অশ্বক্রান্ত মন্দির

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অশ্বক্রান্ত মন্দির

অশ্বক্রান্ত মন্দির ব্রহ্মপুত্রর উত্তর পারে আসামের উত্তর গুয়াহাটিতে অবস্থিত তীর্থস্থান৷ এখানে প্রায় সম আয়তনের দুটি মন্দির আছে৷ একটি ব্রহ্মপুত্রের পারে পাহাড়ের নিম্ন ভাগে, অন্যটি পাহাড়ের উপরভাগে অবস্থিত৷ কিংবদন্তি অনুসারে, নরকাসুরকে বধ করার জন্য শ্রীকৃষ্ণ কামরূপে আসায় এই স্থানে অশ্ব বা ঘোড়ার দ্বারা ক্রান্ত বা অতিক্রান্ত হওয়ার জন্য এই অঞ্চলের নাম অশ্বক্রান্ত হয়৷ কোনো কোনো মতে এই অঞ্চল অশ্বক্লান্ত নামেও পরিচিত। জনশ্রুতি অনুযায়ী, এই অঞ্চলে খোঁজ পেয়ে শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুরকে বধ করেছিলেন। এখানে তার অশ্ব ক্লান্ত হয়ে পড়ে আর স্থানটি 'অশ্বক্লান্ত' নাম পায়৷ ব্রহ্মপুত্রের পারে একটি টিলার শিলায় কিছুটা ঘোড়ার খুরের মত চিহ্ন দেখা যায়৷ শ্রীকৃষ্ণ যেখানে ভরির খোঁজ পান তার নাম বিষ্ণুপদ৷ পৌরাণিক শাস্ত্র মতে এটি অশ্বগয়া আর এখানে মৃতদের আত্মার সদ্গতির জন্য পিণ্ডদান করা হয়৷ আজকাল ʼঅশ্বক্লান্তʼ বা ʼঅশ্বক্রান্তʼ দুটি শব্দেরই সমঅর্থে প্রয়োগ দেখা যায়৷

পাহাড়ের নিম্ন অংশে অবস্থিত মন্দিরটির কাছে অশ্বক্রান্ত নামের একটি কুণ্ডও ছিল৷ বর্তমানে অবশ্য এই কুণ্ড ব্রহ্মপুত্রের বুকে লীন হয়ে গেছে। চৈত্র মাসের অশোকাষ্টমী তিথিতে এখানে স্নান করার জন্য বহু তীর্থযাত্রীর সমাগম হয়৷ ১৭২০ সালে আহোম স্বর্গদেউ শিবসিংহ এই মন্দির নির্মাণ করিয়েছিলেন বলে জানা যায়৷ হিন্দুদের জন্য অশ্বক্রান্তর মাহাত্ম্য অসীম৷ সত্য যুগে পুষ্কর, ত্রেতাতে নৈমিষারণ্য, দ্বাপরে কুরুক্ষেত্র আর কলিতে অশ্বক্রান্ত পবিত্র তীর্থ বলে জনবিশ্বাস প্রচলিত৷ মন্দিরটির বর্তমান জায়গা প্রায় ৪৩ বিঘা ৪ কাঠা ১৭ লেচা৷[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বিশ্ব ঐতিহ্য, দ্বিতীয় প্রকাশ, শান্তনু কৌশিক বরুয়া,পৃষ্ঠা নং ১০

টেমপ্লেট:অসমের হিন্দুধর্মের মঠ-মন্দির