ধীরুবেন প্যাটেল
ধীরুবেন প্যাটেল | |
---|---|
জন্ম | বরোদা, বরোদা রাজ্য, ব্রিটিশ রাজ (এখন বড়োদরা) | ২৯ মে ১৯২৬
মৃত্যু | ১০ মার্চ ২০২৩ আহমেদাবাদ, গুজরাট, ভারত | (বয়স ৯৬)
পেশা |
|
ভাষা | গুজরাটি |
নাগরিকত্ব | ভারতীয় |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার |
ধীরুবেন গোর্ধনভাই প্যাটেল (গুজরাটি: ધીરુબેન પટેલ; ২৯ মে ১৯২৬ - ১০ মার্চ ২০২৩) ছিলেন একজন ভারতীয় ঔপন্যাসিক, নাট্যকার এবং অনুবাদক।
জীবনী
[সম্পাদনা]ধীরুবেন গোর্ধনভাই প্যাটেল ১৯২৬ সালের ২৯ মে বরোদায় (বর্তমানে বড়োদরা, গুজরাট) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা ছিলেন বম্বে ক্রনিকলের সাংবাদিক গোর্ধনভাই প্যাটেল এবং মা ছিলেন রাজনৈতিক কর্মী ও সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সদস্য গঙ্গাবেন প্যাটেল। তাঁর পরিবার আনন্দের কাছে ধর্মজ গ্রামের আদি বাসিন্দা। তিনি মুম্বাইয়ের শহরতলী সান্তাক্রুজে বড় হয়েছেন এবং বসবাস করেছেন। তিনি মুম্বাইয়ের পোদ্দার স্কুলে শিক্ষিত হন। তিনি এলফিনস্টোন কলেজ থেকে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করেন এবং তারপর ভবনের কলেজ থেকে ১৯৪৫ সালে ইংরেজিতে বিএ ও ১৯৪৯ সালে এমএ সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৬৩ - ১৯৬৪ সালে দহিসার কলেজে ইংরেজি পড়ান এবং পরে ভারতীয় বিদ্যা ভবনে ইংরেজি সাহিত্য পড়ান।[১][২][৩]
ধীরুবেন প্যাটেল অল্প সময়ের জন্য আনন্দ পাবলিশার্সের সাথে কাজ করেছিলেন। পরবর্তীকালে, তিনি ১৯৬৩ - ১৯৬৪ সালে কল্কি প্রকাশন নামে একটি প্রকাশনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি সুধা নামে একটি গুজরাটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। পরে তিনি গুজরাট সাহিত্য সভার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০০৩ - ২০০৪ সালে গুজরাটি সাহিত্য পরিষদের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং তাঁর একটি নাটক, ভবানি ভবাই, একটি চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত হয়েছে।[৩][৪][৫]
ধীরুবেন প্যাটেল ২০২৩ সালের ১০ মার্চ ৯৬ বছর বয়সে মারা যান।[৬]
কাজ
[সম্পাদনা]ধীরুবেন প্যাটেল ছোটগল্প ও কবিতার পাশাপাশি উপন্যাস, রেডিও নাটক এবং মঞ্চ নাটকের বেশ কয়েকটি সংকলন লিখেছেন। তাঁর কাজ গান্ধীবাদী আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত ছিল। সমালোচক সুসি থারু এবং কে ললিতা লিখেছেন, "যদিও ঔপন্যাসিক কুন্দনিকা কাপাডিয়ার মতো ধীরুবেন নিজেকে নারীবাদী বলে মনে করেন না, কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন যে মহিলাদের হীন অবস্থার মূল কারণ তাদের নিজস্ব মানসিক অবস্থার মধ্যে রয়েছে।"[৪] ধীরুবেনের প্রথম দিকের কাজগুলি, মহিলাদের জীবন এবং তাদের সম্পর্কের সাথে বিশেষ করে জড়িত, এবং যাকে থারু ও ললিতা "আত্ম সন্ধান" হিসাবে বর্ণনা করেছেন।[৪] তাঁর পরবর্তী কাজ প্রাথমিকভাবে শিশু এবং অল্প বয়স্কদের জন্য, এবং ইন্টারনেটে তথ্যের সহজলভ্যতা সত্ত্বেও তিনি শিশুদের জন্য সাহিত্যের পক্ষে ছিলেন।[৭]
