এলেন ম্যালকম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এলেন ম্যালকম
২০১৫ সালে এলেন ম্যালকম
জন্ম (1947-02-02) ফেব্রুয়ারি ২, ১৯৪৭ (বয়স ৭৭)
শিক্ষা
পেশাসক্রিয় কর্মী
বোর্ড সদস্যএমিলির তালিকা (প্রতিষ্ঠাতা)[২]

এলেন আর ম্যালকম (জন্ম ফেব্রুয়ারী ২, ১৯৪৭)[৩] একজন আমেরিকান কর্মী, আমেরিকান রাজনীতিতে, বিশেষ করে রাজনৈতিক তহবিল সংগ্রহে তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবন রয়েছে। তিনি ১৯৮৫ সালে এমিলির তালিকা প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০১০ সাল পর্যন্ত এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৩]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

এলেন ম্যালকমের প্রপিতামহ হলেন এ ওয়ার্ড ফোর্ড, যিনি আইবিএমের একজন প্রতিষ্ঠাতা।[৪][৫]

ম্যালকম নিউ জার্সির মন্টক্লেয়ারে বড় হয়ে ওঠেন। তাঁর বাবা ও মা আইবিএম- এ বিক্রয় বিভাগে কাজ করার সময় পরিচিত হয়েছিলেন।[৬] ৮ মাস বয়সে তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর, তিনি আইবিএম সৌভাগ্যের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন, যা তিনি ২১ বছর বয়সে হাতে পেয়েছিলেন।[৭] ম্যালকম মন্টক্লেয়ার কিম্বারলে একাডেমিতে ১৯৬৫ সালের ক্লাসে স্নাতক হন। ১৯৬৫ সালে, শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য একটি কলেজ ,হলিন্স কলেজে প্রবেশ করার পরে, ম্যালকম বলেছিলেন যে তিনি "অরাজনৈতিক" ছিলেন এবং এমনকি তিনি বুঝতেও পারেননি তাঁর দেশ যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে। তিনি ১৯৬৮ সালে ইউজিন ম্যাকার্থির প্রচারণার জন্য কাজ করতে গিয়েছিলেন। ম্যাকার্থি মিনেসোটা রাজ্যের একজন গণতান্ত্রিক এবং যুদ্ধবিরোধী সিনেটর ছিলেন। ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রাইমারিতে জনপ্রিয় ভোটে জয়ী হওয়ার পর, ম্যালকম রাজনীতিতে আরও জড়িত হতে আগ্রহী ছিলেন। ম্যালকম উল্লেখ করেছেন ভিয়েতনাম যুদ্ধ, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যা এবং তার পরের দাঙ্গা, রবার্ট কেনেডির হত্যা এবং ৬০ এর দশকের পাল্টা সংস্কৃতি, তাঁর রাজনৈতিক জাগরণ ঘটিয়েছিল। যদিও তাঁর বাবা-মা উভয়েই এবং তাঁর সম্প্রদায়ের বেশিরভাগই রিপাবলিকান ছিলেন, ম্যালকম বলেছেন যে সেই সময়ের অশান্তি তাঁকে হতবাক করেছিল। তিনি একটি পরিবর্তন আনায় সাহায্য করতে বাধ্য বোধ করেছিলেন। ১৯৬৮ সালের গ্রীষ্মে তিনি নেওয়ার্কের জনশক্তি উন্নয়ন কর্মসূচিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে হলিন্স কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর, তিনি ১৯৭০ -এর দশকে কমন কজের জন্য কাজ করেছিলেন।[৮]

রাজনৈতিক সক্রিয়তা[সম্পাদনা]

ম্যালকম সংগঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে কমন কজের জন্য কাজ শুরু করেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধ শেষ করার জন্য প্রতিনিধিদের উপর চাপ সৃষ্টিকারী বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকের তত্ত্বাবধানে থাকার জন্য তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। ম্যালকম তাঁর সময়কে কৃতিত্ব দেন, কমন কজের কাজে তাঁকে প্রচারের "নাট এবং বোল্ট" শেখানোর জন্য।[৮]

