ওয়াজেহা আল-হুওয়াইদার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ওয়াজেহা আল-হুওয়াইদার
وجيهة الحويدر
জাতীয়তাসৌদি আরাবিয়ান
পেশাসাংবাদিক, লেখক

ওয়াজেহা আল-হুওয়াইদার (আরবি: وجيهة الحويدر, জন্ম ১৯৬২ বা ১৯৬৩) একজন সৌদি মানবাধিকার কর্মী, লেখক। তিনি একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে পুরুষ-অভিভাবকত্ব বিরোধী এবং নারীদের গাড়ি চালানোর দাবি প্রচার করেন এবং[১] তিনি সৌদি আরবে নারী অধিকার সুরক্ষা ও প্রতিরক্ষা সমিতির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

সক্রিয়তা[সম্পাদনা]

২০০৩ সালের আগস্টে সৌদি আরবে প্রকাশনা নিষিদ্ধ হওয়ার পর ওয়াজেহা আল-হুয়াইদার নারীর অধিকার নিয়ে লেখার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত হয়ে ওঠে। আল-হুয়াইদার আরবি ভাষার দৈনিক আল-ওয়াতান এবং ইংরেজি ভাষার দৈনিক আরব নিউজে লেখা প্রকাশ করে

২০০৬ সালের ৬ আগস্ট, আল-হুয়াইদারকে "নারীদের অধিকার দিন" লেখা একটি সাইনবোর্ড ধরে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০ সেপ্টেম্বর ২০০৬ তারিখে তাকে আবার ছয় ঘণ্টার জন্য আটক করা হয়। আল-হুয়াইদারকে সমস্ত মানবাধিকার কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে সম্মত একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার বিনিময়ে মুক্তি দেয়া হয়। সেই সাথে সৌদি আরবের বাইরে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

আল-হুয়াইদার নোরা আল-ফয়েজ এর নিয়োগের সমর্থন করেন। তিনি বলেন, সৌদি সরকারকে নারীর অধিকারে আরও গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।[২] আল-হুওয়াইদার লিখেন, "সৌদি নারীরা দুর্বল, তাদের মর্যাদা যতই উঁচু হোক না কেন তারা 'লাঞ্ছিত'ও বঠে। কারণ কারও আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য তাদের কাছে আইন নেই। নারীদের উপর নিপীড়ন ও তাদের স্বতঃস্ফূর্ততা ভুল, যা সৌদি আরবের বেশিরভাগ বাড়িতে প্রভাব ফেলে।" ২০০৮ সালে, সৌদি আরবে তার গাড়ি চালানোর একটি ভিডিও ইউটিউবে পোস্ট করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন; তখন সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানো অবৈধ ছিল।[১][৩] ২০০৭ সালে, তিনি বাদশাহ আবদুল্লাহর কাছে নারী চালকদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানান। তার ই-মেইল ঠিকানা বারবার ব্লক করা সত্ত্বেও পাবলিক এলাকায় এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে পিটিশনের জন্য স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন। আল-হুয়াইদার অভিভাবকত্ব আইনের বিরুদ্ধেও প্রচারণা চালান, যা পুরুষদের দৈনন্দিন জীবনের নিয়ন্ত্রণ দেয়, যার মধ্যে বাড়ির বাইরে ভ্রমণের অনুমতিও রয়েছে। [৪] ২০০৯ সালে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে তিনটি পৃথক অনুষ্ঠানে পুরুষ অভিভাবকের অনুমোদন ছাড়াই বাহরাইন সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেন। তাকে তিনবার বিদেশ যেতে বাধা দেয়া হয়। তিনি সাধারণভাবে পুরুষ অভিভাবকত্ব ব্যবস্থার প্রতিবাদে অন্যান্য নারীদের পরীক্ষা করার জন্য উৎসাহিত করেন। যুক্তরাষ্ট্রে কাটানো একটি সংক্ষিপ্ত সময় তাকে নারীবাদী কর্মী হওয়ার জন্য প্রভাবিত করে। তিনি বলেন:[৫]

"মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমি অনুভব করেছি যে আমি একজন মানুষ। কারণ আমাকে একজন নারী হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল। আমি শিখেছি জীবন মানে স্বাধীনতা ছাড়া কিছুই নয়। তারপর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম একজন সত্যিকারের নারী অধিকার কর্মী হবো, যাতে আমার দেশে নারীদের মুক্ত করা যায় এবং তাদের জীবিত বোধ করা যায়। "

সংস্কার-মানসিকতার সম্পাদক আফাক আল-হুয়াইদারকে রোজা পার্কের সাথে তুলনা করেছেন।[৬] ২০১১ সালে আল-হুওয়াইদার এবং ফাওজিয়া আল-ওয়ুনির বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ আনা হয়। আর সেটা হলো নাথালি মরিনকে রিয়াদে কানাডার দূতাবাসে যেতে সাহায্য করার চেষ্টা করেছে। [৭][৮] এ অঞ্চলের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিকের প্রভাবের কারণে অভিযোগগুলি প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু এক বছর পরে আল-হুওয়াইদার এবং ফাওজিয়া আল-ওয়ুনির বিরুদ্ধে (স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদকে উস্কে দেওয়া) অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।[৭] ২০১৫ সালের ১৫ জুন আল-হুওয়াইদার এবং আল-ওয়ুনিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং অতিরিক্ত দুই বছরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সাথে দশ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। [৭]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

  • মানাল আল-শরীফ

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Saudi women make video protest."
  2. "Saudi activist: Female minister 'first step' but more needed."
  3. Setrakian, Lara.
  4. "Saudi Women Drivers: Threat to State Religion and Politics"Huffington Post। ১৫ অক্টোবর ২০১৩। 
  5. Hiel, Betsy (১৩ মে ২০০৭)। "Dhahran women push the veil aside"। Pittsburgh Tribune-Review। ৫ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১১ 
  6. Salman, Omran (১৭ মার্চ ২০০৮)। "Wajeha Al-Huwaidar Makes History"। Aafaq.org। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১১ 
  7. "Canada Turned a Blind Eye to This Woman's Black Eye"। নভেম্বর ৭, ২০১৩। 
  8. "LEADING WRITER, JOURNALIST, AND ACTIVIST WAJEHA AL-HUWAIDER FACES IMPRISONMENT"। জুলাই ৩, ২০১৩।