পাথরে খোদাই করা মানুষের ছায়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

"পাথরে খোদাই করা মানুষের ছায়া" হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে একটি প্রদর্শনী।[১]এটি এমন একজন ব্যক্তির অবশিষ্টাংশ বলে মনে করা হয় যিনি হিরোশিমার উপর পারমাণবিক বোমা ফেলার সময় সুমিতোমো ব্যাংকের হিরোশিমা শাখার প্রবেশদ্বারে বসে ছিলেন। এটি মানুষের মৃত্যুর ছায়া বা ব্লাস্ট শ্যাডো নামেও পরিচিত।

ছবিটি তুলেছেন Yoshito Matsushige. সাংবাদিকের পা কনটেক্সের সাথে মিল রেখে দেখানো হয়েছে[২]

পটভূমি[সম্পাদনা]

বোমা হামলার পর সুমিতোমো ব্যাংকের হিরোশিমা শাখা। প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির কাছে মৃত্যুর মানব ছায়া ছিল।

জাদুঘরের তথ্যমতে, মনে করা হয় ব্যক্তিটি পাথরের সিঁড়িতে বসে ব্যাংক খোলার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।[৩]ব্যাংক থেকে মাত্র ৮৫০ ফিট দূরে ৬ই আগস্ট, ১৯৪৫ সকাল ৮:১৫ তে মানব ইতিহাসে যুদ্ধে ব্যবহৃত প্রথম পারমাণবিক বোমা ৯৭০০ পাউন্ডের “লিটল বয়” হিরোশিমা শহরে বিস্ফোরণ ঘটায়। [৪]আশেপাশের সবাই তখন ধারণা করেছিল, বিস্ফোরণে তৈরি অধিক পরিমাণ তাপ এর কারণে কোনো মানুষটির দেহ বাষ্পীভূত হয়েছে আর সেই মানুষের দেহের শেষচিহ্ন হিসেবে সিঁড়িতে গাঢ় ছায়া তৈরি হয়েছে।

কিন্তু জাদুঘরের তথ্যমতে, বোমা হামলার পরপরই ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বলে মনে করা হয়। তীব্র তাপের এই স্তরে একটি শরীরকে রাখলে হাড় এবং কার্বনাইজড অঙ্গগুলো শুধু থেকে যাবে।[৫] যদিও বিকিরণ মারাত্মকভাবে স্ফীত হতে পারে এবং ত্বকে আলসার সৃষ্টি করতে পারে, শরীরের সম্পূর্ণ বাষ্পীভবন অসম্ভব। সিঁড়িতে থাকা মানবছায়া আসলে তৈরি হয়েছিল কোনো এক মানুষের দেহের আকার অনুসরণে। বিস্ফোরণের অধিক তাপ আর তেজস্ক্রিয়তায় সিঁড়ির সব অংশ বিবর্ণ হয়ে যায়। তবে, সিঁড়ির উপর একজন মানুষের অবস্থানের কারণে সিঁড়ির নির্দিষ্ট একস্থানের পদার্থ বিবর্ণ না হয়ে তার স্বাভাবিক বর্ণ ধরে রাখে।[৬] একটি পাথরের টুকরো যার মধ্যে নিদর্শন রয়েছে (৩.৩ মিটার চওড়া এবং ২ মিটার উঁচু) মূল স্থান থেকে কেটে যাদুঘরে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।[৭]

১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে, জাদুঘরটি সেই পাথরটি অধিগ্রহণ করে যার উপর আবহাওয়ার কারণে মানুষটির ছায়া অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।[৮]১৯৭৫ সালের এপ্রিলে, জাদুঘর ছায়া সংরক্ষণে গবেষণা শুরু করে।[৯] ১৯৯১ সালে, যাদুঘর রিপোর্ট করেছে যে সংরক্ষণ পদ্ধতির তদন্ত শুরু হয়েছে।[১০] বর্তমানে, পাথরটি কাঁচ দ্বারা বেষ্টিত।[১১]জাদুঘর কর্তৃপক্ষ মানবছায়াটিকে “অচি মিতসুনো” নামের ৪২ বছর বয়সী এক নারীর দেহের ছায়া হিসেবে তথ্য প্রদান করেন- তবে বিস্ফোরণের পরের পরিণতি কি হয়েছিল, তা নিয়ে সঠিকভাবে তথ্য প্রদান করতে পারেননি।[১২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Damage by the Heat Rays/Human Shadow Etched in Stone"web.archive.org। ২০২১-০৯-২৪। ২০২১-০৯-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  2. "ヒロシマの記録 原爆・平和写真データベース化"www.hiroshimapeacemedia.jp। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  3. "人影の石"web.archive.org। ২০২১-০৫-১৪। ২০২১-০৫-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  4. Serena, Katie (২০২৩-০১-১৯)। "These Eerie Shadows Of Hiroshima Residents Were Burned Into The Ground By The Atomic Bomb"All That's Interesting (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  5. "10代がつくる平和新聞 - ひろしま国:8.6探検隊【熱線で「人が蒸発」本当?】"www.hiroshimapeacemedia.jp। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  6. updated, Stacy KishContributions from Ben Turner last (২০২১-০৮-০১)। "Why did the atomic bomb dropped on Hiroshima leave shadows of people etched on sidewalks?"livescience.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  7. "ヒロシマの記録1971 1月"中国新聞ヒロシマ平和メディアセンター (জাপানি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  8. "ヒロシマの記録1975 4月"中国新聞ヒロシマ平和メディアセンター (জাপানি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  9. "ヒロシマの記録1975 4月"中国新聞ヒロシマ平和メディアセンター (জাপানি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  10. "ヒロシマの記録1991 5月"中国新聞ヒロシマ平和メディアセンター (জাপানি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  11. "原爆時計:針折れる 広島資料館の収蔵資料約2万点、劣化進む - 毎日新聞"web.archive.org। ২০১৮-১০-২১। ২০১৮-১০-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪ 
  12. "「人影の石」説明板に名前追加"www.hiroshimapeacemedia.jp। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৪