থিয়েটিন গির্জা
থিয়েটিন গির্জা | |
---|---|
সেন্ট কাইতানের থিয়েটিন গির্জা | |
ডোমিনিকান প্রায়রি অব সেন্ট কাইতান | |
জার্মান: Theatinerkirche St. Kajetan | |
৪৮°০৮′৩১″ উত্তর ১১°৩৪′৩৫″ পূর্ব / ৪৮.১৪১৯৪° উত্তর ১১.৫৭৬৩৯° পূর্ব | |
অবস্থান | সালভাতোরপ্লাৎজ 2a মিউনিখ, বাভারিয়া |
দেশ | জার্মানি |
মণ্ডলী | রোমান ক্যাথলিক |
ওয়েবসাইট | theatinerkirche |
ইতিহাস | |
যার জন্য উৎসর্গিত | সেন্ট কাইতান |
স্থাপত্য | |
মর্যাদা | পেরিশ গির্জা |
সক্রিয়তা | সক্রিয় |
শৈলী | বারুক |
নির্মাণের বছর | ১৬৬৩-১৬৬৮ ১৬৭৬-১৬৯০ (টাওয়ার) ১৭৬৫-১৭৬৮ (ফাসাদ) |
বৈশিষ্ট্য | |
ধারণক্ষমতা | ৪০০[১] |
দৈর্ঘ্য | ৭২ মিটার (২৩৬ ফু) |
প্রস্থ | ১৫.৫ মিটার (৫১ ফু)[১] |
গম্বুজের সংখ্যা | ১ |
গম্বুজের ব্যাস (বহিঃভাগ) | ১৭.৭ মিটার (৫৮ ফু) |
গির্জা বুরূজের সংখ্যা | ২ |
গির্জা বুরূজের উচ্চতা | ৬৪.৬ মিটার (২১২ ফু)[১] |
প্রশাসন | |
মহাধর্মপাল রাজ্য | মিউনিখ ও ফ্রেসিন |
প্রদেশ | বাভারিয়া |
যাজকমণ্ডলী | |
যাজক | পূর্বে ডক্টর ক্লাউস ওবামাইয়ার ওপি |
যাজকমণ্ডলী বহির্ভূত সদস্যবৃন্দ | |
সঙ্গীত পরিচালক | রবার্ট পি মেলহার্ট ওপি |
সেন্ট কাইতানের থিয়েটিন গির্জা (জার্মান: Theatinerkirche St. Kajetan) দক্ষিণ জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের মিউনিখ শহরে অবস্থিত ক্যাথলিক গির্জা। ১৬৬৩ থেকে ১৬৯০ সালের মধ্যে বাভারিয়ার নির্বাচক ফার্দিনাান্দ মারিয়া ও তার স্ত্রী হেনরিয়েটা এই গির্জা নির্মাণ করেন। ১৬৬২ সালে বাভারিয়ার উত্তরাধিকারী যুবরাজ ম্যাক্স ইমানুয়েলের জন্মের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এই দষ্পতি গির্জাটি নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে এই গির্জা ডোমিনিকার ফ্রাইয়ার কর্তৃক পরিচালিত হয়, যা ডোমিনিকান প্রায়রি অব সেন্ট কাইতান নামেও পরিচিত।
গির্জাটি ইতালিয় উচ্চ-বারুক শৈলীতে নির্মিত, যেটি রোমের সেন্ট আন্দ্রিয়ে ডেলা ভেল থেকে অনুপ্রাণিত। ইতালিয় স্থপতি আগস্টিনো বেরেলি গির্জার স্থপতি ছিলেন। তার উত্তরসুরি এনরিকো জুকালি দুইটি ৬৬ মিটার উঁচু টাওয়ার গির্জায় স্থাপন করেন, যেগুলি এর নির্মাণ পরিকল্পনার অংশ ছিল না। এরপর ১৬৯০ সালে ৭১-মিটার (২৩৩ ফু) উঁচু গম্বুজ নির্মিত হয়। গির্জাটি ৭২ মিটার (২৩৬ ফু) দীর্ঘ এবং ১৫.৫ মিটার (৫১ ফু) প্রশস্ত। রোকোকো শৈলীর ফাসাদ ১৭৬৮ সালে ফ্রাঙ্কো দা জুভিলি নির্মাণ সম্পন্ন করেন। গির্জাটির ভূমধ্যসাগরীয় রূপ এবং হলুদ রঙ শহরের পরিচিত প্রতীক হয়ে উঠেছে, যা দক্ষিণ জার্মানির বারুক স্থাপত্যে প্রভাব বিস্তার করছে।
