সাবাইন মাদ্রাসা
আস-সাবাইন মাদ্রাসা | |
---|---|
مدرسة السباعيين | |
প্রাক্তন নাম | আল-সুগরা মাদ্রাসা |
সাধারণ তথ্য | |
ধরন | মাদ্রাসা |
স্থাপত্য রীতি | মেরিনিড, মরক্কান, ইসলামি |
অবস্থান | ফেজ, মরক্কো |
স্থানাঙ্ক | ৩৪°০৩′৪৭.২″ উত্তর ৪°৫৮′৬.৯″ পশ্চিম / ৩৪.০৬৩১১১° উত্তর ৪.৯৬৮৫৮৩° পশ্চিম |
নির্মাণকাজের সমাপ্তি | ১৩২৩ সাল |
কারিগরী বিবরণ | |
উপাদান | কাঠ, ইট, স্টাকো, টালি |
তলার সংখ্যা | ২ |
ভূতল | ১৮৩ বর্গ মিটার |
সাবাইন মাদ্রাসা বা আস-সাবাইন মাদ্রাসা (আরবি: مدرسة السباعيين) মরক্কোর ফেজের মদিনার একটি ঐতিহাসিক মাদ্রাসা। এটি আল-আন্দালুস মসজিদের পাশে ফেস আল-বালির আন্দালুস কোয়ার্টারে অবস্থিত। ১৩২৩ সালে আবু আল-হাসান কর্তৃক মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর পাশের বৃহত্তর সাহরিজ মাদ্রাসা এর ঠিক আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়।[১] একসাথে এই দুটি মাদ্রাসা, প্রধান মসজিদের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও আবাসন নিশ্চিত করে।[২][৩][৪]
ইতিহাস[সম্পাদনা]
ঐতিহাসিক পটভূমি[সম্পাদনা]
ফেজের অন্যান্য ঐতিহাসিক মাদ্রাসার মতো এই মাদ্রাসাটিও মেরিনিড যুগে নির্মিত হয়। এটি ১৩২৩ সালে আবু আল-হাসান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়, যিনি সেই সময় কেবল একজন রাজকুমার এবং তার পিতা সুলতান দ্বিতীয় আবু সাইদ উসমানের উত্তরাধিকারী ছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে সুলতান হন।[৩] এই মাদ্রাসাটি প্রথমে আল-সুগরা মাদ্রাসা (ক্ষুদ্রতর মাদ্রাসা) নামে পরিচিত ছিল কারণ এটি বৃহত্তর আল-কুবরা মাদ্রাসা (বৃহত্তর মাদ্রাসা) বা আস-সাহরিজ মাদ্রাসার পরিপূরক হিসেবে নির্মিত হয়।[৩][৪][৫] সম্ভবত কুরআন পাঠের ধর্মসম্মত সাতটি পদ্ধতি শেখানোর ক্ষেত্রে এই মাদ্রাসাটির বিশেষত্বের কারণে সবশেষে এটি আস-সাবাইন মাদ্রাসা নামে পরিচিত লাভ করে।[৩] আস-সাহরিজ মাদ্রাসা ও এই মাদ্রাসাটি নিকটবর্তী আন্দালুস মসজিদে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা ও আবাসন নিশ্চিত করে (যেমন সেফারিন ও আল-আত্তারিন মাদ্রাসা নদীর ওপারে আল-কারাওইন মসজিদের শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলো নিশ্চিত করে)।[২][৩][৪]
সাম্প্রতিক ক্ষয়ক্ষতি ও পুনঃসংস্কার[সম্পাদনা]
সাহরিজ মাদ্রাসার সাথে এই মাদ্রাসাটি একাধিকবার পুনঃসংস্কার করা হয়েছে। তবুও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে মাদ্রাসা দুটি ব্যাপক অবহেলিত হয়েছে। ২০০০-এর দশকে ওয়ার্ল্ড মনুমেন্টস ফান্ড এই মাদ্রাসা দুটি পুনঃসংস্কার ও সংরক্ষণের প্রাথমিক প্রচেষ্টা করেছিলো, কিন্তু পরে এগুলো আরও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।[৪] বিশেষ করে ২০০৯ সালে লুটেরা দুটি খোদাই করা কাঠের তক্তা ও কয়েকটি মার্বেলের স্তম্ভ সরিয়ে ফেললে সাবাইন মাদ্রাসার ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলস্বরূপ দ্বিতীয় তলাটি ভেঙ্গে পড়ে।[৪] ২০১৩ সালে শুরু হওয়া ফেস আল-বালির পুনর্বাসনের একটি বৃহত্তর কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্থানীয় ঐতিহ্য সংস্থা এডিইআর-ফেস সম্প্রতি মাদ্রাসা দুটি পুনঃসংস্কার ও পুনরুদ্ধার করে এবং ২০১৭ সালে পুনরায় চালু করে।[৬][৭]
