উ চ প্রু চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উ চ প্রু চৌধুরী
১৭ তম বোমাং রাজা
(সার্কেল প্রধান, বোমাং সার্কেল)
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২৪ এপ্রিল ২০১৩
পূর্বসূরীক্য সাইন প্রু চৌধুরী
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯৪৪ বা
১৯ নভেম্বর ১৯৪৭
পুরাতন বোমাং রাজবাড়ি, বান্দরবান শহর
দাম্পত্য সঙ্গীরানী ড মাওয়ং প্রু (মৃত্যু: ১০ মে ২০২০)[১]
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় [২]

বোমাংগ্রী উ চ প্রু চৌধুরী পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানস্থ বোমাং সার্কেলের বর্তমান সার্কেল চিফ বা বোমাং রাজা। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ১৭তম বোমাং রাজা হিসেবে তিনি শপথ নেন। তিনি পেশায় কৃষি প্রকৌশলী ছিলেন।

শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

উ চ প্রু চৌধুরীর ২য় শ্রেণিতেই প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শুরু হয়। তিনি ছাত্রজীবনে খুব মেধাবী ছিলেন এবং সবসময় ক্লাসে প্রথম হতেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এ কারণে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় বিদ্যালয় পরিচালকের নিকট থেকে ৩০০ টাকা বৃত্তি পান। রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। তাঁর ছোট দাদুর (তৎকালীন রাজা মং শৈ প্রু চৌধুরী) পরামর্শে ময়মনসিংহের পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) কৃষি প্রকৌশলে ভর্তি হন। পরবর্তীতে ইংল্যান্ড থেকে স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ডন বস্কো উচ্চ বিদ্যালয়ের এক মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষককে বাঁচাতে নিজে ঐ শিক্ষকের পরিচয়ে শিক্ষকতা করেন।

চাকরিজীবন[সম্পাদনা]

রাজা পেশায় কৃষি প্রকৌশলী ছিলেন। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে অবসর নেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এবং লিবিয়ায় কৃষি প্রকৗশলের পরামর্শক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিতেও পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছিলেন।[৩]

দায়িত্ব লাভ[সম্পাদনা]

১৬তম বোমাং রাজা ক্য সাইন প্রু চৌধুরী (কে এস প্রু) ২০১৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করার পর রাজপদে শূন্যতা দেখা দেয়। রাজপদে নিয়োগ পাওয়ার সাড়ে পাঁচ মাসের মধ্যে তিনি আকস্মিক মারা যান। ২২ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত কে এস প্রু চৌধুরীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষ হওয়ার পর রাজপরিবারের সদস্যরা রাজা মনোনয়নের জন্য দরবারে বসেছিলেন। এতে পরিবারের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ হিসেবে কৃষি প্রকৌশলী উ চ প্রু চৌধুরীকে ১৭তম বোমাং রাজা হিসেবে সকলের সম্মতিক্রমে মনোনীত করেন।

বোমাং ঐতিহ্য অনুযায়ী রাজপুত্র রাজা না হয়ে রাজপরিবারের বংশতালিকায় যিনি বয়োজ্যেষ্ঠ ও যোগ্য ব্যক্তি তিনি রাজা হয়ে থাকেন। বংশতালিকায় বর্তমানে উ চ প্রু চৌধুরী জ্যেষ্ঠতম হিসেবে তিনি রাজপদে অধিষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ জন্য রাজপরিবার থেকে সবার সম্মতি নিয়ে তাঁকে নিয়োগ দিতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়।[৩]

১০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিক্রমে বর্তমান রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ রাজা উ চ প্রু চৌধুরীকে রাজা হিসেবে নিয়োগ দেন।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিটিউট মিলনায়তনে রাজকীয় এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তাঁর রাজ্যাভিষেক সম্পন্ন হয়। চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল্লাহ পাহাড়ের ঐতিহ্য অনুযায়ী নতুন রাজাকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে রাজার হাতে স্বর্ণখচিত রাজ তরবারি তুলে দেন।[৪]

পরিবার[সম্পাদনা]

উ চ প্রুর পিতামহ ছিলেন ১৩তম বোমাং রাজা ক্য জ সাইন প্রু। ১৪ তম রাজা মং শৈ প্রু চৌধুরী তাঁর জ্ঞাতি পিতামহ। এছাড়া তিনি নিজের পূর্বসূরী, প্রয়াত ১৬তম রাজা ক্য সাইন প্রু চৌধুরীর ভ্রাতুষ্পুত্র। রাজা উ চ প্রু চৌধুরীর স্ত্রী রানী, প্রয়াত ড মাওয়াং প্রু।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. https://m.dailyinqilab.com/article/292944/
  2. বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা: বান্দরবান। প্রকাশকাল: জুন ২০১৪। ISBN 9 840-7-5320-7
  3. http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2013-03-07/news/334456[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. https://m.banglanews24.com/national/news/bd/191371.details[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]