বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী
বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী | |
---|---|
সভাপতি | অতুলন দাস আলো |
সাধারণ সম্পাদক | অদিতি আদৃতা সৃষ্টি |
প্রতিষ্ঠাতা | ফজলে হোসেন বাদশা |
প্রতিষ্ঠা | ৬ ডিসেম্বর ১৯৮০ |
সদর দপ্তর | ২১/১ তোপখানা রোড, বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ (নিচতলা), ঢাকা-১০০০ |
সংবাদপত্র | ছাত্রমৈত্রী |
সাংস্কৃতিক শাখা | গণ সংস্কৃতিক মৈত্রী |
ভাবাদর্শ | সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ |
স্লোগান | মেহনতী জনতার সাথে একাত্ম হও |
দলীয় পতাকা | |
ওয়েবসাইট | |
studentsunitybd |
বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী বাংলাদেশের একটি সাম্রাজ্যবাদ-সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদ বিরোধী প্রগতিশীল ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠন। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন হতে নানা বিভক্তি ও একীকরণের মাধ্যমে এই দলটির উদ্ভব ঘটেছে।[১][২][৩]
বর্তমান কমিটি
[সম্পাদনা]অতুলন দাস আলোকে সভাপতি ও অদিতি আদৃতা সৃষ্টিকে সাধারণ সম্পাদক করে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) শেষ হওয়া দুই দিনব্যাপী ছাত্র মৈত্রীর ২১তম জাতীয় সম্মেলনে মোট ৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচন করা হয়। [৪]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে সে বছরের ২৬ এপ্রিল জন্মলাভ করা পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের উত্তরসূরি বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী। ষাটের দশকের আন্তর্জাতিক মহাবিতর্কে বিশ্বব্যাপী কমিউনিস্ট আন্দোলনের ভাঙ্গনের মুখে পড়ে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নেও। সুবিধাবাদ, পশ্চাৎপদ ভ্রান্ত ধারণা, কূপমুন্ডকতা ও লেজুরবৃত্তিক মনোভাব সচেতনভাবে এড়িয়ে ১৯৬৫ সালে যাত্রা শুরু করে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন গ্রুপ)। পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালে সংগঠনের নামকরণ হয় পূর্ব বাংলা বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন (উল্লেখ্য, পাকিস্তানি শাসন ও পাকিস্তান রাষ্ট্রচেতনাকে সর্বপ্রথম অস্বীকার করে এই সংগঠনই ‘পূর্ব পাকিস্তান’ বাদ দিয়ে ‘পূর্ব বাংলা’ শব্দযুগল সংগঠনের নামে যুক্ত করে)।
স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে, সত্তরের দশকের মধ্যভাগে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র আন্দলনের যাত্রা শুরু হয় বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে। এরই পথ ধরে ১৯৮০ সালের ৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় ঐক্য সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় ছাত্রদলের দুইটি অংশ এবং বাংলা ছাত্র ইউনিয়ন মিলিত যাত্রা শুরু করে।[৫] তখন জাতীয় ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ছিলেন ফজলে হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আজিজুর রহমান খান আসাদ। ঐক্যবদ্ধ সংগঠনের নামকরন করা হয় “বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী“। ঐক্যবদ্ধ সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন ফজলে হোসেন বাদশা (তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এবং রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য)।
পরবর্তীতে এই ঐক্যের ধারাবহিকতায় ১৯৮১ সনে জাতীয় ছাত্র ইউনিয়নের সাথে ঐক্য হয় এবং সংগঠনের নাম “বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী“ অপরিবর্তিত থাকে। ১৯৮৪ সনে ২২ সেপ্টেম্বর বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশের সাথে ঐক্য হলে সংগঠনের নাম পরিবর্তন হয়ে “বাংলাদেশ বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী” নামটি ধারণ করে। ১৯৮৮ সনে ৭ এপ্রিল বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের আরেকটি অংশের সঙ্গে ঐক্যের মধ্যদিয়ে “বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী” নাম ধারণ করে সংগঠনটি। এরপর আরো দুই দফায়; ১৯৮৮ সনে ২১ নভেম্বর জাতীয় ছাত্র সংসদের সঙ্গে এবং ১৯৯২ সনে ২৩-২৪ অক্টোবর গণতান্ত্রিক ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে ঐক্য হয় বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর।
