চণ্ডীচরণ সেন
চণ্ডীচরণ সেন (জন্ম: ২৭ জানুয়ারি ১৮৪৫ - মৃত্যু: ১০ জুন ১৯০৬) একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক ও অনুবাদক। তিনি মূলত দেশপ্রেমভিত্তিক উপন্যাসের জন্য বিখ্যাত।
প্রথম জীবন
[সম্পাদনা]চণ্ডীচরণ সেন পূর্ববঙ্গের বাখরগঞ্জ জেলার বাসণ্ডা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নিমচাঁদ সেন ও মাতা গৌরী দেবী।[১][২]
তিনি ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে বরিশাল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স পাস করে কলকাতায় ফ্রি চার্চ ইন্স্টিটিউশনে (ডাফ কলেজ) কিছুদিন অধ্যয়ন করেন। কিন্তু অসুস্থতার জন্য বরিশাল ফিরে যান। পরে ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় এসে গৃহশিক্ষকতা করে আইন পরীক্ষা পাস করেন।[২]
ছাত্রাবস্থায় তিনি রামতনু লাহিড়ী, দুর্গামোহন দাস প্রভৃতি ব্রাহ্ম নেতাদের সংস্পর্শে আসেন।[২]
তিনি পঁচিশ বছর বয়সে ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দে বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর কাছে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন।[২]
তিনি কিছুদিন বরিশালে আইন ব্যবসা করেন। ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দে সরকারী কর্মচারী হিসাবে প্রথমে মুন্সেফ ও শেষে সাবজজ পদ প্রাপ্ত হন এবং বিচারপতি হিসাবে কৃতিত্বের পরিচয় দেন।[২]
সাহিত্য কর্ম
[সম্পাদনা]বাংলা সাহিত্যে "আঙ্কল টম্স্ ক্যাবিন"-এর "টমকাকার কুটীর" (১৮৮৫ খ্রীষ্টাব্দে প্রকাশিত) নামক অনুবাদেই তার প্রথম প্রসিদ্ধি।[১] এর পরে তিনি ঐতিহাসিক উপন্যাস রচয়িতা রূপে নাম করেন। "মহারাজা নন্দকুমার" (১৮৮৫), "দেওয়ান গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ" (১৮৮৬), "অযোধ্যার বেগম" (১৮৮৬), "ঝান্সীর রানী" (১৮৮৮) প্রভৃতি তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। স্বদেশপ্রেম ছিল তার সাহিত্যের প্রধান বিষয়।[১]
দেশপ্রেম ভিত্তিক গ্রন্থগুলির মাধ্যমে তিনি ইংরেজ আধিপত্যের প্রথম অবস্থার ঘটনার নির্ভীক তথ্য নির্ভর বিবরণ দিয়ে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করেন।[২]
চণ্ডীচরণ "মহারাজ নন্দকুমার" গ্রন্থের জন্য ইংরেজ সরকার দ্বারা দণ্ডিত হন।[২]
তিনি "জীবনগতি নির্ণয়" ও "লঙ্কাকান্ড" নামক দুটি বিদ্রুপাত্মক কাব্য রচনা করেছিলেন।[২]
বিখ্যাত কবি কামিনী রায় ছিলেন তার জ্যোষ্ঠা কন্যা।[২]