পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া
জন্ম২৪ অক্টোবর ১৮৭১
নকাড়ী গাঁও, উত্তর লক্ষীমপুর
মৃত্যু৭ এপ্রিল ১৯৪৬
পেশাকবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, জীবনীকার, হাস্যরসিক, প্রবন্ধকার ও সাংবাদিক

পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া (অসমীয়া: পদ্মনাথ গোহাঞিবরুৱা) অসমের একজন বিখ্যাত ব্যক্তি। তিনি একাধারে একজন কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, হাস্যরসিক, প্রবন্ধকার ও সাংবাদিক ছিলেন। অসমীয়া ভাষা সাহিত্যকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন[১][২]।।

জন্ম ও পরিবার[সম্পাদনা]

১৮৭১ সনের ২৪ অক্টোবর তারিখে অসমের উত্তর লক্ষীমপুরের নকাড়ী নামক স্থানে পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ঘিনারাম গোহাই বড়ুয়া ও মাতার নাম লম্ভীদেবী। শিবসাগর জেলার জাঁজী মরাণ গ্রামে ঘিনারাম গোহাই বড়ুয়া জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কিনারাম গোহাই বড়ুয়া। তারা থাউমুং ক্লিংলুনমং বুড়া গোহাই বংশের লোক ছিলেন।[৩]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

১৮৭৯ সনে উত্তর লক্ষীমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া শিক্ষাজীবন আরম্ভ করেন। ১৮৮৪ সনে তিনি শিবসাগর সরকারি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে নামভর্তী করেন। ১৮৯০ সনে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চ শিক্ষাপ্রাপ্তের জন্য তিনি কলকাতার রিপন কলেজে নামভর্তী করেন। তিনি কলকাতার কলেজে ওকালতীর জন্যও নামভর্তী করেছিলেন যদিও তিনি শিক্ষা অসমাপ্ত করে অসমে ফিরে আসেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

অসমে ফিরে এসে পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া কোহিমা মধ্য ইংরেজি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদে নিযুক্তি লাভ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি তেজপুর সরকারি উচ্চতর বিদ্যালয় ও যোরহাট সরকারি উচ্চতর বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কার্যনির্বাহ করেন। কোহিমাতে কর্মরত সময়ে তিনি লীলাবতীর সহিত বিবাহ করেন। কিন্তু লীলাবতীর অকাল মৃত্যু হওয়ার ফলে তিনি হীরাবতীর সহিত দ্বিতীয় বিবাহ করেন। হীরাবতীর গর্ভে ৭টি পুত্র ও ১টি কন্যা জন্মগ্রহণ করে। কোহিমায় থাকাকালীন অবস্থায় তিনি অসমীয়া ভাষা উন্নতি সাধিনী সভাকোহিমা সাহিত্য সভা প্রতিষ্ঠা করেন। এই দুইটি সভার তিনি প্রতিষ্ঠাপক সম্পাদক ছিলেন। তেজপুর নর্মাল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুপে কর্মরত অবস্থায় তিনি তেজপুর অসমীয়া ভাষা উন্নতি সাধিনী সভার সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। তেজপুরে নামঘড়বাণ রঙ্গমঞ্চ স্থাপনে তার অবদান যথেষ্ট। তিনি কিছুকাল সময় অসম ব্যবস্থাপক সভার সদস্য ও তেজপুর পৌরসভার সভাপতি ছিলেন। তিনি অসম রায়ত সভা, সদৌ অসম শিক্ষক সন্মিলনী, আহোম সভা, অসম মণ্ডল কাননগো সন্মিলনী, জয়মতী উৎসব সমিতির সহিত জড়িত ছিলেন। ১৯১৮ সনে ডিব্রুগড়ে অনুষ্ঠিত অসম ছাত্র সন্মিলনীর তৃতীয় বার্ষিক অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন।

সাহিত্য চর্চা[সম্পাদনা]

পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া লক্ষীমপুরের বিদ্যালয়ে পাঠনরত সময় থেকেই সাহিত্য চর্চা করেন। ১৯৮০ সনে তিনি কলকাতায় পাঠনরত সময়ে অসমীয়া আলোচনী পত্রিকা জোনাকীর সংস্পর্শে আসেন। এই সময়ে তিনি বেনুধর রাজখোয়ার সহিত সংযুক্তভাবে বিহুগীতের গ্রন্থ ডেকা-গাভরু প্রকাশ করেন। কিন্তু এই গ্রন্থটিকে জোনাকী অশ্লীল হিসেবে মত প্রকাশ করায় তারা দুইজন ক্ষিপ্ত হয়ে জোনাকী ত্যাগ করে বিজুলী প্রকাশ করেন ও অসম লিটারেরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। বিজুলীর প্রথম সম্পাদক ছিলেন কৃষ্ণ প্রসাদ দুয়রা। কৃষ্ণ প্রসাদ দুয়রা কলকাতা ছেড়ে আসার জন্য বিজুলীর সম্পাদনার ভার পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া গ্রহণ করেন। কিন্তু ১৮৯০ সনে তিনিও কলকাতা ছেড়ে আসার জন্য বিজুলীর প্রকাশ বন্ধ হয়। ১৯০১ সনে তেজপুর থেকে প্রকাশিত হয় আসাম বন্তি। এর প্রথম সম্পাদক ছিলেন মথুরা মোহন বড়ুয়া। এর পরিচালনা ও সম্পাদনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া। ১৯৪৬ সন পর্যন্ত এইটি প্রকাশিত হয়।

অসম সাহিত্য সভা ও পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া[সম্পাদনা]

১৯১৭ সনে অসম সাহিত্য সভার জন্ম হয়। এই সভার প্রথম সভাপতি ছিলেন পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া[৪]। । ১৯১৮ সনে অনুষ্ঠিত অসম সাহিত্য সভার সম্পাদক হিসেবে তাকে নির্বাচিত করা হয়। এই সভার সভাপতি ছিলেন চন্দ্রধর বড়ুয়া।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৯৪৬ সনের ৭ এপ্রিল তারিখে পদ্মনাথ গোহাই বড়ুয়া মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "প্রবন্ধ:পদ্মনাথ গোহাঞিবরুৱা, লিখক, বাবুল তামুলী, উৎস: বিপুলজ্যোতি ডট ইন"। ১ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০১৫ 
  2. ২০০৬ র নবেম্বরত দ্যা আসাম ট্রুবিউন কাকতত প্রকাশিত প্রবন্ধ
  3. পদ্মনাথ গোহাঞিবরুৱা - অসম প্রকাশন পরিষদ
  4. ১৯১৭ চনর পরা অসম সাহিত্য সভার সভাপতিসকলর তালিকা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে অসম সাহিত্য সভার ৱেবছাইট, আহরণ: ১৮ নৱেম্বর, ২০১২।