৮০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (রাকসু) ছাত্রলীগ ও জাসদের বিরুদ্ধে প্যানেল ঘোষণা করে সংগঠনটি। নির্বাচনে ছাত্রমৈত্রীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা ভিপি পদে বিপুল ভোটে জয়ী হন। এই পর্যন্ত ছাত্রমৈত্রীর ১৯টি কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ফারুক আহমেদ রুবেল সভাপতি এবং কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।[৬] সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি ৬৫ সদস্যবিশিষ্ট এবং ৩১ সদস্যবিশিষ্ট সাংগঠনিক জেলা কাঠামোর সংখ্যা ৫৪।
সংগঠনের শহীদগণ
[সম্পাদনা]প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী শিক্ষা-কাজের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এবং সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা-সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়ােই-সংগ্রামের কারণে স্বভাবতই শোষক-শাসকগোষ্ঠী এবং একাত্তরের পরাজিত সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী-জঙ্গিবাদী অপশক্তি জামায়াতে ইসলাম ও তোর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের রোষানলে পতিত হয়। শুধু তাই নয়, সুদীর্ঘ আন্দোলন দীপ্ত পথচলায় ছাত্র মৈত্রীর নেতাকর্মীদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংগঠনের সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হতে হয়েছে। তাদের মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার তৎকালীন সভাপতি ডাঃ জামিল আকতার রতন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবায়ের চৌধুরী রিমু, দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য রূপম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারুকুজ্জামান ফারুক, রাজবাড়ীর জেলার নেতা বনি আমিন পান্না, ঢাকা মহানগর নেতার আশরাফুল ইসলাম নাসিম, আসলাম, আতিকুল বারী, রাজু আহম্মেদ বাবলু, যশোরের আইয়ুব হোসেন, মোহাম্মদ সেলিম, শামীম আহমেদ, রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী সানিসহ অসংখ্য নেতাকর্মী এবং শারীরিকভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করে অসংখ্য নেতাকর্মী।
বিভিন্ন সময়ের নেতৃত্ব ও মেয়াদকাল
[সম্পাদনা]প্রতিষ্ঠাকালঃ ৬ ডিসেম্বর, ১৯৮০ স্থানঃ অপরাচেয় বাংলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সম্মেলনের ক্রমিক | সভাপতি | সাধারণ সম্পাদক | মেয়াদকাল |
---|---|---|---|
প্রথম | ফজলে হোসেন বাদশা | আতাউর রহমান ঢালী | ১৯৮০ - ১৯৮৪ |
দ্বিতীয় | ফজলে হোসেন বাদশা | জহির উদ্দিন স্বপন | ১৯৮৪ - ১৯৮৬ |
তৃতীয় | জহির উদ্দিন স্বপন | জাহাঙ্গীর আলম রুবেল | ১৯৮৬ - ১৯৮৮ |
চতুর্থ | জহির উদ্দিন স্বপন | নুর আহমদ বকুল | ১৯৮৮ - ১৯৯১ |
পঞ্চম | নুর আহমদ বকুল | রাগীব আহসান মুন্না | ১৯৯১ - ১৯৯৩ |
ষষ্ট | রাগীব আহসান মুন্না | মাহমুদ হাসান বুলু | ১৯৯৩ - ১৯৯৪ |
সপ্তম | আতাউর রহমান আতা | জিয়াউল হক জিয়া | ১৯৯৫ - ১৯৯৬ |
অষ্টম | মিজানুর রহমান চন্দন | জিয়াউল হক জিয়া | ১৯৯৫ - ১৯৯৬ |
নবম | জিয়াউল হক জিয়া | দীপঙ্কর সাহা দীপু | ১৯৯৬ - ১৯৯৭ |
দশম | জিয়াউল হক জিয়া | দীপঙ্কর সাহা দীপু | ১৯৯৭ - ১৯৯৯ |
একাদশতম | দীপঙ্কর সাহা দীপু | সাব্বাহ আলী খান কলিন্স | ১৯৯৯ - ২০০২ |
দ্বাদশতম | সাব্বাহ আলী খান কলিন্স | আব্দূল আহাদ মিনার | ২০০২ - ২০০৪ |
ত্রয়োদশতম | রফিকুল ইসলাম সুজন | মামুনুর রশীদ | ২০০৪ - ২০০৫ |
চর্তুদশতম | রফিকুল ইসলাম সুজন | মুক্তার হোসেন নাহিদ | ২০০৫ - ২০০৮ |
পঞ্চদশতম | রফিকুল ইসলাম সুজন | বিপ্লব রায় | ২০০৮ - ২০১০ |
ষোড়শতম | বাপ্পাদিত্য বসু | তানভীর রুসমত | ২০১০ - ২০১২ |
সপ্তদশতম | বাপ্পাদিত্য বসু | তানভীর রুসমত | ২০১২ - ২০১৫ |
অষ্টদশতম | আবুল কালাম আজাদ | অর্ণব দেবনাথ | ২০১৫ - ২০১৬ |
ঊনবিংশতম | ফারুক আহমেদ রুবেল | কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল | ১৯ মে, ২০১৭ - ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০ |
বিশতম | কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল | অতুলন দাস আলো | ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০ - ২০২২ |
একুশতম | অতুলন দাস | অদিতি আদৃতা সৃষ্টি | ৩১ অক্টোবর, ২০২২ - চলমান
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
|