কালীকান্ত চট্টোপাধ্যায়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কালীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ছিলেন উনবিংশ শতাব্দীর ভারতের অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একজন বাঙালি স্বনামধন্য শিক্ষক।[১][২][৩] তিনি ছিলেন প্রখ্যাত সমাজসংস্কারক পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রাথমিক শিক্ষা জীবনের অত্যন্ত প্রিয় একজন শিক্ষক।[১][২] বিদ্যাসাগরের উপর রচিত প্রতিটি জীবনীমূলক গ্রন্থেই শিক্ষক কালীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের কথা পাওয়া যায়।

কালীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ছিলেন কুলীন ব্রাহ্মণ। তিনি একাধিক বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রীদের আত্মীয়স্বজনদের অর্থ সাহায্যে তিনি জীবনযাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। তবে সচরাচর তিনি একজন স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করতেন। এ নিয়ে পরবর্তী সময়ে কালীকান্তের সঙ্গে বিদ্যাসাগরের মতানৈক্য ও মনোমালিন্য হয়েছিল।[৪]

একবার কালীকান্ত চট্টোপাধ্যায় বিদ্যাসাগরের বাবা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেন: 'আপনার পুত্র অদ্বিতীয় বুদ্ধিমান, শ্রুতিধর বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। পাঠশালায় যাহা শিক্ষার তার সমস্ত শিক্ষা ইহার হইয়াছে। এখান হইতে কলিকাতায় লইয়া যাওয়া অত্যন্ত আবশ্যক হইয়াছে। আপনি নিকটে রাখিয়া ইংরাজি শিক্ষা দিলে ভাল হয়। এ ছেলে সামান্য ছেলে নয়। বড় বড় ছেলেদের অপেক্ষা ইহার শিক্ষা অতি উত্তম হইয়াছে। আর হস্তাক্ষর যেরূপ হইয়াছে তাহাতে পুঁথি লিখিতে পারিবে।’[৪]

ঈশ্বরচন্দ্র নিজে কালীকান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বললেন, 'বালক বয়সে তিনি যখন বাবার হাত ধরে প্রায় ছাব্বিশ ক্রোশ পূর্বে কলকাতার পথে পা বাড়ালেন সেদিন গুরুমশাই ছিলেন তাঁর সঙ্গী। সমস্ত পথ হেঁটেছেন প্রিয় ছাত্রের সঙ্গে। মাইলস্টোনের মধ্যে লিখে রাখা ইংরেজি শব্দগুলো কালীকান্ত তাঁকে শিখিয়েছিলেন। বাবা ঠাকুরদাসও সাহায্য করেছেন তাঁকে।'[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. মাহফুজ, ইমরান (২০২০-০৭-২৯)। "ঈশ্বর, বিদ্যাসাগরের আড়ালে দয়ার সাগর"দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৯ 
  2. "সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৯ 
  3. "ঈশ্বরচন্দ্রের ইহজাগতিকতা"। ভোরের কাগজ। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৯ 
  4. বিদ্যাসাগর ও তাঁর গুরুমশাই, বঙ্গদর্শন.কম, ২০ মে ২০১৮।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]