পোল্যান্ড–ভিয়েতনাম সম্পর্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পোল্যান্ড–ভিয়েতনাম সম্পর্ক
মানচিত্র Poland এবং Vietnam অবস্থান নির্দেশ করছে

পোল্যান্ড

ভিয়েতনাম

পোল্যান্ড–ভিয়েতনাম সম্পর্ক, পোল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়তে পোল্যান্ডের একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। অপরদিকে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে ভিয়েতনামের একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৫০ সালে, দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[১] ১৯৫৪ সালে, জেনেভা চুক্তির সময়, পোল্যান্ডের প্রতিনিধি ছিলেন জানুস লেভানডফস্কি। তিনি, ভিয়েতনামকে দুটি আলাদা অংশে বিভক্ত করার চীনা প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানান এবং এর বিরোধিতা করেন। এর কিছুদিন পূর্বেই চীন প্রথমবারের মত কমিউনিস্ট শাসনের অধীনে আসে। ১৯৫০ এর দশক এবং ১৯৮০ এর দশকে, পোল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের মধ্যকার সম্পর্কের আরও উন্নতি হয়। এই উন্নতির ক্ষেত্রে মূল কারণ ছিল শিক্ষার্থী বিনিময় কার্যক্রম। সেই সময় পোল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম, উভয়েই কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ছিল। [২][৩]

সাংস্কৃতিক সম্পর্ক[সম্পাদনা]

পোল্যান্ডে অবস্থিত ভিয়েতনামের সম্প্রদায়ের জন্য বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে, যার প্রায় সবই, সম্প্রদায়ের মানুষেরাই পরিচালনা করেন।[৪] ভিয়েতনাম এবং পোল্যান্ডের মধ্যকার সম্পর্কের প্রতি সম্মান দেখিয়ে, ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়তে অবস্থিত, ভিয়েতনাম-পোলিশ হাই স্কুল এর নামকরণ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সফর[সম্পাদনা]

১৯৯৯ সালে পোল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রীয় সফরে ভিয়েতনামে যান। সেটি ছিল, পোল্যান্ডের কোন রাষ্ট্রপতির প্রথম ভিয়েতনাম সফর। পরবর্তীতে, ২০০৫ সালে, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় এক সফরে ভিয়েতনামে যান এবং সেটি ছিল পোল্যান্ডের কোন প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ভিয়েতনাম সফর।[৫]

আবার ১৯৯৭ সালে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় এক সফরে পোল্যান্ডে যান। যেটি ছিল ভিয়েতনামের কোন প্রধানমন্ত্রীর প্রথম পোল্যান্ড সফর। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে, ভিয়েতনামের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আবার ভিয়েতনাম সফরে যান। ২০০৩ সালে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি, পোল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফরে যান। সেটি ছিল ভিয়েতনামের কোন রাষ্ট্রপতির প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র পোল্যান্ড সফর।[৫]

উন্নয়ন সহায়তা[সম্পাদনা]

২০১৫ সালে, ভিয়েতনাম এবং পোল্যান্ডের কর্মকর্তাদের মাঝে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়। সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে, পোল্যান্ড ভিয়েতনামকে ২৫০ মিলিয়ন (২৫ কোটি) ইউরো সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব দেয়।[১]

অভিবাসন[সম্পাদনা]

পোল্যান্ডে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভিয়েতনামের নাগরিক অভিবাসী হন। এর সংখ্যা প্রায় ৩০,০০০-৪০,০০০। ভিয়েতনামের অভিবাসী সম্প্রদায়ই, পোল্যান্ডের সর্ববৃহৎ অ-ইউরোপীয় অভিবাসী সম্প্রদায়।

১৯৮৬ সালে, ভিয়েতনাম, কমিউনিস্ট অর্থনীতি হতে ধনতান্ত্রিক অর্থনীতিতে পরিবর্তিত হয়। এর কয়েকবছর পর, ১৯৯০ সালে, পোল্যান্ডেও একই রূপান্তর ঘটে। এর ফলে, ভিয়েতনামের অভিবাসীদের জন্য পোল্যান্ড একটি আকর্ষণীয় স্থান হয়ে ওঠে। তবে এই অভিবাসীদের মাঝে অধিকাংশই ছিলেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। [৩][৬]

এদের অধিকাংশই প্রথমে বিভিন্ন খোলা বাজারে সবজির ব্যবসা অথবা দশম-প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্টেডিয়ামে কাপড় বিক্রি করতেন। ২০০৫-এর হিসাব অনুযায়ী সেখানে প্রায় ১.১০০ থেকে ১,২০০ ভিয়েতনামী অভিবাসীদের মালিকানাধীন দোকান ছিল।[৭][৮] ২০০২ সাল পর্যন্ত, ওয়ারশতে প্রায় ৫০০ ভিয়েতনামী রেস্তোরাঁ চালু ছিল, যার অধিকাংশই ফাস্ট ফুড বিক্রিয় করত।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. http://www.vir.com.vn/poland-vietnam-65-years-of-friendship-and-cooperation.html
  2. Grzymala-Kazlowska 2002, পৃ. ৬
  3. Nowicka, p.২১৬-২১৭
  4. Grzymala-Kazlowska 2002, পৃ. ৮
  5. "Vietnam - Poland relations"। ১৭ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  6. Grzymala-Kazlowska 2002, পৃ. ৬-৭
  7. Grzymala-Kazlowska 2002, পৃ. 7
  8. Bartoszewicz, Dariusz; Kwaśniewski, Tomasz (২০০৫-১০-০৬), "Wietnamczycy – czym zajmują się w Warszawie", Gazeta Stołeczna, ২০০৯-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০২  (পোলিশ ভাষায়)