কমন কজ ত্যাগ করার পর ম্যালকম জাতীয় মহিলা রাজনৈতিক সংগঠনী কমিটির প্রেস সচিব হন।[৩] এনডব্লিউপিসি-তে তাঁর কাজের মাধ্যমে, তিনি সংস্থার উন্নয়ন পরিচালক লেল স্টেগালের সাথে পরিচিত হন। স্টেগাল ধনী জনহিতৈষী মহিলাদেরকে তাদের অর্থ কোথায় দান করতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য নিজের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। ম্যালকম, ২১ বছর বয়সে উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তির অধিকার পেয়েছিলেন, অর্থাৎ তিনি ঠিক এমনই একজন মহিলা ছিলেন। ম্যালকম যোগ্যতার ভিত্তিতে নিজের কর্মজীবনকে এগিয়ে নেওয়ায় ইচ্ছুক ছিলেন। যোগ্য অলাভজনক ব্যক্তিদের অর্থ প্রদান ক'রে উন্নতি করা তাঁর চিন্তাধারার সাথে বিরোধপূর্ণ ছিল।[৮] স্টেগালের নির্বাহী পরিচালক হিসাবে, তাঁরা একসাথে ১৯৮০ সালে উইণ্ডম ফাণ্ড শুরু করেন।

১৯৭৯ সালে এনডব্লিউপিসি ছেড়ে যাওয়ার পর, ম্যালকম এস্টার পিটারসনের প্রেস সচিব হিসেবে কাজ পান, পিটারসন তখন কার্টার প্রশাসনের ভোক্তা বিষয়ক বিশেষ সহকারী ছিলেন। এনডব্লিউপিসি-এর প্রধান, পিটারসন এবং মিলি জেফ্রিস, উভয়কেই ম্যালকম তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাসের প্রধান প্রভাব হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

১৯৮২ সালে, ম্যালকম হ্যারিয়েট উডসের প্রচারণার সাথে জড়িত হন, হ্যারিয়েট একজন ডেমোক্র্যাটিক মহিলা যিনি মার্কিন সেনেটে একটি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে তহবিল ফুরিয়ে যায়, যার ফলে তাঁর টেলিভিশন বিজ্ঞাপনগুলি সম্প্রচার হতে পারে নি। এই কারণে হ্যারিয়েট উডস আসনটি হারান। প্রচারে তাঁর সম্পৃক্ততার কারণে, ম্যালকম লক্ষ্য করেছিলেন যে মার্কিন সিনেটে একজন মহিলাও নির্বাচিত হননি, পরিবর্তে তাঁদের সবাইকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।[৮] এর প্রধান কারণ হিসেবে ম্যালকম চিহ্নিত করেছেন মহিলাদের প্রচারণার জন্য অপর্যাপ্ত তহবিল।

১৯৮৩ সালে, ম্যালকম অল্প সংখ্যক মহিলার জন্য একটি প্রাতঃরাশের আয়োজন করেছিলেন, যে মহিলাদের তিনি জানতেন যে তাঁরা রাজনৈতিক সক্রিয়তায় আগ্রহী। একসাথে, তাঁরা একটি স্পষ্ট লক্ষ্য চিহ্নিত করেছিলেন: মার্কিন সেনেটে একজন মহিলাকে নির্বাচিত করার জন্য প্রাথমিক তহবিল বা মূলধনের অর্থ ব্যবহার করা হোক। এটি ছিল এমিলির তালিকার (আর্লি মানি ইজ লাইক ইস্ট) সূচনা, যেটি ম্যালকম ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এমিলির তালিকা কার্যকরভাবে একটি দাতা নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে যেটি বেশিরভাগ মহিলার সমন্বয়ে গঠিত। এই মহিলারা যাঁদের জানেন যে তাঁদের নিজেদের মতোই আগ্রহ রয়েছে, তাঁদের থেকে অর্থের বিনিময়ে কাকে ভোট দেবেন সে সম্পর্কে তথ্য পেয়েছিলেন। এই আগ্রহগুলি স্পষ্ট ছিল: পছন্দের সমর্থক গণতান্ত্রিক মহিলাদের পাবলিক অফিসে নির্বাচিত করা।

