গাজরের আচার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সাদা মূলা ও গাজরের আচার ভর্তি জার

গাজরের আচার করা হয় গাজরকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাধারণ লবণের দ্রবণ (ব্রাইন), ভিনেগার বা অন্যান্য দ্রবণে রেখে। একে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোন আম্লিক দ্রবণে ডুবিয়ে রাখা হয় বা ল্যাক্টো-ফারমেন্টেশনের মাধ্যমে গাঁজানোর (ফার্মেন্টেশন) জন্য রেখে দেওয়া হয়। গাজরের আচারগুলি প্রায়শই ভিয়েতনামি খাবার, যথা বান মি ইত্যাদির সাথে অথবা ক্ষুধাবর্ধক খাবারের একটি উপাদান হিসেবে পরিবেশিত হয়।

সাধারণ বৈচিত্র[সম্পাদনা]

মেক্সিকোতে, গাজরের আচার এসকাবেচে গাজর নামে পরিচিত। এই বৈচিত্রটিতে সাধারণত পেঁয়াজ, কালো মরিচ এবং মশলা দিয়ে ভিনিগারে রেখে আচার করা হয়। এই আচারটিতে মরিচ এবং অন্যান্য মশলাগুলির স্বাদের সাথে গাজরের একটি মচমচে গঠন বজায় থাকে। এই মশলাদার, সবজি দিয়ে আচার পারম্পরিক খাবারের সাথে পরিবেশন করা হয়।[১]

ভিয়েতনামী সংস্কৃতিতে, গাজরের আচার ক্ষুধাবর্ধক হিসাবে এবং ভিয়েতনামী এগ রোল সহ বিভিন্ন খাবারের সাথে পরিবেশন করা হয়, অথবা বিভিন্ন রন্ধনপ্রণালী যেমন বানাহ মি এবং বিভিন্ন স্যুপে উপাদান হিসাবে গাজরের আচার ব্যবহৃত হয়। ভিয়েতনামী-আমেরিকান বাজারে, গাজরের আচার এবং সাদা মূলা থোক পরিমাণে কিনতে পাওয়া যায় এবং ভিয়েতনামে, টাটকা খাবার বিক্রেতারা এই দুটি আচার ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগে বিক্রি করে। এগুলি টিনজাত নয় তাই বিনা ফ্রিজে দীর্ঘদিন রাখা মুস্কিল এবং ফ্রিজে রাখা উচিত। এগুলি রেফ্রিজারেটরে দীর্ঘ দিন থাকতে পারে।[২]

জাপানি রন্ধনপ্রণালীতে অনেক পারম্পরিক জাপানি খাবারের পাশাপাশি গাজরের আচার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফল ও শাকসবজির আচার (সুকেমোনো) জাপানি খাদ্যতালিকার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জাপানে আচার তৈরি করার পরম্পরা, রেফ্রিজারেটরের ব্যবহার আসার আগে থেকেই ছিল, তাই সুকেমোনো সবজি আচারের অন্তর্ভুক্ত গাজরের আচার যাতে অনেকদিন সাধারণ ভাবেই সংরক্ষিত করা যায় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হত। সুকেমানো বানানোর জন্য যে বিভিন্ন পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করা হতো সেগুলি হল সাধারণত লবণ মাখিয়ে নয়তো ভিনিগারে ডুবিয়ে অথবা নিয়ন্ত্রিত ছত্রাক বা ফারমেন্টেশন করে। গাজরের আচার তৈরীর সাধারণ সুকেমোনো পদ্ধতির নাম হল মিসোজুকে। মিসো (জাপানি: みそ বা 味噌) একটি ঐতিহ্যবাহী জাপানি মশলা। মিসোজুকে আচার পদ্ধতিতে শাকসবজিতে মিসো মাখিয়ে তৈরি করা হয়। তাই তাদের নোনতা, মিসো স্বাদ হয।[৩] এর পরিবর্ত নুকাযুকে পদ্ধতিতে কখনও কখনও ভাজা চালের গুঁড়ো, নুন, কনবু বা অন্য উপাদানের মিশ্রণে ফারমেন্ট করা হয়। নুকাযুকে পদ্ধতির গাজরের আচার, মূল খাবারের সাথে পরিবেশিত হয়।[৩]

ভারতে ঐতিহ্যবাহী গাজরের আচার গাজর নু আথানু নামে পরিচিত। এগুলিতে, স্বাদ এবং ঝালের জন্য খোসাযুক্ত সরিষার বীজ দিয়ে আচার করা হয় এবং খাবারের পাশাপাশি পরিবেশন করা হয়। এগুলি আরও দ্রুত প্রস্তুত হয় এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।[৪]

গাজরের আচারের বৈচিত্র সারা বিশ্বে পাওয়া যায়। কয়েক শতাব্দী ধরে আচারের ব্যবহার হয়ে আসছে এবং বীজ, বন্য শিকড় ও ওষুধ হিসাবে গাজর ব্যবহৃত হয় (যদিও বেগুনি রঙের গাজর এশিয়ায় ঘরোয়া খাবারে ব্যবহার হয়েছিল প্রায় ৯০০ শতাব্দীতে)। এর ব্যবহার ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়।[৫]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

  • সবজি যুক্ত আচারের তালিকা
  • এনকুর্তিদো - একটি আচারযুক্ত উদ্ভিজ্জ খাবার যা মেসোআমেরিকান অঞ্চলে ক্ষুধাবর্ধক, সাইড ডিশ এবং মশলা হিসাবে ব্যবহৃত হয়

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Traditionally Fermented Spicy Vegetables - Pickles Escabeche"। অক্টোবর ৮, ২০১৭। 
  2. "Daikon and Carrot Pickle Recipe (Do Chua)"। মে ১৭, ২০০৯। 
  3. "Japanese Pickles (Tsukemono)"www.japan-guide.com 
  4. "Gajar nu Athanu (Indian Pickled Carrots) | Milk & Cardamom"। জানুয়ারি ১২, ২০১৯। 
  5. "History of Carrots - A brief summary and timeline"www.carrotmuseum.co.uk। ২০২২-০৭-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৮