কাতারের সঙ্গীত
কাতারের সঙ্গীত মুলত সামুদ্রিক লোক কবিতা, গান ও নৃত্যভিত্তিক। দোহায় ঐতিহ্যবাহী নৃত্যসমূহ শুক্রবার বিকালে পরিবেশন করা হয়; এ ধরনের একটি নৃত্য আরদ্বাহ।
শুধু পুরুষদের লোক সঙ্গীত
[সম্পাদনা]সামুদ্রিক সঙ্গীত
[সম্পাদনা]![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/2/24/Arab_pearl_divers_in_the_Persian_Gulf.jpg/220px-Arab_pearl_divers_in_the_Persian_Gulf.jpg)
সমুদ্র সম্পর্কিত কর্ম সঙ্গীতগুলো, বিশেষত মুক্তা সংগ্রহ সংশ্লিষ্ট গানগুলো হলো লোক সঙ্গীতের সবচেয়ে সাম্প্রতিক ধরন।[১] প্রতিটি গানই ভিন্ন ভিন্ন তালের হয়ে থাকে, যা মুক্তা আরোহণের ভিন্ন ভিন্ন কার্যক্রমের কথা বোঝায়। সামষ্টিক সংগীত মুক্তা আরোহণ যাত্রার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, তাই প্রতিটি জাহাজে একজন পেশাদার গায়ক থাকতো, স্থানীয়ভাবে তাকে আন নাহাম বলা হতো। গানগুলো কর্মীদের কঠিন কঠিন কাজ করার ক্ষেত্রে উৎসাহ যোগাত।[১]
নৃত্য
[সম্পাদনা]![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/6/6d/QatariMusicPerformanceKatara.jpg/220px-QatariMusicPerformanceKatara.jpg)
আরদ্বাহ হলো এক ধরনের লোকনৃত্য, এখনো কাতারে এটির চর্চা আছে। এ নৃত্যে নৃত্যশিল্পীরা দুই সারিতে বিভক্ত হয়ে একজন আরেক জনের বিপরীতে দাড়ায়, তাদের প্রত্যেকেই তলোয়ার পরিচালনা করুক অথবা না করুক, তারা ঢোল বাজায় এবং কবিতা আবৃত্তি করে। [২]
পারস্য উপসাগরীয় দেশসমূহে আরদ্বার প্রধান দুটি প্রকার হলো স্থল আরদ্বা (আরদ্বা বাররিয়্যাহ) এবং সামুদ্রিক আরদ্বা (আরদ্বা বাহরি)। কাতারি আরদ্বা এ দুই ধরনের আরদ্বার মিশ্রিত রুপ। কোন কোন পরিবেশনায় পুরুষরা সমুদ্র সৈকতে আরদ্বা বাররিয়্যার (স্থল সঙ্গীত) পোশাক পরিধান করে সামুদ্রিক আরদ্বার বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করে।[২]
শুধু মহিলাদের লোক সঙ্গীত
[সম্পাদনা]প্রাথমিকভাবে মহিলারা শুধু প্রাত্যহিক কাজ যেমন গম পেষা এবং রান্না করার সময় কর্ম সঙ্গীত গাইত। গানগুলো সাধারণত ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে সমষ্টিগতভাবে গাওয়া হতো এবং বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়ে থাকতো - কিছু গান খুব ছিল খুব সাধারণ বিষয়ের, আবার কিছু গান ছিল বিশেষ ধরনের।[৩]
এছাড়াও যখন মুক্তার জাহাজ ফিরে আসতে যেত, তখনো মহিলারা গান গাইত।[১] জাহাজ দেখতে পাওয়ার পর তারা সমুদ্রতীরে একত্রিত হতো, এবং সেখানে তারা হাততালি দিত ও মুক্তা সংগ্রহের দুর্ভোগ সম্পর্কে গান গাইত।[৩]
নৃত্য
[সম্পাদনা]মহিলারা বছরে মাত্র দুটি বিশেষ উপলক্ষে জনসম্মূখে নৃত্য পরিবেশন করত। প্রথমটি হলো আল মুরাদাহ, এই উপলক্ষে সমাজের সব শ্রেণির মহিলা এবং বালিকারা একটি নির্দিষ্ট স্থানে একত্রিত হতো এবং এবং নকশি কাপড় পরে গান ও নৃত্য পরিবেশন করতো। এই অনুষ্ঠান সাধারণত ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার আগের সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতো।