বিউটিন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বিউটিন একটি এলিফ্যাটিক হাইড্রোকার্বন, এর সমগোত্রীয় শ্রেণীর অণুতে কার্বন=কার্বন দ্বিবন্ধন (C=C) বিদ্যমান। কার্বন কার্বন দ্বিবন্ধন অর্থাৎ π(পাই) বন্ধন থাকার কারণে বিউটিন কে অসম্পৃক্ত জৈব যৌগ বলে। বিউটিন সাধারণভাবে অ্যালকিন বা অলেফিনস নামে পরিচিত। লাতিন অলেফিনস মানে তৈল উৎপাদনকারী। এই যৌগগুলো ক্লোরিনের সাথে বিক্রিয়া করে ডাইক্লোরাইড গঠন করে যা তৈলজাতীয় যৌগ।

CH3-CH2-CH= CH2 + Cl2 = CH2Cl-CH2Cl

এটি একটি মুক্ত শিকল অ্যালকিন।

সংকেত[সম্পাদনা]

  • বিউটিনের রাসায়নিক সংকেতঃ C4H8
  • বিউটিনের রাসায়নিক সংকেতঃ CH3-CH2-CH=CH2

সমাণু[সম্পাদনা]

বিউটিনের কয়েকটি সমাণু রয়েছে।

IUPAC নাম
সাধারণ নাম
গঠন
skeletal formula
ত্রিমাত্রিক কাঠামো
১-বিউটিন
α-বিউটাইলিন
(Z)-২-বিউটিন
cis-β-বিউটাইলিন
২-বিউটিন
trans-β-বিউটাইলিন
২-মিথাইল প্রোপেন
আইসোবিউটাইলিন

উৎস[সম্পাদনা]

প্রকৃতিতে প্রাপ্ত[সম্পাদনা]

বিউটিন দুই পদ্ধতিতে উৎপাদন করা যায়। ভাঙন বা ক্রাকিং পদ্ধতিতে পেট্রোলিয়াম থেকে প্রাপ্ত হাইড্রোকার্বন থেকে এটি আহরণ করা হয়। আমেরিকায় প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ইউরোপে অপরিশোধিত তেলের ন্যাপথা অংশ থেকে বিউটিন পাওয়া যায়।[১] উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপে বিউটেনকে ভাঙলে বিউটিন পাওয়া যায়। সেই সাথে কিছু অ্যালকেনও উৎপন্ন হয়।

বিউটেন---> বিউটিন + অ্যালকেন

পরীক্ষাগারে প্রস্তুতি[সম্পাদনা]

পরীক্ষাগারে অধিক পরিমাণ গাঢ় সালফিউরিক এসিডের সাথে বিউটানলকে উত্তপ্ত করলে বিউটিন উৎপন্ন হয়। CH3-CH2-CH-OH + H2SO4 = CH3-CH2-CH=CH2 + (H2O + H2SO4)

শিল্পোৎপাদন পদ্ধতি[সম্পাদনা]

শিল্প কারখানায় বিউটিন উৎপাদনে বেশ কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

অ্যালকোহল থেকে[সম্পাদনা]

বিউটানলকে উচ্চ তাপমাত্রায় এলুমিনিয়াম অক্সাইডের উপর দিয়ে প্রবাহিত করলে প্রচুর পরিমাণে বিউটিন উৎপন্ন হয়। এক্ষেত্রে এলুমিনা (AL2O3) নিরুদক হিসেবে কাজ করে।

বিউটাইন থেকে[সম্পাদনা]

লেড এবং বেরিয়াম সালফেট এর উপস্থিতিতে বিউটাইনের সাথে হাইড্রোজেন যুক্ত হয়ে বিউটিন উৎপন্ন করে।

ইথাইল ক্লোরাইড থেকে[সম্পাদনা]

ইথাইল ক্লোরাইড এর সাথে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর জলীয় দ্রবণকে উত্তপ্ত করলে ইথিন (অ্যালকিন), সোডিয়াম ক্লোরাইড (লবণ) এবং পানি (সমযোজী যৌগ) উৎপন্ন হয়।

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

স্বাভাবিক তাপমাত্রায় গ্যাসীয়। বিউটিন বিউটেনের ন্যায় অপোলার জৈব দ্রাবকে দ্রবণীয় কিন্তু পোলার দ্রাবক যেমন পানিতে অদ্রবণীয়। বিউটিনের সাথে নিকেল প্রভাবকের উপস্থিতিতে হাইড্রোজেন অণু যুক্ত হয়ে বিউটেন তৈরি।

বিউটাইন থেকে[সম্পাদনা]

লেড এবং বেরিয়াম সালফেট এর উপস্থিতিতে বিউটাইনের সাথে হাইড্রোজেন যুক্ত হয়ে বিউটিন উৎপন্ন করে।

ইথাইল ক্লোরাইড থেকে[সম্পাদনা]

ইথাইল ক্লোরাইড এর সাথে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর জলীয় দ্রবণকে উত্তপ্ত করলে ইথিন (অ্যালকিন), সোডিয়াম ক্লোরাইড (লবণ) এবং পানি (সমযোজী যৌগ) উৎপন্ন হয়।[২]

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]

ব্যবহার[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন, দ্বিতীয় পত্র, হাজারী এবং নাগ।
  2. উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন, দ্বিতীয় পত্র, ড. মোঃ রবিউল ইসলাম, ড. গাজী মোঃ আহসানুল কবীর, ড. মোঃ মনিমুল হক।