পালঘাটের মাদল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাদক মাদল বাজাচ্ছে
মাদল

পালঘাটের মাদল বা মাদ্দলম বা মাধলম (মালায়ালাম: മദ്ദളം) হ'ল কাঁঠাল গাছের কাঠের তৈরি ড্রাম। এটি বাজানোর দুটি দিক রয়েছে, যা চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকে এবং প্রতিটি পাশে বিভিন্ন ধরনের শব্দ সৃষ্টি করা যায়। মাদল হ'ল একটি ভারী উপকরণ যা বাদক ব্যক্তির কোমরে ঝুলানো হয় এবং পুরো সময়টা এর বাদককে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। মাদল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাদ্যযন্ত্র, বিশেষ করে কেরলের ঐতিহ্যগত ঘাতবাদ্য দল যেমন পঞ্চবাদ্যম, কেলি এবং কথাকলি অর্কেস্ট্রার জন্য। [১][২]

মাদল নামটি মারধলমের একটি অপভ্রংশ, যার অর্থ চাপ দেয়া। সংস্কৃত ভাষায় একে মারধলম বলে।

আদিবাসী সাঁওতালদের একটি জনপ্রিয় বাদ্যযন্ত্র হল মাদল। এটিও বাংলার অন্যতম প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র গুলোর মধ্যে একটি, ষোড়শ শতকের 'গোরক্ষ বিজয়' কাব্যে মাদলের উল্লেখ পাওয়া যায়। ঝুমুর নাচ-গানে এবং আদিবাসী সাঁওতালদের মধ্যে এর ব্যাপক ব্যবহার দেখা হয়। [৩][৪]

পূরাণে মাদল[সম্পাদনা]

এটি শিব এবং ভগবান পার্বতীর সাথে সাদৃশ্যযুক্ত বলে মাদলকে দেববাদ্যম হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, মাদলের কাঠামো দ্বারা সত্যই "শিবশক্তি" স্বরূপের অনুরূপ, যেখানে মাদলের ডান হাতটি শিবের এবং বাম হাতটি পার্বতীর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। [৫]

উপকরণ[সম্পাদনা]

মৃদঙ্গের মতো মাদলও মাটির তৈরি, তবে কিছুটা স্থুলাকার। ষাঁড়ের চামড়া দিয়ে এর গোলাকার অংশটি ঢাকা হয় এবং মহিষের চামড়া এগুলি বাঁধার তন্তু তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। [৬] কুমোরের বাড়ি থেকে মাটির খোল কিনে আনা হয়। কিনে আনতে হয় চামড়া। তারপর সেই সেই চামড়া পরিষ্কার করে নিয়ে, লাগান হয়। [৭]

বাজানো[সম্পাদনা]

বাদ্যযন্ত্রটি এর বাদকের নিতম্ব পর্যন্ত ঝুলিয়ে বাজানো হয়। প্রাচীন কালে এটি ঘাড়ে ঝুলিয়ে বাজানো হত এবং এই ধরনটি ১৯২০ এর দশকে মাস্টার ভেঙ্কিচান স্বামী পরিবর্তন করেছিলেন। বাদ্যটির বাম পাশ ডান তালু দিয়ে এবং ডান পাশ বাম তালুতে আঘাত করা হয়। বাজাতে আঙ্গুল এবং তালু ব্যবহার করা হয়। ক্ষত এড়াতে বৃদ্ধাঙ্গুল বাদে ডান হাতের আঙ্গুলগুলিতে কাপড়ের দস্তানা ব্যবহার করা হয়। [৬]

সাহিত্যে মাদল[সম্পাদনা]

কলামন্দলাম শঙ্কর ওয়ারিয়র, বিখ্যাত মাদল শিক্ষক, কেরলের কলামন্দলামের সহায়তায় ২০০৩ সালে মাদলের উপর "মদদালাম এন্না মঙ্গলালা বৈদ্যম" নামে একটি বই প্রকাশ করেছেন। এই যন্ত্রটি বাজানো এবং বোঝার একমাত্র বিস্তৃত দিক নির্দেশিকা। এটি এই বাদ্যযন্ত্রের বিবর্তন, ইতিহাস, নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, এবং বর্তমান মাদদালাম সম্পর্কিত একটি বিস্তৃত গবেষণা। [৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Melody on the maddalam"The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২০ 
  2. https://www.thenewsminute.com/article/keeping-craft-alive-kerala-village-has-been-making-maddalam-mridangam-200-yrs-78533
  3. "আসলামের বিরল বাদ্যযন্ত্রের সংগ্রহশালা"The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১২-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০১ 
  4. "বাংলার বাদ্যযন্ত্র - একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি"Alauddin Vuian। ২০২০-১২-২৫। ২০২১-০১-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০১ 
  5. "Madhalam"Indian Music School (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০১ 
  6. "Shudda Maddalam - A percussion instrument"www.keralaculture.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০১ 
  7. "ধামসা-মাদলের ছন্দে দুলে ওঠে শরীর ও মন, জানুন কীভাবে তৈরি হয় এই দুই বাদ্যযন্ত্র"Aaj Tak বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০১