ধীরুবেন প্যাটেল প্রথমে গুজরাটি ভাষায় লিখতেন। ২০১১ সালে, তাঁর উপন্যাস আগন্তুক ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন রাজ সুপে, নাম দিয়েছিলেন রেইনবো অ্যাট নুন। একটি সাক্ষাৎকারে, ধীরুবেন প্যাটেল বলেছিলেন যে তিনি সুপেকে এটি অনুবাদ করতে দিতে রাজি হয়েছেন কারণ "... তিনি আমার নায়ক এবং তার সংগ্রাম বুঝতে পারবেন কারণ তিনি একই পথে ভ্রমণ করেছেন।"[৮] একটি সাম্প্রতিক কবিতার সংকলন, কিচেন পোয়েমস তিনি ইংরেজিতে লিখেছিলেন এবং ২০০২ সালে নীমরানা সাহিত্য উৎসবে তিনি প্রথম সেটি আবৃত্তি করেছিলেন। এগুলি পরে প্রকাশিত হয়। তারপরে পিটার ডি ও'নিল এটি জার্মান ভাষায় এবং উষা মেহতা মারাঠি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন।[৯] তারপরে ধীরুবেন প্যাটেল নিজে এই কবিতাগুলি কিচেন পোয়েমস (২০১৬) নাম দিয়ে গুজরাটি ভাষায় অনুবাদ করেন।[১০]
তাঁর উপন্যাস এবং উপন্যাসিকার মধ্যে রয়েছে:
- ভাদাভানাল (১৯৬৩)
- ভাসনো অঙ্কুর (১৯৬৭)
- ভাভানটোল (১৯৭০)
- সিমলা না ফুল (১৯৭৬)
- এক ভাল মানস (১৯৭৯)
- ভামাল (১৯৮০)
- অন্ধালি গলি (১৯৮৩)
- গগন্না লগান (১৯৮৪)
- কাদম্বরিণী মা (১৯৮৮)
- এক ফুল গুলাবি ভাত (১৯৯০)
- এক ডাল মিঠি (১৯৯২)
- হুতাশন (১৯৯৩)
- আগন্তুক (১৯৯৬)।[৩]
- সংশয়বীজ (১৯৯৮)
- পেয়িং গেস্ট (১৯৯৮)
- অতীতরাগ (২০০০)
- অন্ধালি গলি (১৯৮৩) একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস, যেটি কুন্দন নামে একজন মহিলার জীবনের অন্তরমহলে ঝুঁকে দেখে, যে মহিলা পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।[১১]
তাঁর ছোটগল্প সংকলন
- আধুরো কল (১৯৫৫)
- এক লহর (১৯৫৭)
- বিশ্রম্ভকথা (১৯৬৬)
- তাঢ় (১৯৭৬)
- জাভাল (২০০১)[৩]
- ধীরুবেন নি টুঙ্কি বার্তাও (২০১৯)
কিচেন পোয়েমস (২০১১) হল ইংরেজিতে কবিতার সংকলন এবং ২০১৬ সালে গুজরাটি ভাষায় তিনি নিজেই অনুবাদ করেছিলেন।
তাঁর নাটকের মধ্যে রয়েছে পহেলুন ইনাম (১৯৫৫), পাখিনো মালো (১৯৫৬), বিনাশ পন্থে (১৯৬১), মান্নো মানেলো (১৯৫৯), এবং আকাশ মঞ্চ (২০০৫)। নামানি নাগারভেল (১৯৬১) এবং মায়াপুরুষ (১৯৯৫) হলো যথাক্রমে তাঁর একক নাটক এবং রেডিও নাটকের সংগ্রহ।[৩]
ধীরুবেন প্যাটেল হাস্যরসও লিখেছেন, যার মধ্যে রয়েছে পরদুখভঞ্জক পেস্টনজি (১৯৭৮), এটি পেস্টনজি চরিত্রের হাস্যকর দুঃসাহসিক গল্পের সংকলন, গগন্না লগান (১৯৮৪), কার্তিক আনে বিজা বাধা (১৯৮৮), তাঁর হাস্যরসাত্মক প্রবন্ধের সংকলন, এবং কার্তিক রং কথা (১৯৯০)।[৩]
ধীরুবেন প্যাটেল শিশু সাহিত্যে অবদান রেখেছেন। তিনি শিশু গল্পের সংকলন, কিশোর বার্তা সংগ্রহ (২০০২), এবং ছোট শিশুদের জন্য কবিতা, মিত্র না জোড়াকনা (১৯৭৩) লিখেছেন। আন্দেরি গেণ্ডারি টিপরি টেন তাঁর একটি শিশুদের নাটক।[১২] তিনি মার্ক টোয়েনের উপন্যাস দি অ্যাডভেঞ্চার্স অব টম সয়্যার দুটি অংশে (১৯৬০, ১৯৬৬) এবং ১৯৬৭ সালে অ্যাডভেঞ্চারস অফ হাকলবেরি ফিন অনুবাদ করেন।[৩]
ধীরুবেন না নির্বন্ধ নিবন্ধ হল প্রবন্ধের সংকলন, আর চোরাস টিপু হল শিশুদের গল্পের সংকলন যার মধ্যে রয়েছে:
- গাদা নে পয়দা জেভদা রোতলা নি কথা
- কাকু মাকু আনে পুছদি নি পঞ্চাত
- কিনু কানখাজুরো
- মিনু নি মোজাদি
- ডাক্তারের ফি নেই
- বুদবুদসলক আনে ত্রিমত্রমধাদক
পুরস্কার
