পায়েল তদভির আত্মহত্যা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

পায়েল তদভি বা পায়েল সেলিম তদভি আত্মহত্যা মামলা ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের একটি চলমান ফৌজদারি মামলা। টোপিওয়ালা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ এবং বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতালে তাঁর তিনজন বরিষ্ঠের দ্বারা হয়রানির শিকার হওয়ার পর পায়েল ২০১৯ সালের ২২শে মে, আত্মহত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ।[১][২] পায়েলের জাতগত অবস্থা সম্পর্কিত হয়রানির দাবির কারণে তাঁর তিন প্রাক্তন সহকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা আনা হয়েছে।[৩]

পটভূমি[সম্পাদনা]

২৬ বছর বয়সী পায়েল সেলিম তদভি বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতালের প্রসূতিস্ত্রীরোগবিদ্যায় তাঁর স্নাতকোত্তর ডিগ্রির দ্বিতীয় বর্ষের আবাসিক ডাক্তার ছিলেন।[৩][৪][৫][৬]

তিনি মহারাষ্ট্র রাজ্যের তফসিলি মুসলিম তদভি ভিল[৭] উপজাতির অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। জলগাঁওয়ের একটি মেডিকেল স্কুলে তাঁর স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর, তিনি মুম্বাই চলে যান এবং সেখানে বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতালে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যান।[৮] তিনি সম্ভবত তাঁর গ্রামের প্রথম ব্যক্তি যিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।[৯]

গ্রেফতার ও অভিযোগ[সম্পাদনা]

দুর্ঘটনার পরপরই, পায়েল তদভির তিনজন বরিষ্ঠ সহকর্মী, ডক্টর ভক্তি মেহরে, ডক্টর অঙ্কিতা খাণ্ডেলওয়াল এবং ডক্টর হেমা আহুজাকে আগ্রিপাড়া পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার এবং প্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগে গ্রেফতার করে।[৩][৪][১০][১১] কিছুদিন পরে, তদভি পরিবারের আইনি প্রতিনিধির অনুরোধে, মামলাটি মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চে স্থানান্তরিত হয়।[১২]

প্রায় দুই মাস পরে (জুলাই ২০১৯), মুম্বাই পুলিশ একটি ১,২০৩ পৃষ্ঠার অভিযোগ পত্র (চার্জশিট) দাখিল করে। তারা তিনজন ডাক্তারকে তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইন, মহারাষ্ট্র র‌্যাগিং নিষিদ্ধকরণ আইন এবং ২০০০ সালের তথ্য প্রযুক্তি আইন -এর অধীনে অপরাধগুলির জন্য অভিযুক্ত করে।[২][১৩] অভিযোগপত্রে প্রায় ১৮০ জন সাক্ষীর (সহকর্মী, স্টাফ সদস্য এবং হাসপাতালের সিনিয়রদের) বক্তব্য রয়েছে এবং সেইসাথে ঘটনাস্থলে থাকা পায়েল তদভির মোবাইল ফোনে পুলিশের আগে পাওয়া সুইসাইড নোটের ছবি ছিল, কিন্তু কোন কাগজের লেখা পাওয়া যায়নি।[২][১৪] বিবৃতিতে প্রদত্ত তথ্য থেকে জানা যায় যে পায়েল তদভি তাঁর সামাজিক অবস্থানের কারণে বৈষম্যের শিকার এবং অপমানিত হয়েছেন, সিনিয়ররা তাঁর বিরুদ্ধে বর্ণবাদী অপবাদ ব্যবহার করছেন এবং তাঁকে তাঁর জাতীয় যোগ্যতা সহ প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছেন।[১৫] মৌখিক হয়রানির বাইরে, বিবৃতিগুলি থেকে জানা গেছে যে সিনিয়ররা তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে বা অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছিলেন।[১৫] তাঁর নিজের বিবৃতিতে, পায়েল তদভির সহকর্মী এবং বন্ধু স্নেহাল শিন্দে বলেছেন যে পায়েলের মৃত্যুর মাত্র দুই দিন আগে এই তিনজন পায়েলকে হাসপাতালের প্রসবকালীন যত্ন বিভাগে তাঁর উচ্চ শ্রেণীর পদ থেকে অবনমন করে প্রসবোত্তর যত্ন বিভাগে নামিয়ে দিয়েছিলেন। এটি সাধারণত জুনিয়র ছাত্রদের জন্য সংরক্ষিত থাকে।[১৫]