স্থাপত্য[সম্পাদনা]
মাদ্রাসাটি পার্শ্ববর্তী সাহরিজ মাদ্রাসার চেয়ে ছোট ও অপেক্ষাকৃত কম সজ্জিত। এটি ১৮৩ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।[৬] রাস্তা থেকে একটি বাঁকা প্রবেশপথ দিয়ে এই মাদ্রাসায় প্রবেশ করা যায়, তবে আপাতদৃষ্টিতে এটি অন্য একটি অভ্যন্তরীণ প্রবেশপথের মাধ্যমে অন্য মাদ্রাসার সাথে সংযুক্ত ছিল। মাদ্রাসার অভ্যন্তরে একটি ছোট প্রাঙ্গণ ও একটি ফোয়ারা আছে। প্রাঙ্গণটি দোতলা ভবন দ্বারা বেষ্টিত।[৫][৬] ভবনের ছাদের কড়িকাঠে আরাবেস্ক মোটিফ ও আরবি শিলালিপি খোদাই করা আছে। ভবনটির উভয় তলায় শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য মোট ২৩ টি শয়ন কক্ষ ও ৩ টি অফিস কক্ষ আছে।[৫][৬] নিচতলায়, উঠোনের শেষ প্রান্তে ও প্রবেশপথের ওপারে, একটি ছোট প্রার্থনা কক্ষ ও একটি সাধারণ মিহরাব রয়েছে।[৫]
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
- আল-কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়
- আবু ইনানি মাদ্রাসা
- আবু ইনানি মাদ্রাসা (মেকনেস)
- আবু আল হাসান মাদ্রাসা
- মরক্কোর মসজিদের তালিকা
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ Kubisch, Natascha (২০১১). "Maghreb - Architecture" in Hattstein, Markus and Delius, Peter (eds.) Islam: Art and Architecture. h.f.ullmann. p. 312.
- ↑ ক খ Parker, Richard B (১৯৮১)। A practical guide to Islamic monuments in Morocco (ইংরেজি ভাষায়)। Charlottesville, VA: Baraka Press। ওসিএলসি 8627931।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Le Tourneau, Roger (১৯৪৯)। Fès avant le protectorat: étude économique et sociale d'une ville de l'Occident musulman. (ফরাসি ভাষায়)। Casablanca: Société marocaine de librairie et d'édition। ওসিএলসি 761131028।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Sahrij and Sbaiyin Madrassa Complex"। World Monuments Fund (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-২৫।
- ↑ ক খ গ ঘ Marçais, Georges (১৯৫৪)। L'architecture musulmane d'occident: Tunisie, Algérie, Maroc, Espagne et Sicile (ফরাসি ভাষায়)। Paris: Arts et métiers graphiques। ওসিএলসি 24824827।
- ↑ ক খ গ ঘ "La magnifique rénovation des 27 monuments de Fès – Conseil Régional du Tourisme (CRT) de Fès" (ফরাসি ভাষায়)। ২০২০-০৪-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-২৭।
- ↑ "Les médersas de Fès, une richesse patrimoniale et civilisationnelle"। MapFes (ফরাসি ভাষায়)। ২০২০-০৩-১০। ২০২০-০৩-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-২৭।