ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি
প্রতিষ্ঠিত১৯৯৯
কেন্দ্রবিন্দুবায়োটেকনোলজি
প্রধান ব্যক্তিড. মু. সলিমুল্লাহ
(মহাপরিচালক)
স্বত্বাধিকারীবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
অবস্থান
গণকবাড়ি, আশুলিয়া, সাভার
, ,
ওয়েবসাইটhttp://www.nib.gov.bd/

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি (সংক্ষেপেঃ এনআইবি) বাংলাদেশের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান যা জীবপ্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণার পাশাপাশি সরকারকে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদানের কাজে নিয়োজিত।[১][২] এই প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার সাভারের গণকবাড়িতে অবস্থিত এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত।[৩] ১৯৯৯ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করা হয় জীবপ্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টিসহ জাতীয় পর্যায়ে জীবপ্রযুক্তির ইতিবাচক উন্নয়ন ও প্রয়োগের লক্ষ্যকে সামনে রেখে।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৮৪ সালে বাংলাদেশে জীবপ্রযুক্তি সম্পর্কিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তাব সরকারের নিকট সর্বপ্রথম পেশ করা হয় ১৯৮৪ সালে এবং ১৯৯৯ সালের ১২ মে ADP (কৃষিজ উন্নয়ন প্রকল্প)'র আওতায় ‘‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি’’ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হয় যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ২০০০ সালের ১৪ মে।[২] ২০১০ সালের ১৮ মার্চ ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি আইন, ২০১০’ গেজেটে প্রকাশিত হয় যা ঐ বছরেরই ৫ জুলাই তারিখে গেজেট প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে আইন হিসাবে বলবৎ হয়।[১]

অবস্থান[সম্পাদনা]

সাভারের গণকবাড়ীতে ১১.৫ একর জায়গায় জুড়ে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৬টি গবেষণাগার, অডিও ভিজুয়্যাল সুবিধাসম্পন্ন সেমিনার কক্ষ, প্রশিক্ষণের জন্য শ্রেণী কক্ষ, গ্রীণ হাউজ, গ্রোথ হাউজ, এনিমেল হাউজ, এনিমেল সেড, হ্যাচারী, ব্র“ড ও এক্সপেরিমেন্টাল পন্ড, এগ্রিকালচারাল প্লট, ভিজিটিং সায়েন্টিস্ট ডরমেটরী, কোয়ার্টার ইত্যাদি নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত।[২]

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য[সম্পাদনা]

এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসাবে বলা হয়েছে[১][৪] -

  1. আধুনিক জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি, পরিবেশ, চিকিৎসা ও শিল্প ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনাসহ মানবকল্যাণে এর সুফল প্রয়োগ;
  2. জীবপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরি;
  3. উদ্ভাবিত জীবপ্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ ও সহায়তা প্রদান;
  4. জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে জীবপ্রযুক্তি বিষয়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ;
  5. জেনেটিক্যালি মডিফাইড (জিএম) ফুড ও জেনেটিক্যালি মডিফাইড অর্গানিজম (জিএমও) এর মান নির্ণয়ন ও প্রত্যয়ন;
  6. বায়োসেফটি, বায়োএথিক্স ও বায়োসার্ভিলেন্স এর ক্ষেত্রে জাতীয় কমিটি অব বায়োসেফটিকে নীতিমালা প্রণয়নে সহায়তা প্রদান;
  7. স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সহিত জীবপ্রযুক্তি বিষয়ে যোগসূত্র স্থাপনপূর্বক সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ;
  8. জীবপ্রযুক্তিতে গবেষণারত বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহিত গবেষণা কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা প্রদান ও সমন্বয় সাধন;
  9. জীবপ্রযুক্তি গবেষণায় সামঞ্জস্যতা আনয়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নতি সাধন;
  10. নতুন গবেষকদের পেটেন্ট স্বত্ব প্রাপ্তিতে সহায়তা প্রদান;
  11. সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দায়িত্ব পালন;
  12. উপরিউক্ত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ।

কার্যক্রম[সম্পাদনা]

এনআইবি’র কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হলো - কৃষি, চিকিৎসা, পরিবেশ এবং শিল্প ক্ষেত্রে জীবপ্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করে উদ্ভাবিত পণ্য ও প্রক্রিয়া মাঠ পর্যায়ে স্থানান্তর করা; জীবপ্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করা; সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা; বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহে জীবপ্রযুক্তি বিষয়ে পরিচালিত গবেষণা সমূহের সমন্বয়, সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান।[৪]

এই প্রতিষ্ঠানটি ইতালীর ত্রিয়েস্তেতে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি (ICGEB)'র বাংলাদেশস্থ অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশী ছাত্র/ছাত্রী ও গবেষকদের জন্য পিএইচডি ও পোষ্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রাপ্তিতে সমন্বয়কের ভুমিকা ‌এবং দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সংক্ষেপেঃ সার্ক)'ভুক্ত দেশসমুহে জীবপ্রযুক্তি বিষয়ক সংগঠন সার্ক বায়োটেকনোলজির সহযোগী হিসাবে কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপ আয়োজন, পোষ্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ প্রদান, যৌথ গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়ন, বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীদের অভিজ্ঞতা আদান প্রদান প্রভৃতি দায়িত্ব পালন করে থাকে।[৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি আইন, ২০১০"। আইন ও সংসদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৮ মার্চ ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  2. "ইতিহাস"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৭ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  3. "১১ পদে নিয়োগ দেবে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ১ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  4. "ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৮ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  5. "প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৩ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]