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]১৬৬২ সালের ১১ জুলাই যুবরাজ ও পরবর্তীতে নির্বাচক ম্যাক্স ইমানুয়েলের জন্মের পর বোগোলা থেকে আগস্টিনো বেরেলি গির্জা নির্মাণের নির্দেশ লাভ করেন। ১৬৬৩ সালের ২৯ এপ্রিল এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। বেরেলি রোমের সেন্ট আন্দ্রিয়ে ডেলা ভেলকে থিয়েটিন গির্জা নির্মাণের সময় মডেল হিসেবে গ্রহণ করেন। শেলের নির্মাণ কাজ চলার সময় বেরেলির সাথে সাইট ব্যবস্থাপক অ্যান্টনিও স্পিনেলি এবং হেনরিয়েটের থিয়েটিন ও ফাদার কনফেসরের সাথে উত্তপ্ত বাকবিতন্ডার ফলে বেরেলির পদচ্যুতি ঘটে। এরপরও বেরেলি ১৬৭৪ সাল পর্যন্ত শেলের কাজ চালিয়ে যান এবং এরপর মিউনিখ ত্যাগ করেন। একই বছর এনরিকো জুকালি এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি মূলত বাইরের দিকের নির্মাণ কাজের উপর জোর দেন। গম্বুজ ও টাওয়ারের আকার জুকালি ঠিক করেছিলেন।
একই সময় জুকালি গির্জার ভেতরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেন। এছাড়াও ১৬৭৪ সালে জিওভান্নি নিকোলো পেরটি, আন্তোনিও ভিসকারডি ও আব্রাহাম লিওথনার এখানে স্টুকোর কাজ শুরু করেন। গির্জার অভ্যন্তর অংশে নিকোলো পেট্র্রি (১৬৮৫-১৬৮৮) কর্তৃক সমৃদ্ধ স্টুকো শিল্পকর্ম রয়েছে। পাশাপাশি উলফগ্যাং ল্যুথার স্টুকো আকারের জন্য দ্বায়িত্ববদ্ধ ছিলেন। বৃহৎ কালো উচু মঞ্চটি আন্দ্রেস ফেইস্টনবার্গার (১৬৮৬) নির্মাণ করেছেন। বেদিতে গ্যাস্পার দে ক্রায়ার, কার্লো সিগনানি, জর্জ ডেসমারিস এবং জয়াকিম ভন সান্ডরার্টের চিত্রকর্ম রয়েছে। বেদির জন্য ১৭২২ সালে আবলেইথনার চারজন সুসমাচার প্রচারকের (এভাঞ্জেলিস্ট) মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন, যার মধ্যে সেন্ট মার্কাস এবং সেন্ট জনের মূর্তি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসস্তূপে বেঁচে গেছিলো।
১৬৭৫ সালের ১১ জুন গির্জাটি উন্মুক্ত হয়। চূড়ান্তভাবে ফাসাদটি নির্মাণের দীর্ঘ আলোচনার কোনো ফলাফল না পাওয়ায় জুকালি ১৬৮৪ থেকে ১৬৯২ সালের মধ্যে টাওয়ার দুইটি নির্মাণ করেন। ১৬৮৮ সালে ভেতরের কাজ শেষ হয়। ১৬৯২ সাল থেকে শুরু করে নির্মাণ শেষ হওয়া পর্যন্ত ভিসকার্ডি সাইট ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেন। ১৬৭৬ সালে হেনরিয়েটা মারা যাবার কারণে তিনি গির্জার নির্মাণ সম্পন্ন হওয়া দেখে যেতে পারেন নি।
দীর্ঘ আলোচনার পরও কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া না যাওয়ায় ফাসাদের বাইরের অংশ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। নির্মাণের প্রায় ১০০ বছর পর ১৭৬৫ সালে রোকোকো রীতিতে ফ্রাঙ্কো দা জুভিলি ফাসাদের নকশা প্রনয়ন করেন। তার পুত্র ফ্রাঙ্কো দা জিভিলি দ্য জুনিয়র এটি সম্পন্ন করেন।
উঠানোর নির্মাণ জুকালির পাণ্ডুলিপি অনুযায়ী সম্পন্ন হয়। গির্জা ও এর উঠান মিলে একটি বৃহৎ আয়তক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে।