[৩] বিগত দশকগুলোতে আল মুরাদাহই ছিল কাতারের মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীতানুষ্ঠান। সাধারণত প্রতিটি মুরাদাহ নাতে রাসুল (মুহাম্মাদ সা. এর প্রশংসাগীতি) দ্বারা শুরু হতো। এর পর মহিলারা গোত্রপতি এবং গোত্রের অন্যান্য বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের বন্দনা পরিবেশন করতো। প্রতিটি পঙ্ক্তিই দুইবার করে গাওয়া হতো। এটি পরিবেশন করার সময় মহিলারা পরস্পর মুখোমুখি হয়ে দুটি সারিতে দাড়াতো, আর প্রধন গায়িকারা শেষ প্রান্তে এমনভাবে দাড়াতো যে একটি তিন প্রান্ত বিশিষ্ট আয়তক্ষেত্র তৈরি হতো। মুরাদাহ নৃত্যে প্রত্যেক মহিলা তাদের দেহ দোলাত এবং বাহুগুলো নাড়াতো, কিন্তু দুই হাত একত্রিত থাকতো।[৪] ১৯৫০ এর দশকে মুরাদাহ নৃত্য পরিবেশন বহুলাংশে বন্ধ হয়ে গেছে,[৩] যদিও এখনো মাঝে মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠানের শেষে এ ধরনের নৃত্য পরিবেশন করা হয়।[৪] বর্তমানে কাতারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কাতারি সমাজে ইহা আবার চালু করার জন্য চেষ্টা করছে।[৩]
দ্বিতীয় উপলক্ষ্য হচ্ছে আল আশুরি, এতে সাধারণ মানুষ গান গাইত এবং বিবাহ উপলক্ষ্যে এটি পরিবেশিত হয়। পরিবেশন করার ক্ষেত্রে সাধারণত দুই ধরনের বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়:আদ দাফ (এক ধরনের তাম্বুরা) এবং আত তাবল (এক ধরনের ঢোল)। আশুরি গানগুলোর লিরিক সাধারণত খুব হৈহুল্লোড়পূর্ণ হয়, কেননা এগুলো বিবাহ উৎসব উদযাপনে আনন্দ করার জন্য গাওয়া হয়।[৫] লিরিকগুলো সাধারণত নাবাতি পঙ্ক্তি (এক ধরনের আরবি কবিতা) থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এখনো কাতারি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে আশুরির চর্চা আছে।[৫]
লোক বাদ্যযন্ত্র
[সম্পাদনা]ঘাতবাদ্য কাতারি লোক বা ফোকলোর সঙ্গীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় বাদ্য। গালাহ এক ধরনের লম্বা মাটির কলসি, সাধারণত মুক্তা সংগ্রাহকরা এটিকে বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করত।
সমসাময়িক সঙ্গীত শিল্প
[সম্পাদনা]কাতারের স্থানীয় সঙ্গীত শিল্পীদের অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়, যেমন সচেতনতার অভাব, গান রেকর্ডিং স্টুডিওর ব্যয়বহুলতা এবং শ্রোতার অভাব ইত্যাদি। প্রথম কাতারি রেকর্ড লেবেল ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে দানা আল ফারহান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়।
মেটাল/রক
[সম্পাদনা]নাসির মাসতারিহি, একজন কাতারি বংশোদ্ভূত জর্দানি-পাকিস্তানি গায়ক-গীতিকার হিসেবে তিনিই কাতারের বাইরে সর্বপ্রথম রক/মেটাল গানের অ্যালবাম প্রকাশ করেন। তিনি কাতারের প্রথম মেটাল ব্যান্ড আসগারদ লেগিওন্নাইরেসেরও একজন সদস্য।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;abusaud1
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ক খ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Urkevich, Lisa 2014
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ক খ গ ঘ ঙ Abu Saud, p. 147
- ↑ ক খ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;urkevich244
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ক খ Abu Saud, p. 149