বরদৈচিলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এই ছবিটার মাধ্যমে বরদৈচিলার রাগের কারণে সৃষ্টি হওয়া ঝড়কে ইঙ্গিত করেছে।

বরদৈচিলা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হওয়া একটি মৌসুমী ঘূর্ণিঝড়ের নাম। প্রতিবছর বরদৈচিলার প্রকোপে ঘড়-বাড়ি ও ফসলের ক্ষতি হয়। এই ঝড়ের প্রকোপ অসমে বেশি দেখা যায়। বৎসরের চৈত্র মাস থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড় বেশি ঘটে।

নামকরণ[সম্পাদনা]

লোকবিশ্বাস মতে, রাক্ষসকন্যা "বরদৈচিলা" এই ঝড়ের সৃষ্টিকর্তা। রাক্ষসকন্যার নামানুসারে এই ঘূর্ণিঝড়কে বরদৈচিলা বলা হয়।

রাক্ষসকন্যা বরদৈচিলা'র কল্পকাহিনী[সম্পাদনা]

লোকগাথা মতে, বরদৈচিলা অলৌকিক ক্ষমতাসম্পূর্ণ এক বিবাহিত নারী । একজন বিবাহিত নারী রুপে বরদৈচিলা সবার মন জয় করার চেষ্টা করতেন কিন্তু তাঁর স্বামী বরদৈচিলার প্রতি সর্বদা রাগান্বিত থাকতেন। হঠাৎ চৈত্র মাসে স্বামীর সংঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। ফলে রাগান্বিত হয়ে তিনি নিজ মাতৃগৃহে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন। বরদৈচিলা প্রবল বেগে উড়ে আসতে থাকার জন্য তুফানের সৃষ্টি হয় এবং এই তুফান ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা, ফসল সব ধ্বংস করে দেয়। বরদৈচিলা এই ধ্বংসের মূল কারণ বলে এই ঘূর্ণিঝড় বরদৈচিলা নামে পরিচিত। ঝড়কে শান্ত করার উদ্দেশ্যে উঠানে দর্পন, চিরুণী ও আসন (পিড়ি বা পিড়া) দেওয়া হয় । জৈষ্ঠ মাসের প্রথম দিন বরদৈচিলা নিজ মাতৃ থেকে বিদায় নেয় । এই সময়ে বরদৈচিলা বিদায়ের বেদনায় কেঁদে উঠে ও তাঁর চোখ থেকে জল বের হয় । এই চোখের জল বৃষ্টি রুপে পৃথিবীতে পতিত হয় । লোকবিশ্বাস মতে বরদৈচিলা প্রতি বৎসর বৈশাখ মাসে মাতৃগৃহে আসেন ও জৈষ্ঠ মাসে স্বামী গৃহে প্রত্যবর্তন করেন।

বরদৈচিলার সঙ্গে জড়িত উৎসব[সম্পাদনা]

বরদৈচিলা ঘূর্ণিঝড়ের আগমন অসমে বিহুর সংবাদ দেয়। এই ঝড় অসমবাসীদের মনে বিহুর অনুভব জাগায়। অসমের বড়ো জনজাতিরা এই সমরে বৈশাগু নামক উৎসব পালন করেন । বরদৈচিলার প্রসঙ্গে গাওয়া জনপ্রিয় লোকগীত নিম্নরূপ:

বঙ্গানুবাদ: বিরিনার পাতা ব্রক্ষপুত্রের জলে হাবুডুবু, বগ পাখি নীল আকাশে উড়ছে, বৈশাখী আসছে বরদৈচিলার রুপ নিয়ে ।

আরোও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]