ধোঁয়াশা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কলকাতা শহরে ধোঁয়াশা

ধোঁয়াশা একধরনের বায়ু দূষণ[১] "ধোঁয়াশা" শব্দটি "ধোঁয়া" ও "কুয়াশা" শব্দদুটি থেকে তৈরি করা হয়েছে। এধরনের দৃশ্যমান বায়ু দূষণে নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার অক্সাইড, ওজোন গ্যাস, ধোঁয়া ও অন্যান্য পার্টিকুলেট পদার্থ বর্তমান। মনুষ্যসৃষ্ট ধোঁয়াশা কয়লা দহন, যানবাহন, শিল্প এবং দাবানলে থেকে নির্গত দূষক এবং সেইসব দূষকের সঙ্গে আলোক-রাসায়নিক বিক্রিয়া

মনুষ্যসৃষ্ট কারণ[সম্পাদনা]

কয়লা[সম্পাদনা]

কয়লা দহনের ফলে প্রচুর ধোঁয়া উৎপন্ন হয়, যা শীতকালে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। কয়লা সাধারণত প্রত্যেক ভবনে তাপ উৎপাদন কিংবা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। মধ্যযুগ থেকেই ইংল্যান্ডে কয়লাজনিত বায়ুদূষণের কথা জানা যায়।[২][৩] বিশেষত লন্ডনের বিশ শতাব্দী পর্যন্ত কয়লাজনিত ধোঁয়াশার জন্য কুখ্যাত ছিল। এখনও পর্যন্ত ঐসব জায়গায় এধরনের বায়ু দূষণ বিদ্যমান যেসব জায়গায় কয়লা দহনের ফলে প্রচুর ধোঁয়া উৎপন্ন হয়। এটি চীনে বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ।[৪]

যানবাহন[সম্পাদনা]

ট্রাক, বাস, মোটর গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে নির্গত দূষকও ধোঁয়াশা সৃষ্টির জন্য দায়ী।[৫] যানবাহন থেকে নির্গত বায়ব দূষক কিছু বড় শহরে ধোঁয়াশা সৃষ্টির মূল উপাদান।[৬][৭][৮][৯]

প্রভাবিত এলাকা[সম্পাদনা]

ভারত[সম্পাদনা]

শরৎ ও বসন্তের সময় প্রায় ৫০ কোটি ধান ও গম শস্যের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো হয় এবং ভারতের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম থেকে পূর্বে ঝড় বাহিত হয়[১০][১১][১২] এই উপগ্রহ চিত্রে দেখানো হয়েছে কীভাবে ভারতের বার্ষিক শস্য পোড়ানোর ফলে দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ধোঁয়াশার উদ্ভব হচ্ছে।

দিল্লি[সম্পাদনা]

দিল্লির ইন্ডিয়া গেট চত্বরে ধোঁয়াশা।

ভারতের রাজধানী দিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর[১৩] এবং এক অনুমান অনুযায়ী, বায়ু দূষণের জন্য প্রতি বছর দিল্লিতে ১০,৫০০ জনের মৃত্যু হয়।[১৪][১৫][১৬] দিল্লি এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে (তথা ভারতের জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের) বায়ু দূষণের কারণে নিয়মিতভাবে ধোয়াঁশা সৃষ্টি হয়।[১৭] এই সময় বায় দূষণ পিএম ২.৫ এবং পিএম ১০ উভয় মাত্রার স্তরের উপরে ছিল। [১৮] এটি ১৯৯৯ সালের পর থেকে দিল্লিতে বায়ুগত মানের সবচেয়ে খারাপ মাত্রা হিসাবে রিপোর্ট করা হয়েছে।[১৯] কম দৃশ্যমানতা শহর জুড়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে, বিশেষ করে যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে ২৪ টি গাড়ির দুর্ঘটনা ঘটেছে। [২০]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Olga Kornienko, Grinin L, Ilyin I, Herrmann P, Korotayev A (২০১৬)। "Social and Economic Background of Blending" (পিডিএফ)Globalistics and Globalization Studies: Global Transformations and Global Future। Volgograd: Uchitel Publishing House। পৃষ্ঠা 220–225। আইএসবিএন 978-5-7057-5026-9 
  2. Chris (২০০৭)। "Environmentalism in 1306"। By Environmental Graffiti। ২৫ জুলাই ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. Karl (২০০৮)। "Environmentalism in 1306"। By Environmental Graffiti। 
  4. Heilmann, Sebastian, সম্পাদক (২০১৭)। China's Political System। Rowman & Littlefield। পৃষ্ঠা 360। ১১ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "Clearing the Air"। The Surface Transportation Policy Project। ১৯ আগস্ট ২০০৩। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০০৭ 
  6. "EPA Tools Available as Summer Smog Season Starts" (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)। Boston, Massachusetts: United States Environmental Protection Agency। ৩০ এপ্রিল ২০০৮। 
  7. "Sprawl Report 2001: Measuring Vehicle Contribution to Smog"। Sierra Club। ২০০১। ১৫ নভেম্বর ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৩ 
  8. "Smog – Causes"The Environment: A Global Challenge। ১৯ জানুয়ারি ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৩ 
  9. Smog — Who Does It Hurt? What You Need to Know About Ozone and Your Health (EPA-452/K-99-001) (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। United States Environmental Protection Agency। জুলাই ১৯৯৯। ২৮ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  10. Badarinath, K. V. S., Kumar Kharol, S., & Rani Sharma, A. (2009), Long-range transport of aerosols from agriculture crop residue burning in Indo-Gangetic Plains—a study using LIDAR, ground measurements and satellite data. Journal of Atmospheric and Solar-Terrestrial Physics, 71(1), 112–120
  11. Sharma, A. R., Kharol, S. K., Badarinath, K. V. S., & Singh, D. (2010), Impact of agriculture crop residue burning on atmospheric aerosol loading—a study over Punjab State, India. Annales Geophysicae, 28(2), pp 367–379
  12. Adler, Tina (নভেম্বর ২০১০)। "Respiratory Health: Measuring the Health Effects of Crop Burning"Environmental Health Perspectives118 (11): A475। ডিওআই:10.1289/ehp.118-a475পিএমআইডি 21465742পিএমসি 2974718অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  13. "Delhi is most polluted city in world, Beijing much better: WHO study"Hindustan Times। ৮ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৪ 
  14. "Delhi's Air Has Become a Lethal Hazard and Nobody Seems to Know What to Do About It"Time magazine। ২ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  15. "India's Air Pollution Triggers Comparisons with China"। Voice of America। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  16. "A Delhi particular"The Economist। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১২ 
  17. Sweta Goswami (৭ নভেম্বর ২০১৭)। "Delhi's worst smog yet wakes up govt, emergency measures announced"। Hindustan Times। 
  18. Express Web Desk (২ নভেম্বর ২০১৭)। "Delhi wakes up to hazardous pollution levels, reduced visibility due to smog"। Indian Express। 
  19. PTI (৮ নভেম্বর ২০১৭)। "Delhi pollution: Government issues health advisory as smog chokes city"। Hindustan Times। 
  20. "Blinding Smog Causes 24-Vehicle Pile-Up On Expressway Near Delhi"NDTV.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-০৯