অভিযোগ পত্রের সাথে ফরেনসিক রিপোর্ট সংযুক্ত ছিল যার থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, যে সুইসাইড নোটের ছবি পাওয়া গেছে তার হাতের লেখা পায়েল তদভির। ঘটনাস্থলের প্রাথমিক তদন্তের সময়, পায়েলের ফোনে নোট ছাড়া, পুলিশ কোন কাগজের লেখা পায়নি।[১৫][১৬] যেহেতু তিনজন বরিষ্ঠই পায়েলের মৃত্যুর পর তাঁর ঘরে প্রথম প্রবেশ করেছিলেন এবং স্টাফ সদস্যদের জানিয়েছিলেন, পুলিশ সন্দেহ করে যে তাঁরা এটি নষ্ট করেছেন।[১৫]

৯ই আগস্ট, ত্রয়ীকে বোম্বে হাইকোর্ট জামিন দেয়।[৩][৪][৮] প্রত্যেক মহিলাকে ২ লক্ষ টাকার জামিন জমা দিতে হয়েছিল এবং একদিন ছাড়া একদিন ক্রাইম ব্রাঞ্চের সামনে হাজির হতে হয়েছিল।[৩] তাঁদের জামিনের অতিরিক্ত শর্তাবলী অনুযায়ী সুস্পষ্ট অনুমতি ছাড়া তাঁদের মুম্বাইয়ের বাইরে ভ্রমণে বারণ ছিল এবং তাঁদের বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতাল বা এর অধিভুক্ত টোপিওয়ালা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে প্রবেশ নিষেধ ছিলো।[৩] বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের মেডিকেল লাইসেন্স সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।[১৫][১৬] ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, তিন অভিযুক্ত বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতালে তাঁদের স্নাতকোত্তর রেসিডেন্সির চূড়ান্ত বছর শেষ করার অনুমতির অনুরোধ জানিয়ে আদালতে একটি আবেদন জমা দিয়েছিলেন।[১৭] একই মাসে, বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি সাধনা যাদব অনুরোধটি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, ডাক্তারদের জানিয়েছিলেন যে বিচার শেষ হলে তাঁরা তাঁদের স্নাতকোত্তর শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন।[১৮]

তিনজন সিনিয়র ছাড়াও, আগস্টে মুম্বাই পুলিশ আদালতকে জানায় যে তারা বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের প্রধান ই চিং লিং-এর বিরুদ্ধে তদন্তের একটি চিঠি তৈরি করেছে।[২][১৩] পায়েল তদভির মা, আবেদা সেলিম তদভি, রিপোর্ট করেছেন যে তিনি হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে বারবার ডক্টর ই চিং-এর কাছে গিয়েছিলেন, কিন্তু কোন ফল হয়নি।[২][১৫][১৬] মামলায় ডাঃ ই চিং এর জড়িত থাকার ফলে তাঁকে হাসপাতাল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল; কিন্তু তদভি পরিবার তাঁর অবহেলার প্রমাণ উপস্থাপন করতে অক্ষম হয়, তখন মহারাষ্ট্র রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ডঃ ই চিংকে তাঁর সন্দেহজনক অপরাধ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ক্লিন চিট দেয়।[১৯][২০] অব্যাহতি সত্ত্বেও, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ডাঃ ই চিং নিলম্বিত ছিলেন।[২০] বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অধ্যাপকরা তখন থেকে স্কুলের কাছে একটি তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করেছেন, তাঁদের সন্দেহ যে শেষ পর্যন্ত তাঁকে হয়তো পুনর্বহাল করা হবে।[২০]

বিচার কার্যক্রম[সম্পাদনা]

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, বোম্বে হাইকোর্ট বিচার শেষ করার জন্য বিশেষ আদালতে ১০ মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করে।[১৮]

আরও বড় সমস্যা[সম্পাদনা]

পায়েল তদভির মৃত্যুর পরে, তাঁর মা যোগ দিয়েছিলেন রাধিকা ভেমুলার বাহিনীতে, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বৈষম্য বিরোধী নীতিগুলিকে শক্তিশালী করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো যায়।[২১] রাধিকা ভেমুলার ছেলে রোহিত ভেমুলার মৃত্যুর ক্ষতির অভিজ্ঞতা আবেদা তদভিকে আয়না দেখিয়েছিল। রোহিত ভেমুলা অন্য এক দলিত, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন, ২০১৬ সালে তাঁকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত করা হয়েছিল।[২২] মায়েরা তাঁদের আবেদনে আদালতকে অনুরোধ করেছিলেন, যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তাদের ক্যাম্পাসে বর্ণ-ভিত্তিক বৈষম্য রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের জন্য যেন আরও নির্দেশিকা জারি করা যায়। মহিলারা "বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলিত ও আদিবাসী ছাত্র, শিক্ষক এবং কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য সরকারের সমালোচনা" করেছেন।[২১]

ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তনকে উন্নীত করার জন্য, মায়েরা সুপ্রিম কোর্টকে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য নিম্নলিখিত চারটি নির্দেশ জারি করার অনুরোধ করেছিলেন:

  1. একটি নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য সমান সুযোগের সেল প্রতিষ্ঠা করুন এবং নিপীড়িত সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করুন;
  2. জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগে অভিযোগ দায়েরকারী ছাত্র বা কর্মচারীদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পদ্ধতি গড়ে তোলা;
  3. জাতিগত সমস্যাগুলির প্রতি তাদের সংবেদনশীলতা বাড়াতে নিয়মিতভাবে কর্মচারী, প্রশাসক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক ওরিয়েন্টেশন কোর্স এবং প্রশিক্ষণের আয়োজন করুন;
  4. বর্ণ-ভিত্তিক বৈষম্য মোকাবিলায় কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা প্রকাশ্যে এবং স্বচ্ছভাবে প্রদর্শন করুন, সম্ভব হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।[২১][২৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Dr Payal Tadvi Case: BMC Suspends License Of 4 Doctors At Nair Hospital"HuffPost India। ২৮ মে ২০১৯। 
  2. "Payal Tadvi suicide case: Accused doctors granted bail by Bombay HC on strict conditions"Scroll.in (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ আগস্ট ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৮ 
  3. Nasim, Farhat (২০১৯-১২-৩০)। "Dr Payal Tadvi Suicide Case: 2 Accused Doctors Exonerated by Maharashtra Human Rights Panel"Medical Dialogues (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৮ 
  4. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; medicaldialogues.in নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  5. "Dr Payal Tadvi faced regular abuse, threats: Anti-ragging panel"The Times of India। ৩০ মে ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৯ 
  6. "College Confirms Payal Tadvi Was Subjected to 'Extreme Harassment'"The Wire। ২৯ মে ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৯ 
  7. "Explained: Who are Tadvi Bhil Muslims?"Indianexpress.com। ২৯ মে ২০১৯। 
  8. Shantha, Sukanya (২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "Four Months After Payal Tadvi's Death, Family Claims Her Belongings From Hospital"The Wire। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৮ 
  9. Perappadan, Bindu Shajan (৩০ মে ২০১৯)। "Payal Tadvi death an "institutional murder", says medical fraternity"Thehindu.com 
  10. "Was Mumbai doctor Payal Tadvi murdered? Post mortem report finds bruises on neck, body"India Today 
  11. Mengle, Gautam S. (২৯ মে ২০১৯)। "Payal Tadvi's death: Two more doctors held; all three accused remanded in police custody till May 31"Thehindu.com 
  12. Mengle, Gautam S. (৩০ মে ২০১৯)। "Crime Branch to probe Payal Tadvi suicide case"Thehindu.com 
  13. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; scroll.in নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  14. "Solving Crime: How a photo of a suicide note from a doctor's phone helped Mumbai police book 3 accused"The Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  15. Shantha, Sukanya (২৫ জুলাই ২০১৯)। "Payal Tadvi Case: Chargesheet Reveals Months of Humiliation, Discrimination"The Wire। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৮ 
  16. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; thewire.in নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  17. Saigal, Sonam (২০২০-০২-২১)। "Payal Tadvi suicide: gynaecology HoD of Nair Hospital to appear before HC"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৯ 
  18. "Payal Tadvi Case: Three Accused Refused Bombay HC Nod to Complete PG from Nair Hospital"News18। Mumbai। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৯ 
  19. Sen, Sumanti (২০১৯-১২-৩১)। "Payal Tadvi Suicide: Two Department Heads Given Clean Chit For Want Of "Linking Evidence""thelogicalindian.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৯ 
  20. Menon, Vinod Kumar (২০২০-০২-১২)। "Payal Tadvi suicide case: 'Allow Dr Ching Ling to get back to work'"mid-day (ইংরেজি ভাষায়)। Mumbai। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৯ 
  21. "Mothers of Rohit Vemula, Payal Tadvi petition Supreme Court against caste discrimination on campuses"TheLeaflet (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৮-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৯ 
  22. Vemireddy, Nithya (১৩ জুলাই ২০১৯)। "The Price of India's Caste System: The Case of Rohit Vemula – AIF"American India Foundation (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৯ 
  23. "Mothers of Rohith Vemula and Dr Payal Tadvi move SC over casteism on campuses"The News Minute। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৯ 

টেমপ্লেট:Campus violence in India