার  উৎস হল ভয় । ভয়কে বাড়তে দিলে তা আমাদের মন ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে । আমাদের মধ্যে হীনমন্যতা দেখা দিবে । আমরা নেতিবাচক হয়ে উঠি ভয় আর আত্মবিশ্বাস এর অভাবে । এই ভয় থেকে বের হবার প্রধান উপায় হল কাজের জগতে ক্ষান্তিহীন ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়া । জীবনকে আক্রমণ করে তা থেকে সফলতা ছিনিয়ে আনা। ভয়ের এই অশুভ প্রেতটাকে আমরা ঝেটিয়ে ফেলতে পারলে আমরা হব জয়ী ,সফল ,দুর্নিবার । ভয়ের কথা বেশি ভাবার ফলে আমরা কাজের জায়গায় ভুল করি"।

তিনি জীবনে কাজের উপকারিতা বর্ণনা করেছেন অসাধারনভাবে । তিনি বলেন " কাজ হল গঙ্ঘাজল । কাজের মধ্যে বেঁচে থাকে মানে জীবন উল্লাস এর মধ্যে বেঁচে থাকা"  । স্যার  একপর্যায়ে স্বপ্নের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন " স্বপ্নের জন্য আমরা যতটুকু কাজ করি তাই আমাদের স্বপ্ন " ।

স্যারের  বইটা পড়ে নিজেকে অন্যভাবে আবিষ্কার করা যায় । বইটি সত্যি অসাধারণ লেগেছে আমার । তিনি দুর্দশা দূর করার উপায় বাতলে দিয়েছ[১]

  1. "ভাঙো দুর্দশার চক্র - আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ"www.rokomari.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-২৪