[সম্পাদনা]ধীরুবেন প্যাটেল ১৯৮০ সালে রঞ্জিতরাম সুবর্ণ চন্দ্রক পুরস্কার পান। তিনি ১৯৮১ সালে কে এম মুন্সি সুবর্ণ চন্দ্রক পুরস্কার এবং ২০০২ সালে গুজরাট সাহিত্য অকাদেমি দ্বারা সাহিত্য গৌরব পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে নন্দশঙ্কর সুবর্ণ চন্দ্রক পুরস্কার এবং দর্শন পুরস্কার পান। তিনি তাঁর উপন্যাস আগন্তুকের জন্য গুজরাটি ভাষায় ২০০১ সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার জিতেছিলেন।[১][৩][১৩]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Vyas, Daksha। "સાહિત્યસર્જક: ધીરુબેન પટેલ" (গুজরাটি ভাষায়)। Gujarati Sahitya Parishad।
- ↑ Raikar-Mhatre, Sumedha (৯ জুলাই ২০১৪)। "'Older people deserve their space, which is often denied to them,' noted writer Dhiruben Patel"। Mid-Day। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ Brahmabhatt, Prasad (২০১০)। અર્વાચીન ગુજરાતી સાહિત્યનો ઈતિહાસ - આધુનિક અને અનુઆધુનિક યુગ (History of Modern Gujarati Literature – Modern and Postmodern Era) (গুজরাটি ভাষায়)। Parshwa Publication। পৃষ্ঠা 248–251। আইএসবিএন 978-93-5108-247-7।
- ↑ ক খ গ Tharu, Susie, Ke Lalita and (১৯৯৩)। "Dhiruben Patel" in Women Writing in India vol 1। Feminist Press at CUNY। পৃষ্ঠা 224–226। আইএসবিএন 9781558610293।
- ↑ "Dhiruben Patel"। Muse India। ১৫ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১১।
- ↑ "ગુજરાતી સાહિત્યને મોટી ખોટ, સાહિત્યકાર ધીરુબેન પટેલનું 97 વર્ષની વયે અવસાન"। Gujarati Midday। ১০ মার্চ ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০২৩।
- ↑ Iyer, Aruna V (১৬ মে ২০১১)। "Foray into English"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ Kulkarni, Reshma S (৪ জুলাই ২০১১)। "Wonder Women all write"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ Raikar-Mhatre, Sumedha (১৪ অক্টোবর ২০১২)। "Kitchen Confidential"। Pune Mirror। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Kitchen Poems Gujarati Book (Paperback, Gujarati, Dhiruben Patel)"। Flipkart। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০২৪।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Basiya, Rajesh V. (জুন ২০১২)। "Dhiruben Patel's Aandhali Gali: a Psychoanalytical Insight into the Emotions of a Woman": 321। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৯ – Academic Onefile-এর মাধ্যমে। (সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
- ↑ "Interview With Utkarsh Mazumdar Interview With Jahnavi Pal : www.MumbaiTheatreGuide.com"। www.mumbaitheatreguide.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০১।
- ↑ "Sanskrit Sahitya Akademi Awards 1955-2007"। Sahitya Akademi Official website। ৩১ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
পুরস্কার | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী বিনেশ আন্তানি |
গুজরাটির জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার বিজয়ী ২০০১ |
উত্তরসূরী ধ্রুব ভট্ট |