২০০৭ সালে, তিনি হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচারণার সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন,[৯] এবং ২০১০ সালে তিনি ন্যাশনাল পার্ক ফাউন্ডেশন বোর্ড অফ ডিরেক্টরসে নিযুক্ত হন।

ম্যালকম হলেন এমিলির তালিকার বোর্ডের চেয়ার এমেরিটা, নারী ও পরিবারের জন্য জাতীয় অংশীদারিত্বের প্রাক্তন সভানেত্রী এবং ন্যাশনাল পার্ক ফাউণ্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদের প্রাক্তন সদস্য।[১০]

বই[সম্পাদনা]

ম্যালকম, ক্রেগ উঙ্গারকে নিয়ে লিখেছেন হোয়েন উইমেন উইন: এমিলি'স লিস্ট অ্যাণ্ড দ্য রাইজ অফ উইমেন ইন আমেরিকান পলিটিক্স, এটি ২০১৬ সালে প্রকাশিত হয়।[১১][৮]

প্রশংসা[সম্পাদনা]

তিনি ভ্যানিটি ফেয়ার (১৯৯৮) দ্বারা আমেরিকার সবচেয়ে প্রভাবশালী নারীদের একজন, গ্ল্যামার (১৯৯২) দ্বারা বর্ষসেরা নারীদের একজন, লেডিস হোম জার্নাল (১৯৯৯) দ্বারা আমেরিকার ১০০ জন গুরুত্বপূর্ণ নারীর একজন চিহ্নিত হয়েছিলেন। টাইমের অন্যতম প্রকাশনা দ্বারা ৫০ জন মহিলার একজন, যাঁরা আমেরিকান রাজনৈতিক ইতিহাস তৈরি করেছেন (২০১৭) ও আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ পলিটিক্যাল কনসালট্যান্টস দ্বারা সবচেয়ে মূল্যবান সক্রিয় কর্মী চিহ্নিত হয়েছেন এবং আমেরিকার পরিকল্পিত প্যারেন্টহুড ফেডারেশন দ্বারা মার্গারেট সেঙ্গার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।[১২][১৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Ellen Malcolm: Filling The Smoke-Filled Vacuum For Women Candidates With Am-Election-Women"Associated Press। ১৯ অক্টোবর ১৯৮৮। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৩ 
  2. "Senior Leadership: Ellen Malcolm"EMILY's List। ৪ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৩ 
  3. "Ellen Malcolm"Archives of Women's Political Communication। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০২৪ 
  4. CHOZICK, AMY (মার্চ ৩, ২০১৫)। "Leader of Emily's List, a PAC Built to Elect Women, Faces Her Biggest Test in 2016"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৫ 
  5. Beamish, Rita (জুলাই ১৩, ১৯৮৬)। "In Campaign for U.S. Senate, E-M-I-L-Y Spells MONEY for Feminist Candidates"Los Angeles Times। Associated Press। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  6. Spake, Amanda.
  7. "WOMEN CAN BE POWER BROKERS, TOO"Washington Post। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০২৪ 
  8. Ellen, Malcolm (মার্চ ২০১৭)। When women win : EMILY's list and the rise of women in American politics। Unger, Craig (First Mariner Books সংস্করণ)। আইএসবিএন 9781328710277ওসিএলসি 957242777 
  9. "Ellen Malcolm And EMILY's List"The Atlantic। ২০০৭-১২-৩১। 
  10. "Our Leadership"Emily's List। সংগ্রহের তারিখ মে ২০, ২০২৩ 
  11. "How women crashed the Senate: Ellen R. Malcolm", USA Today, মার্চ ৭, ২০১৬ 
  12. "Ellen R. Malcolm"www.emilyslist.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১৬ 
  13. Zorthian, Julia (২০১৭-০৩-০৮)। "International Women's Day: 50 Who Made US Political History"। Time। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৪ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]