কান্দাপাড়া যৌনপল্লি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(কান্দাপাড়া পতিতালয় থেকে পুনর্নির্দেশিত)

কান্দাপাড়া যৌনপল্লি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন পতিতালয়। প্রায় ২০০ বছর আগে এর গোড়াপত্তন হয়।[১] ২০১৪ সালে পতিতালয়টি ধ্বংস করে দেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পতিতালয় হিসেবে বিখ্যাত ছিলো।[২]

অবস্থান[সম্পাদনা]

কান্দাপাড়া পতিতালয়টি বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত।[৩] টাঙ্গাইলের কান্দাপাড়া পতিতালয়টি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর এবং সবচেয়ে পুরনো পতিতালয়। স্থানীয় লোকজনের কাছে পতিতালয়টি ‘বেবীস্ট্যান্ড’ নামেই পরিচিত।

বর্ণনা[সম্পাদনা]

কান্দাপাড়া পতিতালয়ে মোট ঘর আছে প্রায় ৮০০টি। এখানে প্রায় ৯০০ জন যৌনকর্মী বসবাস করেন।[৪] এখানে বসবাস ও পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য একজন মহিলাকে আদালতে উপস্থিত হয়ে একটি হলফনামা জমা দিতে হবে এই মর্মে যে, তারা তাদের নিজস্ব পছন্দ ও জোরজবরদস্তি ছাড়াই পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে এবং তারা অন্য কোন পেশা খুঁজে পেতে অসমর্থ। বৈধ যৌনকর্মীর সংখ্যা ৯০০ জন বলা হলেও বাস্তবে এই সংখ্যা অনেকগুণ বেশি হবে। ২০১৪ সালে তাদেরকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়। যারা মনে করেন পতিতাবৃত্তিও একজন পেশা হতে পারে, এমন কিছু সংগঠন এই উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। ২০১৪ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ওমেন লয়ার্স এসোসিয়েশন যৌনকর্মীদের উচ্ছেদকে অবৈধ কর্মকাণ্ড বলে বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেয়।[৫] আদালত তাদের আবেদনের পক্ষে রায় দেন। ফলে কান্দাপাড়ার যৌনকর্মীরা তাদের পুরনো আবাস ও পেশা ফিরে পায়। বর্তমানে কান্দাপাড়া পতিতালয়টি ২ মিটার দেয়াল দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে। এর ভেতরে মূল পতিতালয়টি অবস্থিত। মূল পতিতালয়ের ভেতরে সরু রাস্তা রয়েছে, রাস্তার পাশ দিয়ে বিভিন্ন দোকান আছে।

সান্দ্রা হোইনের আলোকচিত্র[সম্পাদনা]

জার্মান আলোকচিত্রশিল্পী সান্দ্রা হোইন কান্দাপাড়া পতিতালয়ে আসেন এবং এখানকার জীবনমান ও পতিতালয়ের অবস্থা নিয়ে ছবি তোলেন। ছবিগুলো প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক মহলের কাছে কান্দাপাড়া পতিতালয়ের দুরাবস্থার চিত্র প্রকাশিত হয়ে পড়ে।[৬][৭]

পতিতালয়টি দুই মিটার প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত। সংকীর্ণ রাস্তা, খাওয়ার স্টল, চা-এর দোকান এবং রাস্তায় অন্যান্য বিক্রেতারা আছে। এই পতিতালয়ে নির্দিষ্ট কিছু পরিচালক রয়েছে আর রয়েছে নিজস্ব কিছু নিয়মাবলী যা সমাজের মূলস্রোত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং হামলা[সম্পাদনা]

বাংলাদেশে সামাজিক ভাবে পতিতালয়কে ঘৃণ্য চোখে দেখা হয়। এখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ যৌন সেবা নিতে আসলেও ধর্মীয় ও সামাজিক কারণে কান্দাপাড়া পতিতালয় বিভিন্ন সময় হামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Disturbing Truth About the House of Prostitution in Bangladesh (Kandapara brothel) | Tomatoheart"Tomatoheart (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৯-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-০২ 
  2. "খদ্দের না থাকলে স্বামীই রাতের সঙ্গী.. - Bangla Online News Portal"Bangla Online News Portal (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৬-২৯T১৪:৪২:২৮+০০:০০। ২০১৮-০৭-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2018-10-02  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. "দেয়ালের অন্য পাশের গল্প- কান্দাপাড়া যৌনপল্লীর অদেখা কিছু ছবি"Bangla Hub - এবার পুরো পৃথিবী বাংলায়! (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-১২-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-০২ 
  4. "টাঙ্গাইলের পতিতালয় এবার আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়"টাঙ্গাইল বার্তা (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-১০-১৭T১৪:৩৬:০০+০০:০০। ২০১৮-০৯-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2018-10-02  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  5. "কান্দাপাড়ার পতিতাদের কাহিনী বিদেশী মিডিয়ায়"মানবজমিন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-০২ 
  6. "এই ছবিগুলিই প্রকাশ করে বাংলাদেশের ২০০ বছরের পুরনো পতিতালয়ের নারকীয় জীবন | ALKB Media"alkbmedia.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-০২ 
  7. "The Longings of the Others – Sandra Hoyn Photography"www.sandrahoyn.de (জার্মান ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-০২