কিরিবাস–চীন সম্পর্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সাইনো-কিরিবাস সম্পর্ক
মানচিত্র China এবং Kiribati অবস্থান নির্দেশ করছে

চীন

কিরিবাস

কিরিবাস—চীন সম্পর্ক হল কিরিবাস এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। কিরিবাস সরকার প্রজাতন্ত্রী চীনকে স্বীকৃতি দিয়েছে, এবং ওয়ান চায়না পলিসি অনুযায়ী বেইজিংয়ের সাথে বর্তমানে কিরিবাসের আনুষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ এ নীতি অনুযায়ী আরওসিকে স্বীকৃতি দেওয়া রাষ্ট্রের সাথে চীন সম্পর্ক রাখে না। তবে পূর্বে এ দুই রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল।

সম্পর্ক[সম্পাদনা]

প্রজাতন্ত্রী চীন তথা তাইওয়ান এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জন্য ওশেনিয়া সর্বদাই একটি কূটনৈতিক প্রতিযোগিতার কেন্দ্র। ওশেনিয়ার আটটি রাষ্ট্র পিআরসিকে, আর ছয়টি রাষ্ট্র আরওসিকে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। আটলান্টিক তীরবর্তী রাষ্ট্রসমূহ তাদের বৈদেশিক নীতিতে পরিবর্তন আনা মাত্র এই নম্বরে কিছুটা তারতম্য আসে, এবং কূটনৈতিক স্বীকৃতি বেইজিং থেকে তাইপেইতে চলে আসে। ওয়ান চায়না পলিসি অনুযায়ী কোনো রাষ্ট্রই দুই চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে না। আর এর ফলে আটলান্টিকের ছোট রাষ্ট্রসমূহও পিআরসি এবং আরওসি উভয় রাষ্ট্রের জন্য কূটনৈতিক প্রতিযোগিতার ময়দান।[১][২] ২০০৩ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্যাসিফিক আইল্যান্ডস ফোরামের সাথে কূটনৈতিক বন্ধন সুদৃঢ় করার ঘোষণা দেয়। একই সাথে সংস্থাটিকে দেওয়া অর্থনৈতিক সহায়তামূলক কার্যক্রম জোরালো করার কথাও বলেন। একই সাথে পিআরসির প্রতিনিধি ঝউ হোয়েনঝং বলেন, "পিআইএফের উচিত তাইওয়ানের সাথে যেকোনো প্রকার চুক্তি থেকে বিরত থাকে, তা হতে পারে আনুষ্ঠানিক চুক্তি বা মৌখিক।"[৩] ২০০৬ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবো ঘোষণা করেন, যে পিয়ারসি আটলান্টিক দ্বীপরাষ্ট্রসমূহের সাথে তাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে। পিআরসি আরো অর্থনৈতিক সাহায্য দেবে, আটলান্টিকের উন্নয়নশীল রাষ্ট্রসমূহের জন্য শুল্প প্রত্যাহার করে নেবে, ঐ সকল রাষ্ট্রসমূহের বার্ষিক ঋণ দেবে, বিনামূল্যে ম্যালেরিয়া-বিরোধী ঔষধ দেবে এবং দ্বীপরাষ্ট্রসমূহের দুই হাজার সরকারি কর্মকর্তা এবং প্রযুক্তিবিদদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে।[৪] ২০০৬ সালে ওয়েনের মাধ্যমে প্রথমবারের মত কোনো চীনের প্রধানমন্ত্রী আটলান্টিক দ্বীপসমূহে সফরে যায়, যাকে তাইপেই টাইমস "চীন এবং তাইওয়ানের মধ্যে একটি দীর্ঘস্থায়ী কূটনৈতিক যুদ্ধ-ময়দান" হিসেবে অভিহিত করে। একইভাবে সাউথ প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাসিফিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক রন ক্রোকম্বে বলেন, "আটলান্টিকে চীনের সফরসংখ্যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি"।[৫]

ইতিহাস এবং বর্তমান অবস্থা[সম্পাদনা]

কিরিবাস ১৯৮০ সালে প্রথম গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং তেইশ বছর ধরে তা নির্বিঘ্নে পরিচালিত হয়। ২০০৩ সালে নভেম্বর মাসে তারাওয়া তাইপেইয়ের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। সাথে সাথেই বেইজিং দেশটির সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে। পিআরসির জন্য কিরিবাসের সাথে সম্পর্ক তুলনামূলকভাবে অধিক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেখানে ১৯৯৭ সালে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ শনাক্তকরণ যন্ত্র স্থাপন করেছিল বেইজিং। ফলে সম্পর্ক বিছিন্নের তিন সপ্তাহ পর কিরিবাসের রাষ্ট্রপতি আনোতে তংকে তাইওয়ানের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে ওয়ান চায়না পলিসির প্রতি তার স্বীকৃতি পুনঃস্থাপনের জন্য বলে। সম্পর্ক বিচ্ছিন্নের তিন সপ্তাহ পরই,[৬] কিরিবাসে তারা তাদের কৃত্রিম উপগ্রহ শনাক্তকরণ যন্ত্রের উপর থেকে অধিকার হারায়; কারণ তখন কিরিবাস জাতিসংঘে তাইওয়ানকে সমর্থন করতে শুরু করে।

২০০৪ সালে রাষ্ট্রপতি তং বলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন পিআরসি এখনও তার দেশের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চেষ্টা করছে।[৭]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "The Pacific Proxy: China vs Taiwan"এবিসি রেডিও অস্ট্রেলিয়া। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৭। ৪ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬ 
  2. Young, Audrey (অক্টোবর ১৯, ২০০৭)। "Chequebooks brought out at Pacific forum"দ্য নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২, ২০১১ 
  3. "China announces initiatives to expand ties with PIF member countries", PRC embassy in Papua New Guinea, November 24, 2003
  4. "China offers aid package to Pacific Islands", China Daily, April 5, 2006
  5. "Chinese Premier Wen to visit the Pacific Islands"তাইপেই টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ এপ্রিল ২০০৬। 
  6. "China ceases diplomatic relations with Kiribati"। ২৯ নভেম্বর ২০০৩। 
  7. "Kiribati Plays The Game: Taiwan vs. China Battle Continues" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে, Mac William Bishop, প্যাসিফিক ম্যাগাজিন, ১ সেপ্টেম্বর ২০০৪

টেমপ্লেট:কিরিবাসের বৈদেশিক সম্পর্ক টেমপ্লেট:চীনের বৈদেশিক সম্পর্ক