গ্রিফিথের পরীক্ষা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

গ্রিফিথের পরীক্ষা[১] হল স্যার ফ্রেডরিক গ্রিফিথ[২] কর্তৃক করা ব্যাকটেরিয়ার রূপান্তরভবন[৩][৪] পরীক্ষা বা ব্যাকটেরিয়াল ট্রান্সফরমেশন পরীক্ষা (১৯২৮)। এটি ছিল বংশগতির বাহক হিসেবে ডিএনএ-কে উপস্থাপিত করার প্রথম ধাপ। এই পরীক্ষায় গ্রিফিথ ডিপ্লোকক্কাস নিউমোনি নামক ব্যাকটেরিয়ার সাহায্য নেন যা ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। এই ব্যাকটেরিয়ার দুটি স্ট্রেন তিনি চয়ন করেন—

  1. অসংক্রামক বা অ্যাভিরুলেন্ট স্ট্রেন: R-II স্ট্রেন ব্যাকটেরিয়ার কোশপ্রাচীরে ক্যাপসুল না থাকায় এটির কলোনিটি অমসৃণ (Rough) দেখায়। এটি রোগ সৃষ্টিতে অক্ষম।
  2. সংক্রামক বা ভিরুলেন্ট স্ট্রেন: S-III স্ট্রেন ব্যাকটেরিয়ার কোশপ্রাচীরে ক্যাপসুল থাকায় এটির কলোনিটি মসৃণ (Smooth) দেখায়। এটি রোগ সৃষ্টিতে সক্ষম।

পরীক্ষাটি গ্রিফিথ কিছু ইঁদুর নেন ও চারটি ধাপে সম্পন্ন করেন:

  1. প্রথম পরীক্ষায় একটি ইঁদুরের দেহে অসংক্রামক R-II ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করালে দেখা গেল সেটি জীবিত আছে।
  2. দ্বিতীয় পরীক্ষায় একটি ইঁদুরের দেহে সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করালে দেখা গেল সেটির মৃত্যু হয়েছে।
  3. তৃতীয় পরীক্ষায় একটি ইঁদুরের দেহে তাপ প্রয়োগে মৃত সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করালে দেখা গেল সেটি জীবিত আছে।
  4. চতুর্থ পরীক্ষায় একটি ইঁদুরের দেহে তাপ প্রয়োগে মৃত সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়া ও জীবিত অসংক্রামক R-II ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করালে দেখা গেল সেটির মৃত্যু হয়েছে।

চতুর্থ পরীক্ষায় মৃত ইঁদুরটির হৃৎপিন্ড থেকে রক্ত নিয়ে গ্রিফিথ পরীক্ষা করে জীবিত সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি দেখতে পান, অথচ তিনি মৃত সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়া ইঁদুরের দেহে প্রবেশ করেছিলেন।

শেষ ফলাফল সম্পর্কে গ্রিফিথ মন্তব্য করেন যে, কোনো অজানা উপাদান মৃত সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়া থেকে জীবিত অসংক্রামক R-II ব্যাকটেরিয়াতে প্রবেশ করেছে যা তাকে S-III তে রূপান্তরভবন ঘটিয়েছে। এটিকে তিনি রূপান্তরকারী বস্তু বলে অভিহিত করেন। যদিও তিনি এর জিনগত ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

এভারি-ম্যাকলয়েড-ম্যাককার্টি পরীক্ষা দ্বারা এই রহস্যের সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

গ্রিফিথের পরীক্ষা

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Experiment। PubPub। ডিওআই:10.21428/cdd5dd5a 
  2. Griffith, Fred. (জানুয়ারি ১৯২৮)। "The Significance of Pneumococcal Types"Journal of Hygiene। Cambridge University Press। 27 (2): 113–159। জেস্টোর 4626734ডিওআই:10.1017/S0022172400031879পিএমআইডি 20474956পিএমসি 2167760অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  3. Lorenz, M. G.; Wackernagel, W. (১৯৯৪-০৯-০১)। "Bacterial gene transfer by natural genetic transformation in the environment"Microbiological Reviews58 (3): 563–602। ডিওআই:10.1128/MMBR.58.3.563-602.1994পিএমআইডি 7968924পিএমসি 372978অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  4. Downie, A. W. (১৯৭২)। "Pneumococcal transformation — a backward view: Fourth Griffith Memorial Lecture" (পিডিএফ)Journal of General Microbiology73 (1): 1–11। ডিওআই:10.1099/00221287-73-1-1অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 4143929। ২০১২-০৩-০২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১১-৩০ 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Daniel Hartl; Elizabeth Jones (২০০৫)। Genetics: Analysis of Genes and Genomes, 6th edition। Jones & Bartlett।  854 pages. আইএসবিএন ০-৭৬৩৭-১৫১১-৫
  • Lehrer, Steven (২০০৬)। Explorers of the Body (2nd সংস্করণ)। United States: iUniverse, Inc। আইএসবিএন 0-595-40731-5 
(References the original experiment by Griffith. Original article ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জুন ২০০৮ তারিখে and 35th anniversary reprint available.)