আনজারী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আনজারী (থাই: อัญจารี) ছিল থাইল্যান্ডের একটি এলজিবিটি বা সমকামীদের অধিকার সংস্থা। এটি ১৯৮৬ সালে একটি মহিলা সমকামী সংগঠন হিসাবে গঠিত হয়েছিল। সংস্থাটি একই লিঙ্গের আকাঙ্ক্ষাকে বোঝাতে ব্যবহৃত শব্দগুলির সংস্কার এবং সমলৈঙ্গিক বিবাহের আইনত স্বীকৃত আদায়ের জন্য জোর প্রচারণা চালিয়েছিল৷ এটি ২০১১ সালের দিকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৮৬ সালে অঞ্জনা সুবর্ণানন্দ এবং চান্থলাক রাকসায়ু-সহ অল্পসংখ্যক সমকামী নারীবাদ কর্মী মিলে আনজারী গঠন করেছিল।[২] সংস্থাটি থাইল্যান্ডসহ সারা বিশ্বের সামনে নারী আন্দোলন এবং সমকামী মহিলাদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে। সুবর্ণানন্দ নেদারল্যান্ডে অধ্যয়নের অভিজ্ঞতা থেকে আনজারী গঠনে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।[৩] আনজারীর সংগঠকরা ১৯৯০ সালে এশিয়ান লেসবিয়ান নেটওয়ার্ক নামে একটি সভার আয়োজন করেছিলেন এবং এটি ছিল এশিয়া মহাদেশে প্রথম এই ধরনের আয়োজন। আয়োজনটি আন্তর্জাতিকভাবে বিশেষ করে সমগ্র এশিয়ায় খুব সারা ফেলেছিল। আনজারীর সাফল্যের মধ্যে অন্যতম ছিল ১৯৯৬ সালে বৈষম্যমূলকভাবে রাজাভাট ইনস্টিটিউটে রূপান্তরিত লিঙ্গের সদস্যদের তালিকাভুক্তি না করার সিদ্ধান্ত বাতিল করা এবং সেদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমকামিতাকে প্যাথলজিকাল অবস্থা হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ না করার সিদ্ধান্তকে বন্ধ করা।[২] ২০১১ সালের দিকে সংস্থাটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।[১]

সমলৈঙ্গিক বিবাহ[সম্পাদনা]

তাইওয়ানসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো থাইল্যান্ডেও সমকামী বিয়ের স্বীকৃতির জন্য আনজারী দীর্ঘদিন ধরে প্রচারণা চালিয়ে আসছিল। ২০১৯ সালে সিভিল এবং বাণিজ্যিক কোডে একটি আইনি চ্যালেঞ্জ করা হয়। এই বিষয়ে অঞ্জনা সুবর্ণানন্দ থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনে মন্তব্য করেছিলেন যে যদি এই চ্যালেঞ্জটি ব্যর্থ হয় তবে "বিবাহের পুরানো ধারণা আরও কিছু সময়ের জন্য টিকে থাকার ঝুঁকি থাকবে"।[৪]

শব্দার্থিক সমস্যা[সম্পাদনা]

আনজারী একই লিঙ্গের প্রতি আকাঙ্ক্ষা বর্ণনা করতে ব্যবহৃত পারিভাষিক শব্দাবলীর উপর মনোযোগ দিয়েছিল। থাই মনোবিজ্ঞানীরা মানুষকে "রাক-টাং-পেট" (বিষমকামী) এবং "রাক-রুয়াম-পেট" (সমকামী) নামক দুই দলে ভাগ করেছিলেন। "কাটোয়ে" (রূপান্তরিত লিঙ্গ) একটি প্রাচীন থাই শব্দ, যা সেনা শিবিরের সমকামী পুরুষদের পাশাপাশি রূপান্তরিত লিঙ্গের ব্যক্তিদের বর্ণনা করার জন্যও ব্যবহৃত হয়। কখনো কখনো সমকামী পুরুষদের অবমাননা করতে কাটোয়ে ব্যবহার করা হত যেহেতু তখন সমকামী পুরুষদের প্রকৃত পুরুষ মনে করা হত না।[৫] আনজারী কর্মীরা প্রথাগত শব্দ যেমন-"টম" (বাচ) বা "ডি" (ফেমে) ব্যবহারের পরিবর্তে "ইং রাক ইং" শব্দের ব্যবহার শুরু করে যেটি দ্বারা নতুন একটি শ্রেণী পরিচিতি পায় যা কেবল "নারীদের বুঝায় যারা অন্য একজন নারীকে ভালোবাসে"। "ইং রাক ইং" এর একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হল যে এটি আন্তর্জাতিক এলজিবিটি আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিল এবং এর ফলে আনজারী স্থানীয় অ্যান্টি-এলজিবিটি সদস্যদের বিরুদ্ধে একটা শক্ত অবস্থান নিতে পেরেছিল।[২]

পুরস্কার[সম্পাদনা]

আনজারী ১৯৯৫ সালে আন্তর্জাতিক সমকামী এবং লেসবিয়ান মানবাধিকার কমিশন (বর্তমানে আউটরাইট অ্যাকশন ইন্টারন্যাশনাল) থেকে ফেলিপা ডি সুজা পুরস্কার লাভ করে। [৬]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Megan Sinnott. Queer Bangkok: twenty-first-century markets, media, and rights. Aberdeen, Hong Kong: Hong Kong U Press, 2011. Print.
  2. Sinnott, Megan (২০১১)। "Chapter 11: The Language of Rights, Deviance, and Pleasure: Organizational Responses to Discourses of Same-Sex Sexuality and Transgenderism in Thailand"Queer Bangkok; Twenty-First-Century Markets, Media, and Rights (Hardcover সংস্করণ)। University of Hong Kong Press। পৃষ্ঠা 205–228। আইএসবিএন 9789888083046 
  3. Jansuttipan, Monruedee (৮ আগস্ট ২০১৩)। "Interview: Anjaree Foundation Founder Anjana Suvarnananda on the Fight to Legalize Same-Sex Marriage in Thailand"Asia City (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০২০ 
  4. Chandran, Rina (২২ নভেম্বর ২০১৯)। "Thai LGBT+ activists in legal bid to force marriage equality"Reuters (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০২০ 
  5. Poore, Grace (১১ জুলাই ২০০৭)। "Thailand: LGBT Activists Fight for Constitutional Protection"OutRight Action International (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০২০ 
  6. "Awards"OutRight Action International (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ অক্টোবর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০২০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]