পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন
![]() | |
গঠিত | ১৯৯০ |
---|---|
ধরন | সরকার প্রতিষ্ঠিত শীর্ষ উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান |
সদরদপ্তর | ঢাকা, বাংলাদেশ |
যে অঞ্চলে কাজ করে | সমগ্র বাংলাদেশ |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা |
চেয়ারম্যান | জাকির আহমেদ খান |
ওয়েবসাইট | https://pksf.org.bd |
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসইভাবে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। এটি ঢাকা, বাংলাদেশ এ অবস্থিত। [১][২] এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান।[৩] জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন মো: ফজলুল কাদের। এই উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে দেশব্যাপী আর্থিক ও অ-আর্থিক সেবা প্রদান করে থাকে। [৪]
ইতিহাস ও কার্যক্রম
[সম্পাদনা]গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠা পায় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। [১] এর রূপকল্প হলো: 'এমন এক বাংলাদেশ যেখানে দারিদ্র্য উন্মুলিত হবে; বিদ্যমান উন্নয়ন ও সুশাসনের নীতি হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, মানবকেন্দ্রিক ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই এবং সমস্ত নাগরিক সুস্থ, যথাযথভাবে শিক্ষিত, ক্ষমতায়িত এবং মানবিক মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপন করবে।' [৫]
পিকেএসএফ-এর অভিলক্ষ্য হলো: মানব জীবন ও মানব দারিদ্র্যের বহুমাত্রিকতাকে স্বীকার করে নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন; জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে উপযুক্ত প্রয়োজনসমূহ পূরণ করে, মানুষের প্রগতিতে জীবনচক্রের সমগ্র পদ্ধতির অনুসরণ। নীতি পররিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়নের কেন্দ্রে থাকবে মানুষ এবং এসবের মূল লক্ষ্য থাকবে মানুষের আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং পরিবেশ সুরক্ষা। সহায়তা ও পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত থাকবে শিক্ষা, কর্মশক্তি উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, অবকাঠামো, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং পরিকল্পিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, সামাজিক সমস্যা এবং সামাজিক মূলধনের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং উপযুক্ত অর্থায়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজাত যথাযথ প্রতিক্রিয়া, জেন্ডার, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ক্রীড়া এবং সামাজিক সচেতনীকরণ ইত্যাদি।[৫]
এই সকল অভিলক্ষ্যের সমন্বয়ে পিকেএসএফ 'সমৃদ্ধি' শীর্ষক একটি যুগান্তকারী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ২০১০ সাল থেকে বাস্তবায়নাধীন পিকেএসএফ-এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও গণবান্ধব এই কর্মসূচির পূর্ণরূপ হলো ‘দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে দরিদ্র পরিবারসমূহের সম্পদ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি’। সামগ্রিকভাবে, এই কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে মানবমর্যাদা এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এই লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সূচক আমলে নিয়ে দারিদ্র্যের বহুমাত্রিক সমস্যা বিবেচনায় রেখে নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। মূলত, মাতৃগর্ভ হতে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের সকল পর্যায় বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় সকল অনুষঙ্গ অন্তর্ভুক্ত করে কমিউনিটি-ভিত্তিক উন্নয়নের ধারণাই হচ্ছে ‘সমৃদ্ধি’। বর্তমানে দেশের ২০২টি ইউনিয়নের প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষের মাঝে কাজ করছে এই কর্মসূচি।[৬]
দারিদ্র্য নিরসন ও দারিদ্র্য-পরবর্তী উন্নয়নের অন্যতম হাতিয়ার হিসাবে ক্ষুদ্র উদ্যোগ উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে পিকেএসএফ। কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসইভাবে দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতি উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০১ সাল থেকে ‘অগ্রসর’ শীর্ষক ক্ষুদ্র উদ্যোগ উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করা হয়। এর পূর্বে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পর্যাপ্ত অর্থায়ন করার মতো উল্লেখযোগ্য কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা এই দেশে ছিলো না। তবে, শুরুতে ‘অগ্রসর’ কর্মসূচির পরিধি ছিলো অত্যন্ত সীমিত। ২০১০ সালে অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই কর্মসূচি সুপরিসর রূপ লাভ করে। মূলত তার প্রজ্ঞাজাত দিকনির্দেশনার ওপর ভিত্তি করেই পিকেএসএফ-এর অন্যান্য মানবকেন্দ্রিক কার্যক্রমের মতো ‘অগ্রসর’ কর্মসূচির আওতায়ও নতুন নতুন প্রকল্প গৃহীত হয়। বর্তমানে, দেশজুড়ে ১৫ লক্ষেরও বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এই কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ধরনের আর্থিক ও অ-আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন।
কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্প বাস্তবায়নে পিকেএসএফ অর্থায়ন ও তার ব্যবস্থাপনার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে থাকে। মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম বাস্তবায়নকারী পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থাসমূহের সহায়তায় দেশজুড়ে উদ্যোগ উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ইতিবাচক পরিবেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পিকেএসএফ-এর বিভিন্ন আর্থিক ও অন্যান্য কর্মসূচির আওতায় সংগঠিত সদস্যরা পিকেএসএফ-এর বিভিন্ন আর্থিক ও অ-আর্থিক পরিষেবা গ্রহণ করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত এসব সহযোগী সংস্থা ব্যাপকবিস্তৃত কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষের আয় বৃদ্ধি ও মজুরিভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক কল্যাণ, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং সর্বোপরি মানবমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করছে।[৭]
জুলাই ২০২১-এর হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক এবং অ-আর্থিক সেবা প্রদান করে পিকেএসএফ। এটি বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলের উন্নয়নের বৃহত্তম সংস্থা। [৮]
দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য পিকেএসএফ ২০১২ সালে নওয়াব আলী চৌধুরী জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়। [৯]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "FAQs - PKSF"। PKSF। ২৪ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ "Strengthen bargaining skills to profit from global carbon trading: experts"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ "পিকেএসএফের নতুন চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ"। Bangla Tribune। ২০২৪-০৯-০১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-২১।
- ↑ "What is PKSF?"। PKSF Website (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ জুলাই ২০২১। ২৪ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০২১।
- ↑ ক খ "Vision & Mission"। PKSF Website। 01 July 2018। সংগ্রহের তারিখ 27 July 2021। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Ahmad, Dr Qazi Kholiquzzaman (২০১৫)। EMPOWERMENT IS KEY TO POVERTY ERADICATION AND HUMAN DIGNITY: A New Holistic PKSF Approach : ENRICH। ঢাকা, বাংলাদেশ: পিকেএসএফ। line feed character in
|শিরোনাম=
at position 22 (সাহায্য) - ↑ "পিকেএসএফ বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৯" (পিডিএফ)। PKSF Website। 01 June 2020। সংগ্রহের তারিখ 27 July 2021। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "Bangladesh vulnerable to climate change as coastal residents are getting displaced"। The Hans India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ "8 personalities, organisations to get Nawab Ali Chy award"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ এপ্রিল ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৭।