ওমেরিয়ে মসজিদ

স্থানাঙ্ক: ৩৫°১০′১৯″ উত্তর ৩৩°২১′৫৫″ পূর্ব / ৩৫.১৭১৯° উত্তর ৩৩.৩৬৫৪° পূর্ব / 35.1719; 33.3654
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ওমেরিয়ে মসজিদ
Τέμενος Ομεριέ / Ömeriye Camii
ওমেরিয়ে মসজিদের মিনার থেকে মসজিদের দৃশ্য
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
জেলানিকোসিয়া জেলা
অবস্থাসক্রিয়
অবস্থান
অবস্থানসাইপ্রাস নিকোসিয়া, সাইপ্রাস
স্থানাঙ্ক৩৫°১০′১৯″ উত্তর ৩৩°২১′৫৫″ পূর্ব / ৩৫.১৭১৯° উত্তর ৩৩.৩৬৫৪° পূর্ব / 35.1719; 33.3654
স্থাপত্য
স্থাপত্য শৈলীউসমানীয়-তুর্কি স্থাপত্ব
সম্পূর্ণ হয়১৫৭১
বিনির্দেশ
দৈর্ঘ্য~৬০ মিটার
প্রস্থ~২০ মিটার
মিনার

ওমেরিয়ে মসজিদ (গ্রিক: Τέμενος Ομεριέ তেমেনোস ওমেরিয়ে, তুর্কি: Ömeriye Camii), সাইপ্রাস দ্বীপে নিকোসিয়ার প্রাচীর ঘেরা শহরের একটি মসজিদ, যা বর্তমান নিকোসিয়ার দক্ষিণ অংশে অবস্থিত।[১] সাইপ্রাসে তুরস্কের আক্রমণের পর, মসজিদটি উক্ত দ্বীপ ও শহরের অমুসলিম অংশে মুসলিমদের উপাসনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।[১]

বর্তমানে মসজিদটি চালু রয়েছে এবং উপাসক ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।[২][৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মসজিদটি নির্মাণের পূর্বে, মসজিদের স্থানটিতে ১৪ শতক পুরোনো সেন্ট মেরির অগাস্টিনীয় গির্জা অবস্থিত ছিল। ১৫৭০-৭৩ সালের উসমানীয়-ভেনিশীয় যুদ্ধ চলাকালীন ১৫৭০ সালে নিকোসিয়া অবরোধের সময় গির্জাটি প্রথম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং যুদ্ধের পরে শেষ পর্যন্ত সেটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল।[২]

তুর্কিদের সাইপ্রাস বিজয়ের পর, উসমানীয় সেনাপতি লালা মুস্তফা পাশা প্রাক্তন গির্জাটির জায়গায় একটি মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দেন।[২] সে সময় এ স্থানটি নিয়ে একটি জনপ্রিয় বিশ্বাস প্রচলিত ছিল যে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমরকে ৭ম শতাব্দীতে এই স্থানে সমাহিত করা হয়েছিল।[৩]

তুর্কি সাইপ্রিয়ট লোককাহিনী অনুসারে, ওমেরিয়ে মসজিদ প্রথম কোনো মসজিদ যেখানে ১৫৭১ সালে তুর্কিরা সাইপ্রাস দ্বীপ জয়ের পর সর্বপ্রথম প্রার্থনা করেছিল।[৪]

বর্তমান অবস্থা[সম্পাদনা]

বর্তমানে, মসজিদটি সক্রিয় এবং উপাসক ও পর্যটক উভয়ের জন্য উন্মুক্ত। বর্তমানে, এটি সাধারণত মুসলিম দর্শনার্থীদের দ্বারা সাইপ্রাইসের দক্ষিণ বিভাগে পর্যটন বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। এটি প্রধানত পার্শ্ববর্তী আরব দেশ এবং বলকান থেকে আগতদের দ্বারা ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, নিকোসিয়ার দক্ষিণ অংশে গমনকারী তুর্কী সাইপ্রাসীয়রা নিয়মিত ভ্রমণের সময় মসজিদটি ব্যবহার করে থাকে।[৩]

