ট্যুকোনীয় জগৎ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এই ছবিতে ট্যুকোনীয় জগতের মডেল দেখানো হয়েছে। এতে নীল কক্ষপথের বস্তুগুলো (চাঁদ ও সূর্য) পৃথিবীকে আবর্তন করে, কমলা কক্ষপথের বস্তুগুলো (বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি) সূর্যকে আবর্তন করে, গাঢ় নীল রং দিয়ে স্থির খ-গোলক দেখানো হয়েছে যেখানে তারাদের অবস্থান, এই খ-গোলকও পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তন করে।

ট্যুকোনীয় জগৎ (ইংরেজি ভাষায়: Tychonian system) বলতে সৌরজগতের একটি মডেলকে বোঝানো হয় যা ডেনীয় জ্যোতির্বিদ ট্যুকো ব্রাহে ১৬শ শতকের শেষ দিকে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি এই মডেলের মাধ্যমে কোপের্নিকুসের সৌরকেন্দ্রিক মডেলের গাণিতিক বা জ্যামিতিক সুবিধা এবং টলেমির ভূকেন্দ্রিক মডেলের দার্শনিক বা ভৌত সুবিধা একত্রিত করেন। মডেলটি জার্মান গণিতবিদ, জ্যোতির্বিদ ও জ্যোতিষী ফালেন্টিন নাবোট[১] এবং সাইলেশীয় গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ পাউল ভিটিশ[২] পূর্বতন গবেষণা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে থাকতে পারে। এছাড়া ট্যুকোনীয় মডেলের কাছাকাছি একটি ভূসৌরকেন্দ্রিক মডেল ভারতের কেরালা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত জ্যোতির্বিদ্যা ও গণিতের বিদ্যালয়ে জ্যোতির্বিদ Nilakantha Somayaji প্রস্তাব করেছিলেন।[৩][৪]

ট্যুকোনীয় জগৎ একদিক দিয়ে একটি ভূকেন্দ্রিক মডেল, কারণ এতে পৃথিবীকেই মহাবিশ্বের কেন্দ্র বিবেচনা করা হয়। সূর্য, চাঁদ এবং খ-গোলকের সকল স্থির তারা পৃথিবীকে কেন্দ্র করেই আবর্তন করে। কিন্তু বাকি পাঁচটি গ্রহ আবর্তন করে সূর্যকে। এটা দেখানো সম্ভব যে, ট্যুকোনীয় মডেলে পৃথিবীর সাপেক্ষে সূর্য এবং অন্যান্য গ্রহগুলোর গতি প্রায় সৌরকেন্দ্রিক মডেলের মতোই।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Westman, Robert S. (1975), The Copernican achievement, প্রকাশক: University of California Press। পৃ. 322। আইএসবিএন 9780520028777। OCLC 164221945
  2. Owen Gingerich, The Book Nobody Read: Chasing the Revolutions of Nicolaus Copernicus, Penguin, আইএসবিএন ০-১৪-৩০৩৪৭৬-৬
  3. Ramasubramanian, K. (1994), "Modification of the earlier Indian planetary theory by the Kerala astronomers (c. 1500 AD) and the implied heliocentric picture of planetary motion", Current Science 66: 784–90
  4. Joseph, George G. (2000), The Crest of the Peacock: Non-European Roots of Mathematics, p. 408, Princeton University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৬৯১-০০৬৫৯-৮