১৮১৭ সালে শোয়াবিঞ্জার ফটক ভেঙ্গে যাওয়ার পর থিয়েটিন গির্জা গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যমান স্থান হয়ে উঠে। থিয়েটিন গির্জার সাথে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য গির্জার কৌণিক বিপরীতে অবস্থিত ল্যুদভিগ গির্জায় দুইটি টাওয়ার নির্মিত হয়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৮শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত পেস্টর ও পন্ডিতদের কাছে থিয়েটিন গির্জা জনপ্রিয়তা লাভ করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় নির্বাচক চতুর্থ ম্যাক্স জোসেফ (পরবর্তীতে রাজা প্রথম ম্যাক্স জোসেফ) ১৮০১ সালের ২৬ অক্টোবর গির্জাটি বন্ধ করে দেন। তবে থিয়েটিন গির্জা কলেজিয়েট গির্জা, কোর্ট গির্জা ও কনভেন্ট হিসেবে চালু ছিল। ১৭৯৯ সালে পররাষ্ট্র বিভাগ থিয়েটিন গির্জায় স্থানান্তরিত হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, বিশেষত ১৯৪৪/৪৫ সালে গির্জায় বোমাবর্ষণ করা হয়। ফলে গির্জার পশ্চিম অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। ১৯৪৬ সালে এর পুননির্মাণ শুরু হয় এবং ১৯৫৫ সালে নির্মাণ অনেকাংশে শেষ হয়। ১৯৭৩ সালে গির্জার নির্মাণ সম্পন্ন হয়। ২০০১ সাল থেকে সংস্কার কার্যের ফলে থিয়েটিন গির্জার রূপ পরিবর্তন হয়।
অর্গান
[সম্পাদনা]গির্জার তিনটি অর্গান রয়েছে। মূল অর্গানটি বেদির পেছনে অবস্থিত। এছাড়াও আরো দুইটি অর্গান রয়েছে যার একটি ১৯৮৬ সালের তথা গির্জার নির্মাণের সময়কার।[২] বিশ্বযুদ্ধের সময় বোমার আঘাতে অর্গানটিরও ক্ষতি হয়েছিল। ১৯৫০ সালে স্থানীয় অর্গান নির্মাতা কার্ল শোস্টার তা পুনঃনির্মাণ করেন।[২]
সমাধি
[সম্পাদনা]থিয়েটিন গির্জায় বাভারিয়ার রাজা দ্বিতীয় ম্যাক্সিমিলিয়ান ও তার স্ত্রী রাণী মারিয়ার সমাধি রয়েছে। এছাড়া এখানে রয়েছে রাজপুত্র ও বাভারিয়ার রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সমাধি রয়েছে:
- সভয়ের রাজকন্যা হেনরিয়েট অ্যাডিলেড
- ফেরদিনান্দ মারিয়া, বাভারিয়ার নির্বাচক, (শাসনকাল ১৬৫১-১৬৭৯)
- দ্বিতীয় ম্যাক্সিমিলিয়ান ইমানুয়েল, বাভারিয়ার নির্বাচক, (শাসনকাল ১৬৭৯-১৭২৬)
- সপ্তম চার্লস, পবিত্র রোমান সম্রাট, (শাসনকাল ১৭২৬-১৭৪৫)
- তৃতীয় ম্যাক্সিমিলিয়ান, বাভারিয়ার নির্বাচক, (শাসনকাল ১৭৪৫-১৭৭৭)
- চার্লস থিওডোর, বাভারিয়ার নির্বাচক, (শাসনকাল ১৭৭৭-১৭৯৯)
- রাজা বাভারিয়ার প্রথম ম্যাক্সিমিলিয়ান জোসেফ, (শাসনকাল ১৭৯৯-১৮২৫)
- রাজা গ্রিসের অটো, (শাসনকাল. ১৮৩২-১৮৬২)
- লুইটপোল্ড, বাভারিয়ার যুবরাজ রিজেন্ট, (শাসনকাল ১৮৮৬-১৯১২)
- বাভারিয়ার রাজকন্য আলেক্সান্দ্রা
- রুপার্ট, বাভারিয়ার যুবরাজ
- বাভারিয়ার ডাচেস মারিয়া আনা জোসেফ
- বাভারিয়ায় ডাচেস মারি গাব্রিয়েলা
- বাভারিয়ার যুবরাজ হাইনরিখ
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ "Kirche – Zur Einstimmung (Church – Introduction"। theatinerkirche.de।
- ↑ ক খ "Informationen zu den Orgeln in der Theatinerkirche (Information about the organs in Theatine Church)" (German ভাষায়)। theatinerkirche.de।