৩ জুন ২০১৪ এ, তুর্কি সাইপ্রাসীয় ধর্ম বিষয়ক পরিচালক তালিপ আতালে, অংশ হিসাবে সাইপ্রাসের আর্চবিশপ দ্বিতীয় ক্রিসোস্টোমোসের আমন্ত্রণে নিকোসিয়ায় সুইডেনের দূতাবাসের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত সাইপ্রাস শান্তি প্রক্রিয়ার ধর্মীয় বিষয়ক ট্রাকে দেশটির দক্ষিণ অংশে অবস্থিত বেশ কয়েকটি পবিত্র ইসলামি স্থান পরিদর্শন করার সময় ওমেরিয়ে মসজিদও পরিদর্শন করেন।[৪] আতালেয়ের সফরসঙ্গী হিসেবে তাহতাকলে এলাকার বাসিন্দা ইভিকেএএফ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন রউফ এরসেনালও ছিলেন, যার পরিবার ১৯৬৩ সালের আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরে সে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল এবং আর কখনও ফিরে আসেনি।[৫]

স্থাপত্যশৈলী[সম্পাদনা]

উপর দিক থেকে মসজিদটি নির্মাণ পরিকল্পনার নকশা, ১৮৯৯ সালে ফরাসি ইতিহাসবিদ ক্যামিল এনলার্ট রচিত "ল'আর্ট গথিক এট লা রেনেসাঁ এন চইপ্রে" (সাইপ্রাসে গথিক রেনেসাঁ শিল্প)-এ অঙ্কিত।

মসজিদটি প্রাক্তন গির্জার অনুরূপ ভিত্তি পরিকল্পনা অনুসরণ করে নির্মিত হয়েছে, তবে মসজিদের নকশা ইসলামি শৈলীতে অঙ্কিত হয়েছে। এটিতে উসমানীয়-তুর্কি স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্যকে বিভিন্ন উপাদানের সাথে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যেমন: খিলান, ছোট গম্বুজ এবং দূর থেকে সহজেই দৃশ্যমান একটি লম্বা তুর্কি-শৈলীর মিনার[৩]

ওমেরিয়ে হামাম[সম্পাদনা]

এই এলাকাটিতে শুধুমাত্র মসজিদই নয়, বরং আরও অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা বিদ্যমান আছে। মসজিদের রাস্তার অপরপাশে, একটি তুর্কি গোসলখানা (হামাম) অবস্থিত, যার নাম ওমেরিয়ে হামাম। হামাম (গোসলখানা) নির্মাণের নির্দেশও দিয়েছিলেন লালা মোস্তফা পাশা।[৩]

গোসলখানাটি ইইউ দ্বারা প্রদত্ত তহবিলের কাঠামোর মধ্যে ছিল এবং এটি ২০১২ সাল পর্যন্ত স্নানের জন্য উন্মুক্ত একটি পর্যটন স্থান ছিল। সাইপ্রাস সরকার জানায় যে সংস্কারের পরিকল্পনা এবং কাজ চলার কারণে হামামটি বন্ধ রাখা হয়েছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Çiçek, Kemal (১৯৯৭)। "LEFKOŞE, published by Türk Diyanet Vakfı(Turkish Religious Affairs Association), Location: Gazimağusa, Turkish Republic of Northern Cyprus": 126। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  2. Derya Köseoğlu (১১ এপ্রিল ২০১৩)। "Kuzey ile Güney arasında köprü: Lefkoşa"। Kuzey Haber Ajansı - KKTC (Northern News Agency - TRNC)। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  3. Maric, Vesna (২০০৯)। Cyprus। LonelyPlanet। পৃষ্ঠা 72–73। আইএসবিএন 9781741048032। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  4. "Kıbrıs Rum Kesimi'nde 51 Yıl sonra İlk Namaz (First Prayer in Greek Section of Cyprus After 51 Years)"। Haber 7। ৪ জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  5. "Religious service in Turkish mosque after 51 years"Cyprus Mail। ৩ জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]