বিশ্বনবী
লেখক | গোলাম মোস্তফা |
---|---|
দেশ | ব্রিটিশ ভারত, বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
বিষয় | মুহাম্মাদের জীবনচরিত |
ধরন | সীরাতগ্রন্থ |
প্রকাশিত |
|
প্রকাশক | মাতৃভূমি প্রকাশনী, আহমদ পাবলিশিং হাউজ |
বিশ্বনবী কবি গোলাম মোস্তফা একটি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। গ্রন্থ সমালোচকদের মতে, এটি গোলাম মোস্তফার শ্রেষ্ঠ কীর্তি।[১][২] বইটি ১৯৪২ সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত হয়। বইটি সেই সময় এতোটাই জনপ্রিয় ছিলো যে, ২০ বছরের মধ্যেই বইয়ের ৮ম সংস্করণ বের হয়। কাব্যটিতে লেখকের গভীর নবীপ্রেম, ভাব ও ভাষার প্রাঞ্জলতা, পাণ্ডিত্য ও মুসলিম ইতিহাস-চেতনা প্রভৃতি প্রকাশ পেয়েছে। বইটি আজ অবধি বাংলা ভাষার সীরাত বইগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে।[৩] বইটি ২০১৮ সালে মাতৃভূমি প্রকাশনী থেকে পুনরায় প্রকাশিত হয়।[৪]
বিষয়বস্তু
[সম্পাদনা]লেখক বইটি লেখার সময় যুক্তি-তর্ক ও যেকোনো ঘটনার সত্যতার দিকে লক্ষ্য রেখেছেন। যে বিষয়গুলোর প্রামাণ্য সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ রয়েছে, সেগুলো বাদ রেখেছেন। তিনি বইটি রাসুল প্রেমে মগ্ন হয়ে লিখেছেন ঠিকই তবে তিনি আবেগের বশে কিছু লিখেননি। তিনি বিজ্ঞানের যুক্তি ও ইতিহাসের সত্যতার সাহায্যে একজন মহাপুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন।[৫] বইটি লিখতে প্রায় ৫০টির বেশি বইয়ের সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে।
১৯৪২ সালে বইটির প্রথম সংস্করণের ভূমিকায় কবি গোলাম মোস্তফা বলেন,
“ | মহাপুরুষের জীবন শুধু ঘটনার ফিরিস্তি নহে; শুধু যুক্তি-তর্কের শয্যাও নহে। সে একটা ভক্তি, শ্রদ্ধা, বিস্ময় ও অনুভবের বস্তু; তাহাকে বুঝিতে হইলে একদিকে যেমন চাই সত্যের আলোক ও বিজ্ঞানের বিচারবুদ্ধি, অপরদিকে ঠিক তেমনি চাই ভক্তের দরদ, কবির সৌন্দর্যানুভূতি, দার্শনিকের অন্তর্দৃষ্টি, আর চাই প্রেমিকের প্রেম। আর আশেকে রাসুল না হইলে সত্যিকার রাসুলকে দেখা যায় না। | ” |
— গোলাম মোস্তফা, বইয়ের প্রথম সংস্করণের ভূমিকায় |
মূল্যায়ন
[সম্পাদনা]অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি বই সম্পর্কে ভালো মন্তব্য করেছেন। এমনকি অমুসলিম লেখকরাও বইটির প্রশংসা করেছেন। সেসবের মধ্যে কিছু হলো:
- শিক্ষাবিদ সাহিত্যিক সৈয়দ আলী আহসান বলেছেন,
“ | কবি গোলাম মোস্তফার ‘বিশ্বনবী’ একটি আশ্চর্যরূপ সফল গ্রন্থ। হৃদয়ের আবেগ ও বিশ্বাস শব্দে যেভাবে সমর্পিত হয়েছে, অন্তরিক অনুভূতি বর্ণনায় যেভাবে উচ্চকিত হয়েছে এবং চিত্তের উপলব্ধি জনিত আনন্দ ভাষার আবহে যেভাবে জাগ্রত হয়েছে তার তুলনা আমাদের গদ্য সাহিত্যে সত্যিই বিরল। যদিও কখনো কখনো কবি ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতিষ্ঠায় যুক্তি সমর্থন খুঁজেছেন কিন্তু সে সমস্ত যুক্তি উচ্ছ্বাসে সচকিত এবং বিশ্বাসের অবিচল নিষ্ঠায় প্রবহমান। | ” |
— সৈয়দ আলী আহসান, বইটির ১০ম সংস্করণে ভুমিকাংশে |
- সাহিত্যিক মনোজ বসু বলছেন,
“ | আপনার ‘বিশ্বনবী’ পড়লাম, অপূর্ব! জাতির একটা বড় কাজ করলেন আপনি। আমি ও আমার মতো আরো অনেকে ধর্মে মুসলমান না হয়েও হজরতকে একান্ত আপনার বলে অনুভব করতে পারলাম। মহানবীর কাছে পৌঁছবার আপনার এ সেতু-রচনা আপনার তুলনীয় সাহিত্যরীতি। ভাষা, কবিত্ব-ঝংকার ও ভাব-লালিত্যে অপরূপ মহিমা লাভ করেছে। | ” |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ মতিউর রহমান, মুহম্মদ। "কবি গোলাম মোস্তফার অনবদ্য সৃষ্টি 'বিশ্বনবী'"। The Daily Sangram। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৬।
- ↑ আবদুল্লাহ, আবরার। "কবি গোলাম মোস্তফার শ্রেষ্ঠ কীর্তি 'বিশ্বনবী"। www.kalerkantho.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৬।
- ↑ "কবি গোলাম মোস্তফা"। Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৬।
- ↑ "বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) - গোলাম মোস্তফা-"। www.rokomari.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৬।
- ↑ "মহানবী (সা.)-এর জীবনীমূলক কোন গ্রন্থ পড়ব"। www.kalerkantho.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-০৭।