চান্দ্রজল
চান্দ্রজল (ইংরেজি: Lunar water) বলা হয় চাঁদে উপস্থিত জলকে। তরল জল চন্দ্রপৃষ্ঠে টিকে থাকতে পারে না, এবং জলীয় বাষ্প সূর্যালোক দ্বারা শোষিত হয়ে মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যায়। যদিও ১৯৬০-এর দশক থেকে বিজ্ঞানীরা অনুমান করে এসেছেন যে চাঁদের মেরুপ্রদেশের চিরঅন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলের শীতল পরিবেশে জলীয় বরফ থাকা সম্ভব।
জল ও রাসায়নিক সম্পর্কযুক্ত হাইড্রক্সিল গ্রুপও ( • OH) অন্যান্য চান্দ্র খনিজের (মুক্ত জল ছাড়া) রাসায়নিকভাবে আবদ্ধ অবস্থায় অবস্থান করতে পারে। তথ্যপ্রমাণ থেকে অনুমান করা হয় চন্দ্রপৃষ্ঠের কম ঘনত্বের (low concentrations) অঞ্চলগুলিতে তা-ই ঘটেছে।[১] সন্ধানপ্রাপ্ত ঘনত্বের (trace concentrations) মধ্যে শোষিত জল (absorbed water) পাওয়া গিয়েছে প্রতি মিলিয়নে ১০০০ অংশের মধ্যে ১০ অংশ।[২]
বিভিন্ন পর্যবেক্ষণে চাঁদে যে বদ্ধ হাইড্রোজেন (bound hydrogen) পাওয়া গেছে, তা থেকেই চাঁদে জলীয় বরফের অস্তিত্ব অনুমান করা হয়েছে। তবে এই অনুমান প্রশ্নাতীত নয়। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের চন্দ্রযান-১ চাঁদে জল ও সূর্যালোকে প্রতিবিম্বিত হাইড্রক্সিল শোষক রেখা (absorption line) নির্দেশ করে। যার উপর ভিত্তি করে নাসার এলসিআরওএসএস মিশন একটি চিরঅন্ধকারাচ্ছন্ন মেরুগহ্বরের উপর তাদের ইমপ্যাক্টর উড়িয়ে একটি বস্তুপুঞ্জের মধ্যে অন্তত ১০০ কিলোগ্রাম জলের সন্ধান পায়।[৩][৪][৫][৬][৭]
সম্ভবত বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক সময়পর্বে জলবাহী ধূমকেতু, গ্রহাণু ও উল্কাপিন্ডের নিয়মিত সংঘাতের ফলে চাঁদে জল এসেছে। অথবা অক্সিজেন-বাহী খনিজের সঙ্গে সৌরবায়ুর হাইড্রোজেন আয়নের (ফোটন)) সংঘাতের ফলে অবিরত জল সৃষ্টিও সম্ভব।[৮]
চাঁদে জলের সন্ধানের যে অনুসন্ধান চলেছে তা নিয়ে কৌতূহলও যথেষ্টই রয়েছে। এই অনুসন্ধানের জন্য একাধিকবার চন্দ্রাভিযানও চালানো হয়েছে। এর কারণ হল, চাঁদের দীর্ঘস্থায়ী বসতি স্থাপনে জলের প্রয়োজনীয়তা।
পাদটীকা
[সম্পাদনা]- ↑ Lucey, Paul G. (২৩ অক্টোবর ২০০৯)। "A Lunar Waterworld"। Science। 326 (5952): 531–532। ডিওআই:10.1126/science.1181471। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-১৮।
- ↑ Clark, Roger N. (২৩ অক্টোবর ২০০৯)। "Detection of Adsorbed Water and Hydroxyl on the Moon"। Science। 326 (5952): 562–564। ডিওআই:10.1126/science.1178105। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-২০।
- ↑ Lakdawalla, Emily (১৩ নভেম্বর ২০০৯)। "LCROSS Lunar Impactor Mission: "Yes, We Found Water!""। The Planetary Society। ২২ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১০।
- ↑ "Character and Spatial Distribution of OH/H2O on the Surface of the Moon Seen by M3 on Chandrayaan-1"। Science। 326 (5952): 568। ২০০৯।
- ↑ Dino, Jonas (নভেম্বর ১৩, ২০০৯)। "LCROSS Impact Data Indicates Water on Moon"। NASA। জানুয়ারি ১১, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-১৪।
- ↑ "Character and Spatial Distribution of OH/H2O on the Surface of the Moon Seen by M3 on Chandrayaan-1"। Science। 326. (5952): 568–572। ২৩ অক্টোবর ২০০৯। ডিওআই:10.1126/science.1178658। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-২০।
- ↑ "Ice deposits found at Moon's pole", BBC News, 2 March 2010
- ↑ "NASA - Lunar Prospector"। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১০।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Ice on the Moon — NASA Goddard Space Flight Center
- Fluxes of fast and epithermal neutrons from Lunar Prospector: Evidence for water ice at the lunar poles — Science
- Moon has a litre of water for every tonne of soil আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ১৬ জুলাই ২০১১ তারিখে — Times Online
- Unambiguous evidence of water on the Moon — Slashdot Science Story