খেউন রৌণ মাই ক্ব
খেউন রৌণ মাই ক্ব' [১](ইংরেজি: Kheun Rwan Mai Kwa' or Singarigharutha) বা সিঙ্গাড়ীঘরুথা হল মধ্যযুগীয় আসামে রাজত্বকারী আহোম রাজ্য-এর চাওফার ঐতিহাসিক রাজ্যভিষেক অনুষ্ঠান। আহোম শাসনের সময় এই অনুষ্ঠান বিশেষ রাজকীয় মর্য্যাদা লাভ করেছিল। সেইসময় আহোম রাজকুমার এই অনুষ্ঠান ছাড়া রাজকীয়ভাবে মর্যাদা লাভ করত না বলে প্রতিটি চাওফা এই প্রথাটির মধ্য দিয়ে শাসন ভার গ্রহণ করতেন[২]। কিন্তু অনুষ্ঠানটি অনেক ব্যয়বহুল ছিল এবং সেইজন্য এই অনুষ্ঠান করায় যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন হত এবং দেশে আর্থিক সংকটে এই অনুষ্ঠান অনেকসময় স্থগিত রাখতেও হয়েছিল।
উৎস
[সম্পাদনা]"খেউন রৌণ মাই ক্ব" অনুষ্ঠানটি প্রথম আহোম চাওফা চুদাংফা দ্বারা অনুষ্ঠিত হয়। চুদাংফা ১৩৯৭ খ্রিস্টাব্দে চাওফা হন। তিনি রাজধানী চরাইদেউর থেকে চরগুয়াতে সরান। নতুন রাজধানীতে চাওফা চুদাংফা উৎসব অনুষ্ঠিত করেছিলেন। এই প্রথা আহোমদের পূর্বপুরুষ দেবতা ফুরা লেংডনের আদেশ মতে পালন করে আসা হয়। এবং সেইসময় থেকেই প্রতিজন চাওফাই এই অনুষ্ঠানটি পালন করে আসছেন। এই অনুষ্ঠানটিতে চাওফারা চিঙ্গাড়ী গাছের কাঠামো তৈরি করে সেখানে অনুষ্ঠিত করতেন সেজন্য একে সিঙ্গাড়ীঘরুথা বলা হয়। প্রায় সমস্ত আহোম চাওফাই চরাইদেউতে এই অনুষ্ঠান করতেন কারণ চাওলুংদেররা স্থায়ী রাজধানী সেখানে করেছিলেন।
পদ্ধতি
[সম্পাদনা]এই অনুষ্ঠানটি আহোমদের পরম্পরাগত আহোম ধর্মের পূজারীরা করেন এবং উপযুক্ত দিন বার মঙ্গল চান। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত করার দিন একটি মস্ত হাতীতে চোমফাক পরে চাওঁফা ওঠেন এবং জ্যেষ্ঠ রাণী আই কুঁয়রীকে একটি মাইকী হাতীতে উস্থান চরাইদেও অভিমুখে রাওনা হন।[২][৩] তারপর রাজদম্পত্তি হাল পাটঘরে উপস্থিত হয়ে মলুঙদের দ্বারা ঙি পুলকের পবিত্র জল ছেটান। কিছু আহোম পুথির মতে সেই মলুঙ দুজন একই বংশের যাদের এই কাজের জন্য রাখা হত। জল ছেটানোর পর মলুঙদের সোনা রূপার অনেক দামী উপহার দেওয়া হত। তারপরে কিছু সময় রাজধানী থেকে দূরে যেতেন যাতে সকল অসূয়া অমঙ্গল সেখান থেকে চলে যায়।[৪]