পুংগানি
পুংগানি (তামিল: பூங்கனி, এছাড়া পুংগানি আম্মাল, পুংগানি আম্মা নামেও পরিচিত) (১৯৩৪, সারাভানন থেরি - ২রা নভেম্বর ২০১৮, কোট্টারাম, তামিলনাড়ু) একজন ভারতীয় অভিনয়শিল্পী ছিলেন। দক্ষিণের তামিলনাড়ু এবং কেরালার একটি সঙ্গীতের মাধ্যমে গল্প বলার ঐতিহ্য ভিল্লু পাট্টু গেয়ে তিনি শোনাতেন। তিনি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওম মুথু মারি পুরস্কার প্রাপক ছিলেন।
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]১৯৩৪ সালে, পুংগানি ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী জেলার অগস্তীশ্বরমের কাছে সারাভানন থেরিতে জন্মগ্রহণ করেন।[১][২] তিনি চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন কিন্তু পারিবারিক অবস্থার চাপে তিনি পড়া ছাড়তে বাধ্য হন।[৩]
১০ বা ১২ বছর বয়সে তিনি একটি স্থানীয় মন্দিরে একটি দলকে ভিল্লু পাট্টু পরিবেশন করতে দেখেছিলেন। এই শিল্পকলার দুই উল্লেখযোগ্য নারী ব্যক্তিত্ব, লক্ষ্মী এবং ধনলক্ষ্মী, তাঁকে এই শিল্প অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। তারপরে তিনি এই শিল্প ঐতিহ্যের দুই পণ্ডিত বেদমানিক্কম পুলাভার এবং শিবলিঙ্গম ভাথিয়ারের কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করেছিলেন।[২][৪][৫]
পুংগানি এরপর একটি দলের সঙ্গে সঙ্গীত পরিবেশন করা শুরু করেছিলেন, যেখানে কুড়াম (একটি মাটির পাত্রের বাদ্যযন্ত্র) এর একজন তালবাদক সদস্য ছিলেন থাঙ্গাপান্ডিয়ান। তাঁর যখন পনের বছর বয়স, তখন তাঁরা বিবাহ করেন,[৬] এবং একত্রে প্রদর্শন চালিয়ে যান।[৫]
থাঙ্গাপান্ডিয়ান ২০১৫ সালে মারা যান।[৫] পুংগানি নাগেরকয়েলের কাছে কোট্টারামে স্বল্প পেনশনে অসহায় জীবন যাপন করে, ২০১৮ সালের ২রা নভেম্বর মারা যান,[৭] যদিও তাঁর জীবনের শেষ বছরে তাঁর বাসস্থানটি রং করা হয়েছিল। সিঙ্গাপুরের একজন তামিল র্যাপ গায়িকা লেডি কাশ, তাঁকে দেখতে গিয়ে তাঁর বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে দিয়েছিলেন। লেডি কাশের এই সফর পুংগানিকে আবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে এনে দিয়েছিল। সংবাদ সংস্থার খবরে জানা যায় যে লেডি কাশ তাঁর সম্মানে "ভিল্লুপাট্টু" নামে একটি গান তৈরি করেছেন।[৮]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]ভিল্লু পাট্টু হল একটি দীর্ঘ-স্থায়ী সঙ্গীতের গল্প বলার ঐতিহ্য। এটি প্রদর্শনের সময় সঙ্গে বাজে ছড়ের সাহায্যে বাজানো তারের বাদ্যযন্ত্র, এবং সঙ্গে থাকে সঙ্গীতজ্ঞদের একটি দল। এতে প্রধান গায়ক এবং সহযোগীদের মধ্যে বার্তালাপের একটি প্রক্রিয়া জড়িত থাকে। পুংগানি "ভিসুকোল" এর একটি অনন্য ঘূর্ণনের সাথে বাদ্যযন্ত্রের ছড় চালানোর একটি কৌশলের বিকাশ করেছিলেন। তাঁর যন্ত্রটিতে এক জোড়া মোটা লাঠির সাথে ঘণ্টা লাগানো ছিল, যাকে তিনি ছড় দিয়ে বাজাতেন। পুংগানি এবং তাঁর দল পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ তামিলনাড়ু এবং কেরালার আশেপাশে প্রদর্শন করেছেন। এরপর ৭০ বছর বয়সে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।[৯]
পুংগানিকে ভিল্লু পাট্টুর প্রায় পুরো শাস্ত্রীয় ভাণ্ডার জানার পাশাপাশি নতুন গান তৈরি করার কৃতিত্ব দেওয়া হয়।[২] তিনি তরুণ প্রজন্মের শিল্পীদেরও শিক্ষা দিয়েছেন।[৪]
ভিল্লু পাট্টু
[সম্পাদনা]অনুষ্ঠানের গান ঐতিহ্যগতভাবে তিন দিন স্থায়ী হয়। সেখানে আঞ্চলিক দেব দেবীর গল্প বলা হয় কিন্তু আরও প্রসারিত করার জন্য মহাভারত এবং রামায়ণের গল্পও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[২] মুথারাম্মাম এবং সুদালাইমদান মন্দিরে ধর্মীয় উৎসবগুলি শেষ করার সময় সাধারণত এই শিল্পকলা প্রদর্শিত হয়।[৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ T. Ramakrishnan (২৭ জুন ২০১৮)। "தமிழகத்தின் முதல் பெண் வில்லுப்பாட்டுக் கலைஞர்!"। Dinamani (তামিল ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ গ ঘ Vishnu Swaroop (২২ জুলাই ২০১৬)। "A tale of Poongani, the oldest living villupaattu performer in Tamil Nadu"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ K. Kathivaran (১৮ নভেম্বর ২০১৬)। "வியக்க வைக்கும் வில்லிசை வித்தகி"। Dinakaran (তামিল ভাষায়)। ১১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ গ S. Mahesh (১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "Octogenarian Villupattu Artiste Living in Penury"। The New Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ গ B. Kolappan (২ জুন ২০১৮)। "A villupaatu artiste and the sad notes of life"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "வில்லுப்பாட்டு வித்தகி பூங்கனி!"। Dinamani (তামিল ভাষায়)। ১৮ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Special Correspondent (২ নভেম্বর ২০১৮)। "Veteran villupaattu exponent dead"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Kanyakumari: Oldest Villupattu performer Poongani passes away at 84"। Deccan Chronicle। ৪ নভেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Priya Saravana (২৩ মে ২০১৮)। "The bow's song: Once famous, 84-yr-old villupaattu artist Poongani now lives in poverty"। The News Minute। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৮।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- வில்லுப்பாட்டில் 'வெங்கலராஜான் கதை' - பூங்கனி அம்மா। University of Madras।