বিষয়বস্তুতে চলুন

এপোলোনিয়াসের সমস্যা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চিত্র ১ঃ এপোলোনিয়াসের সমস্যার একটি সমাধান (গোলাপী রঙ)। প্রদত্ত বৃত্তগুলো কালো রঙে দেখানো হলো।
চিত্র ২ঃ এপোলোনিয়াসের সমস্যার চারটি সম্পূরক সমাধান; প্রদত্ত বৃত্তগুলো কালো রঙ দ্বারা চিহ্নিত।

সমতলীয় ইউক্লীডিয় জ্যামিতিতে এপোলোনিয়াসের সমস্যাটি হলোঃ এমন বৃত্ত আঁকতে হবে যা সমতলে অবস্থিত প্রদত্ত তিনটি বৃত্তের ট্যানজেন্ট হবে (চিত্র ১) পেরগা'র এপোলোনিয়াস (খ্রীষ্ট পূর্ব ২৬২ থেকে খ্রীষ্ট পূর্ব ১৯০, অথবা এর কাছাকাছি) নিজে এই সমস্যা তৈরী করে নিজেই সমাধান করেন। তার সমাধান তার বই Ἐπαφαί (Epaphaí বা ট্যানজেন্সিস) এ উল্লেখ করেন; তার এই কর্ম হারিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু খ্রীষ্টিয় ৪র্থ শতকের এক পাপ্পাস অব আলেক্সান্দ্রিয়াএর প্রতিবেদন অনুসারে বলা হয়েছে এপোলোনিয়াসের উক্ত কর্মটি টিকে আছে। প্রদত্ত তিনটি বৃত্তের আটটি ভিন্ন ভিন্ন বৃত্ত রয়েছে যারা বৃত্তগুলোর ট্যানজেন্ট (চিত্র ২) এবং প্রত্যেকটি সমাধানই প্রদত্ত তিনটি বৃত্ত ভিন্ন ভিন্ন পথ ঘেঁষে যায়ঃ প্রতিটি সমাধানে, একটি ভিন্ন উপসেট তিনটি বৃত্ত ঘিরে রাখে (এর পরিপূরক বাদে) এবং এখানে একটি সেটের আটটি করে উপসেট আছে যাদের সদস্য সংখ্যা হলো ৩, যখন ৮=২। ১৬ শতকে, আদ্রিয়ান ভ্যান রুমেন এই সমস্যাটি ছেদকৃত পরাবৃত্ত দিয়ে সমাধান করেন, কিন্তু এই সমাধানটি কেবল রুলার এবং কম্পাস ব্যবহার করে করা যায়না। ফ্রান্সিস ভিয়েত কিছু লিমিটিং কেইস কাজে লাগিয়ে একটি সমাধান তৈরী করেনঃ এখানে তিনটি বৃত্তের যেকোনো একটি বৃত্ত একেবারে সংকুচিত হয়ে যেতে পারে যার ব্যাসার্ধ হবে শূন্য (একটি বিন্দু) অথবা ব্যাসার্ধ বেড়ে একেবারে অসীমও হয়ে যেতে পারে (একটি রেখা)। ভিয়েতের এই সহজ পদ্ধতি অনেক কঠিন সমস্যা সমাধানেও ব্যবহৃত হয়, এবং একে এপোলোনিয়াসের পদ্ধতির যুক্তিযুক্ত পুনর্গঠন বলে বিবেচনা করা হয়। আইজ্যাক নিউটন ভ্যান রুমেনের পদ্ধতিটিকে আরো সহজ করে তুলেন, তিনি দেখিয়েছেন এপোলোনিয়াসের এই সমস্যা তিনটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে একটি নির্দিষ্ট স্থান খোঁজার সমতুল্য। এই ধারণাটি লোরান এর মত অনেক ন্যাভিগেশন এবং পজিশনিং সিস্টেমে ব্যবহার করা হয়।

