দুলাল মানকি
দুলাল মানকি | |
---|---|
জন্ম | ১৯৬৪[১] ধয়েদাম চাহ বাগিচা, তিনসুকিয়া জেলা, আসাম |
পরিচিতির কারণ | ঝুমুর গান |
পিতা-মাতা | মথুৰ চন্দ্ৰ মানকি (পিতৃ) যশোদা মানকি (মাতৃ) |
পুরস্কার | শ্ৰেষ্ঠ নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী, প্ৰাগ চিনে বঁটা, ২০০৯ পদ্মশ্রী, ২০২১[২] |
দুলাল মানকি (ইংরেজি: Dulal Manki , জন্ম: ১৯৬৪) একজন অসমীয় লোক শিল্পী এবং সঙ্গীতজ্ঞ। তিনি চা উপজাতির ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীতশিল্পী। ঝুমুর গান গাওয়ার বিশেষ দক্ষতার জন্য তিনি ঝুমার সম্রাট হিসেবে পরিচিত। ২০২১ সালে, ভারত সরকার তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী প্রদান করে।[৩]
যৌবন এবং শিক্ষা
[সম্পাদনা]দুলাল মানকি ১৯৬৪ সালে তিনসুকিয়া জেলার দুমডুমার কাছে ধেয়েদাম চা বাগানে জন্মগ্রহণ করেন।[৪] ওনার পিতার নাম মথুর চন্দ্র মানকি এবং মাতা যশোদা মানকি। মথুর চন্দ্র মানকি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছিলেন। এরপর চাকরি ছেড়ে চা বাগানে কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন এবং ধেয়েদাম চা বাগানের কাছে বারসাপজানের কেচুগুড়ি গ্রামে স্থায়ী হন। তাদের চার ছেলে ও তিন মেয়ে।
দুলাল মানকি প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন ধেয়েদাম টি এস্টেট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর তিনি বর্ষপজান উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষ করার পর, তিনি ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ডুমডুমা কলেজে ভর্তি হন। ১৯৮০-এর দশকে আসাম আন্দোলনের সময় অস্থিরতার মধ্য দিয়ে তিনি তার পড়াশোনা শেষ করেছিলেন।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]দুলাল মানকি একটি সঙ্গীত পরিবারে জন্ম হন। তার বাবা ছিলেন একজন লোকসঙ্গীতশিল্পী এবং চা উপজাতির ঐতিহ্যবাহী গানের একজন ওস্তাদ। তিনি তার পিতার কাছ থেকে প্রাথমিক সঙ্গীত শিক্ষা লাভ করেন। তিনি যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছিলেন, তখন তাঁর শিক্ষক কমল চন্দ্র পদুম তাঁকে একটি বেঞ্চে দাঁড় করিয়ে গান শোনাতেন।[১] তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং শিক্ষকদের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে তিনি সঙ্গীতে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর তিনি গুরু মুনীন্দ্র দেবের কাছ থেকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেন।
১৯৭৬ সালে, তিনি আকাশবাণী ডিব্রুগড়ের 'চা শ্রমিকদের আচার' অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রিত হন। ১৯৮২ সালে, তিনি 'চা উপজাতির লোকগান' শিরোনামে চা উপজাতির লোকগানের একটি সংকলন তৈরি করেছিলেন। এটি ছিল ভূপেন উজি পরিচালিত তাঁর প্রথম বাণীবন্ধন। এরপর বেশ কিছু গান গেয়েছেন তিনি।[১]
২০২৩ সালে, তিনি অঙ্গরাগ মোহান্তি এবং সীমান্ত শেখরের সাথে এমটিভি কোক স্টুডিও সিজন ৩-এ জনপ্রিয় গান 'ঝুমুর - কি টোকে বান্ধি দেলাই' অংশগ্রহণ করেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পবন সিং ঘটোরের পৃষ্ঠপোষকতায় মারানে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় করম পূজা অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে ঝুমুর গান উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
ব্যক্তিগত বেপার
[সম্পাদনা]দুলাল মানকি ৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ তারিখে শিবসাগর জেলার নাজিরার নিমা মানকির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]আসামের চা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীতের ক্ষেত্রে অবদানের জন্য দুলাল মানকি অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- শ্রীমন্ত শঙ্করদেব: শ্রেষ্ঠ পটভূমি গায়ক, প্রাগ সিনে পুরস্কার
- 'ঝুমুর গুরু', ইস্টার্ন মার্জিনাল কালচারাল সেন্টার, কলকাতা, ২০১০[১]
- ডাঃ উপেন্দ্র কাকতি[৪] ,
- সাংস্কৃতিক আইকন পুরস্কার, এপিপিএল ফাউন্ডেশন, ২০১৮[৪]
- পদ্মশ্রী, ২০২১[৫]
তথ্য সূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ "Interview with Jhumur Samrat Dulal Manki"। myindiamyglory.com। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "Padma Awards 2021 announced"। Ministry of Home Affairs। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "Shinzo Abe, Tarun Gogoi, Ram Vilas Paswan among Padma Award winners: Complete list"। The Times of India। ২৫ জানুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ ক খ গ "Icon Awards 2018"। applfoundation.in। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "দুলাল মানকীক পদ্মশ্ৰী, মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সোনোৱাললৈ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন আটছাৰ"। জনমভূমি। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০২১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]