ফাথিমাথ ধিয়ানা সাঈদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফাতিমাথ ধিয়ানা সাঈদ
১০ম সার্কের মহাসচিব
কাজের মেয়াদ
১ মার্চ, ২০১১ – ২৪ জানুরায়ী, ২০১২
পূর্বসূরীশীল কান্ত শার্মা
উত্তরসূরীআহমেদ সেলিম
মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি
কাজের মেয়াদ
১২ নভেম্বর, ২০০৮ – ১৯ মে, ২০০৯
রাষ্ট্রপতিমোহাম্মদ নাশিদ
পূর্বসূরীআজিমা শুকোর
উত্তরসূরীহুসনু সুওদ
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মমালদ্বীপ
জাতীয়তামালদ্বীপিয়ান
দাম্পত্য সঙ্গীআবদুল্লাহ জাবির
প্রাক্তন শিক্ষার্থীতাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (আইন)
ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয় (স্নাতোকত্তর, আইন)[১]

ফাথিমাথ ধিয়ানা সাঈদ মালদ্বীপের একজন রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, আইনজীবী। তিনি দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার সাধারণ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৫ সালে সংস্থাটির যাত্রা শুরুর পর তিনিই প্রথম কোন নারী যিনি এই পদের দায়িত্ব পান। সার্ক মন্ত্রী পরিষদের ৩৩তম অধিবেশনে তিনি সাধারণ সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের ১ মার্চ তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার আগে এই পদে ভারতের শীল কান্ত শার্মা বহাল ছিলেন।

এছাড়াও তিনি মালদ্বীপের প্রধান আইনজীবী ছিলেন। আর মালদ্বীপ সরকারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কূটনীতিবিদ ছিলেন। জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতোকত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।[২] বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লেইচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনে পড়াশুনা করছেন।

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

ধিয়ানা সাঈদ মালদ্বীপের হিথাধো (বর্তমানে আদ্দু শহর) শহরে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা তিনি মালদ্বীপেই গ্রহণ করেন। এরপর ২০০০ সালে, অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ২০০৪ সালে জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতোকত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

রাজনীতি[সম্পাদনা]

ফাথিমাথ ধিয়ানা সাঈদ মালদ্বীপের ধিভেহি রাইতুঙ্গে রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। এবং এর কার্যকরী পরিষদের সদস্য হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে তিনি জামহুরি রাজনৈতিক দলে যোগ দেন এবং এর নারী শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজনীতি করার সময়ে, তিনি মালদ্বীপের মানবাধিকার, লিঙ্গ সম্পর্কিত বিষয়, আইন-কানুনসহ গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র গঠনে নিয়মিত প্রতিবাদ করতেন।[২]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ফাথিমাথ ধিয়ানা সাঈদ ২০০০ সালে মালদ্বীপের প্রধান আইনজীবী অফিসে স্টেট এটর্নি হিসেবে যোগ দেন। স্টেট এটর্নি হিসেবে তার দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রকে বিভিন্ন আইনি উপদেশ দিয়ে সাহায্য করা। এছাড়াও বিভিন্ন আইন-কানুন সম্পর্কে বিচার বিশ্লেষণ করা ইত্যাদি। ২০০৫ সালে কার্যকরী পরিচালক হিসেবে তিনি যোগ দেন। একই বছরের শুরুতে তিনি গণ মজলিসের (মালদ্বীপের সংসদ) সদস্য হন। সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি মাল্টি-পার্টি গণতন্ত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।[২]

প্রধান আইনজীবী[সম্পাদনা]

২০০৮ সালে, তিনি মালদ্বীপের প্রধান আইনজীবী হিসেবে নির্বাচিত হন। প্রধান আইনজীবী হিসেবে যোগ দেওয়ার পরপরই মালদ্বীপে মাত্রই শুরু হওয়া গণতন্ত্র শক্তপোক্ত করতে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। আর অন্যান্য শক্তিগুলোকে দমন করতেও অবদান রাখেন।

২০০৯ সালের ১৮ই মে তারিখে, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ নাশিদ আনুষ্ঠানিকভাবে ধিয়ানা সাঈদকে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেন। অনেকেই এই ব্যাপারটিকে রাজনৈতিক দলগুলোর রেষারেষির কারণ হিসেবে দায়ী করেন। বিশেষ করে তৎকালীন ক্ষমতায় থাকা মালদ্বীপ গণতান্ত্রিক দল ও ঝুমরী দলের মধ্যকার দন্দ্ব। ধিয়ানা সাঈদ ঝুমরী দলের সদস্য ছিলেন।

দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিবীদ[সম্পাদনা]

২০১০ সালের ৪ আগস্টে, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ নাশিদ, সাঈদকে মালদ্বীপের দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিবীদ হিসেবে নিয়োগ দেন।[৩] ২০১১ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত ধিয়ানা সাঈদ এই পদে বহান ছিলেন।

সার্কের সাধারণ সচিব[সম্পাদনা]

ধিয়ানা সাঈদ সার্কের ১০ম সাধারণ সচিব হিসেবে একজন প্রার্থী ছিলেন। ২০১১ সালে ভূটানে অনুষ্ঠিত সার্কের ৩৩ম মন্ত্রী পরিষদের অধিবেশনে তিনি এই পদে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত হন।[৪] ২০১১ সালের ১ মার্চ তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।[২] ২০১২ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি, মালদ্বীপের রাজনীতি বিষয়ক দ্বন্দে সমালোচিত হওয়ার কারণে এই পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। ২০১২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়। ১৯৮৫ সালে সংস্থাটির প্রতিষ্ঠার পর এই পদে তিনি প্রথম কোন ব্যক্তি যিনি পদত্যাগ করলেন।[৫]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

ধিয়ানা সাঈদ আব্দুল্লাহ জাবিরকে বিয়ে করেন এবং তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Archived copy"। ২০১১-০৭-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-১৭ 
  2. "Archived copy"। ২০১১-০৩-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৩-২১ 
  3. "Archived copy"। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৩-২১ 
  4. "Archived copy"। ২০১১-০২-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৩-২১ 
  5. "SAARC Secretary General Fathimath Dhiyana Saeed's resignation accepted"Economic Times। ২৪ ফেব্রু ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১২ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

পূর্বসূরী
শীল কান্ত শার্মা
সার্কের মহাসচিব
২০১১-২০১২
উত্তরসূরী
আহমেদ সেলিম