সমাধান পদ্ধতি

[সম্পাদনা]

ছেদকৃত পরাবৃত্ত

[সম্পাদনা]
চিত্র ৩: প্রদত্ত দুইটি বৃত্ত (কালো) একটি বৃত্ত(গোলাপি) যা উভয়ের ট্যানজেন্ট. কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রের দূরত্ব d1 এবং d2 সমান r1 + rs এবং r2 + rs, যথাক্রমে, অতএব এদের অন্তর rs মুক্ত।
বিন্দুসমূহের সেট এবং দূরত্বের ধ্রুব অনুপাত d1/d2; একটি বৃত্তের দু'টি নির্দিষ্ট বিন্দু সাপেক্ষে।
চিত্র ৪: বৃত্তসমূহের মধ্যে অবস্থিত ট্যানজেন্সি যদি তাদের ব্যাসার্ধ সমপরিমাণে পরিবর্তিত হয়। একটি গোলাপী বৃত্ত অবশ্যই সংকুচিত বা স্ফীত হবে একটি অন্তঃস্থ বৃত্তের সাথে (ডানের কালো বৃত্ত), যখন বহিঃস্থ ট্যানজেন্ট বৃত্তগুলো ( বাম পাশের কালো বৃত্তগুলো) বিপরীত ভাবে সংকুচিত বা প্রসারিত হবে।

বীজগাণিতিক সমাধান

[সম্পাদনা]

লেও গোলক জ্যামিতি

[সম্পাদনা]

বিপরীত পদ্ধতি

[সম্পাদনা]
চিত্র ৫: একটি বৃত্তের বিপরীত অবস্থা। নির্দিষ্ট বিন্দু P হলো P বিপরীত, বৃত্তের সাপেক্ষে।

বিপরীতকরণের মাধ্যমে সমাধান জোট

[সম্পাদনা]
চিত্র ৬: এপোলোনিয়াসের সমস্যার অনুবন্ধী সমাধান জোট (গোলাপি রঙ), প্রদত্ত বৃত্ত হলো কালো রঙের।

এনুলাসের বিপরীতিকরণ

[সম্পাদনা]
চিত্র ৭: একটি সমাধান বৃত্ত (গোলাপী) প্রথম পরিবার সমকেন্দ্রিক বৃত্তের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত (কালো)। এদের সমাধান ব্যাসার্ধ rs , routerrinner অন্তরের সমান,যেখানে দুইয়ের কেন্দ্রের দূরত্বের অন্তর ds এরদের যোগফলের সমান।
চিত্র ৮: একটি সমাধান বৃত্ত (গোলাপী) অন্তঃস্থ প্রদত্ত বৃত্ত (কালো) ঘেঁষে যায়। দুইয়ের সমাধান ব্যাসার্ধ rs , router + rinner যোগফলের সমান। যেখানে এদের কেন্দ্রীয় দূরত্ব ds এদের অন্তরের সমান।

জিরগনি'র সমাধান

[সম্পাদনা]
চিত্র ৯: একটি প্রদত্ত বৃত্তের দুটি স্পর্শকাতর দুটি স্পর্শকুল লাইনগুলি দুইটি সমাধান বৃত্তের (গোলাপী) চূড়ান্ত অক্ষকে ছেদ করে R (লাল রেখা)। R এ তিনটি বিন্দু মিলিত হয় যেগুলো সেসব রেখার মেরু যারা নীল ট্যানজেন্ট বৃত্তগুলোকে সংযোগ করে (প্রতিটি প্রদত্ত কালো বৃত্তের)।
চিত্র ১০: ব্যাসার্ধ অক্ষ R এর মেরু (লাল বিন্দু), প্রদত্ত তিনটি বৃত্তের (কালো), ট্যানজেন্ট বিন্দু'র সংযোজক সবুজ রেখাতে অবস্থিত, এই রেখাগুলো মেরু এবং ব্যাসার্ধীয় কেন্দ্র (কমলা) হতে অঙ্কন করা যেতে পারে।

ছেদ তত্ত্ব

[সম্পাদনা]
and .

বিশেষ ক্ষেত্র

[সম্পাদনা]

বিন্দু, বৃত্ত এবং রেখার ১০টি সমন্বয়

[সম্পাদনা]
ছক ১: এপোলোনিয়েসের সমস্যার ১০ টি ভেদ
ক্রম কোড প্রদত্ত বিষয়বস্তু সমাধান সংখ্যা (সাধারণ ভাবে) উদাহরণ (গোলাপী রঙে সমাধান দেওয়া আছে; এবং প্রদত্ত উপাদান কালো রঙে)

PPP তিনটি বিন্দু
LPP একটি রেখা এবং দুইটি বিন্দু
LLP দুইটি রেখা এবং একটি বিন্দু
CPP একটি বৃত্ত এবং দুইট বিন্দু
LLL তিনটি রেখা
CLP একটি বৃত্ত, একটি রেখা এবং একটি বিন্দু
CCP দুইটি বৃত্ত এবং একটি বিন্দু
CLL একটি বৃত্ত এবং দুইটি রেখা
CCL দুইটি বৃত্ত এবং একটি রেখা
১০ CCC তিনটি বৃত্ত (চিরায়ত সমস্যা)

সমাধান সংখ্যা

[সম্পাদনা]
চিত্র ১১: এপোলোনিয়াসের একটি সমস্যা যা সমাধান নেই। একটি সমাধান বৃত্ত (গোলাপী) প্রদত্ত কালো বৃত্ত অতিক্রম করতে হবে যেন বাকি দুইটি প্রদত্ত বৃত্তকে স্পর্শ করতে পারে ( কালো সহ)

পারস্পরিক ট্যানজেন্ট প্রদত্ত বৃত্তঃ সোডি'র বৃত্ত এবং দেকার্তে এর উপপাদ্য

[সম্পাদনা]
চিত্র ১২: পারস্পরিক প্রদত্ত ট্যানজেন্ট বৃত্তের সাহায্যে (কালো) এপোলোনিয়াসের সমস্যার দুইটি সমাধান (লাল); তাদের বক্রতা অনুসারে লেবেল করা।

সাধারণীকরণ

[সম্পাদনা]
চিত্র ১৩: একটি প্রতিসাম্য এপোলোনিয়ান গাসকেট, যাকে লিবনিজ প্যাকিং-ও বলা হয়, এর উদ্ভাবক গটফ্রাইড লিবনিজের নামানুসারে

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

আরো পড়ুন

[সম্পাদনা]
  • Callandreau, Édouard (১৯৪৯)। Célèbres problèmes mathématiques (ফরাসি ভাষায়)। Paris: Albin Michel। পৃষ্ঠা 219–226। ওসিএলসি 61042170 
  • Camerer JG (১৭৯৫)। Apollonii de Tactionibus, quae supersunt, ac maxime lemmata Pappi, in hos libros Graece nunc primum edita, e codicibus manuscriptis, cum Vietae librorum Apollonii restitutione, adjectis observationibus, computationibus, ac problematis Apolloniani historia (লাতিন ভাষায়)। Gothae: Ettinger। 
  • Pappus, Alexandrinus (১৯৩৩)। Pappus d'Alexandrie: La collection mathématique। Paris। ওসিএলসি 67245614  Trans., introd., and notes by Paul Ver Eecke. (ফরাসি)
  • Simon M (১৯০৬)। Über die Entwicklung der Elementargeometrie im XIX. Jahrhundert (জার্মান ভাষায়)। Berlin: Teubner। পৃষ্ঠা 97–105। 
  • Wells D (১৯৯১)। The Penguin Dictionary of Curious and Interesting Geometry। New York: Penguin Books। পৃষ্ঠা 3–5। আইএসবিএন 0-14-011813-6 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]