অধরা কণা
অধরা কণা একটি বৈজ্ঞানিক ধারণা। এর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন বাঙালী বিজ্ঞানী এম জাহিদ হাসান এর নেতৃত্বে থাকা একদল বিজ্ঞানী । [১] ভাইল ফার্মিয়ন হলো ফার্মিয়নের একটি উপদল। ১৯২৯ সালে হারম্যান ভাইল এই কণার অস্তিত্বের কথা প্রথম জানিয়েছিলেন, [২] যা ভরবিহীন। মোট তিন ধরনের ফার্মিয়নের মধ্যে ডিরাক ও মায়োরানা নামের বাকি দুই উপদলের ফার্মিয়ন বেশ আগেই আবিষ্কৃত হয়েছে।
আবিষ্কারের ইতিহাস
[সম্পাদনা]নিউট্রিনোর ভর আবিষ্কারের পর থেকেই বিজ্ঞানীরা ভাইল ফার্মিয়নের খোঁজে লেগে গেলেন। অবশেষে ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী অধ্যাপক জাহিদ হাসানের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী কণাটি খুজে পায়। কণাটি পাওয়া যায় ক্রিস্টাল বা যৌগিক কেলাসের মধ্যে এবং এটি একটি সেমি-মেটাল ক্রিস্টাল।এর নাম দেওয়া হয়েছে ট্যন্টেলাম আর্সেনাইড। এবং ক্রিস্টালটি তৈরি বিভিন্ন মৌলিক পদার্থ তথা বিসমাথ, থ্যালিয়াম, সালফার ও সেলেনিয়ামের সংমিশ্রণে, সেটি এমনিতে অন্তরক। কিন্তু এটির উপরিতলে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণার জগতে ইলেকট্রন খুবই কম বাধার মধ্যে ছোটাছুটি করতে পারে। ফলে এটি হয়ে উঠেছে অতি-পরিবাহী।আর ভাইল ফার্মিয়ন শুধু এই কেলাস বা ক্রিস্টালের মধ্যেই পাওা সম্ভব। কারণ ধারণা করা হয় পৃথিবীর শুরুর দিকে সব কণাই ভরবিহীন ছিলো।কিন্তু পরবর্তীকালে তা হিগস কণা থেকে ভর নিয়ে ভরযুক্ত হয়ে যায়। কাজেই বলা যায় এই কণা প্রকৃতিতে পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু ক্রিস্টালে সেই অবস্থা তৈরি করা সম্ভব । কারণ ক্রিস্টালের ইলেক্ট্রনের তরঙ্গ অনেকটা সেই সময় বা সেই অবস্থার মত যখন ভাইল ফার্মিয়নের অস্তিত্ব ছিলো। ফলে ক্রিস্টালে এই কণা উৎপন্ন হয়। আর এখান থেকেই পাওয়া যায় ভাইল ফার্মিয়ন বা ভরবিহীন কণা । বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত নতুন এই বস্তু-দশার (state of the matter) নাম দেওয়া হয়েছে ‘টপলোজিক্যাল ইনসুলেটর’ বা ‘স্থানিক অন্তরক’।
ব্যবহার
[সম্পাদনা]ভাইল ফার্মিয়ন বিভিন্ন ডিভাইস তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে। যেহেতু এটির ভর নেই তাই এটি অন্যান্য ইলেক্ট্রনের চেয়ে ১০০০ গুন বেশি চার্জ পরিবহন করতে পারে। আর গ্রাফিনে এর বেগ আরও বাড়ানো সম্ভব। কিন্তু এটি দিয়ে গ্রাফিন তৈরি অনেকটাই কঠিন। ভাইল ফার্মিয়ন দ্বারা তৈরি ডিভাইস হবে অনেক দ্রুত এবং সহজে গরম হবে না। ফলে নতুন ধরনের কোয়ান্টাম কম্পিউটিং হতে পারে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। [৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "৮৫ বছর পর অধরা কণার খোঁজ"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Millner, Jack (২০১৫-০৭-২৩)। "Weyl fermion: massless particle discovered"। Mail Online। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১০।
- ↑ "Massless particle more conductive than graphene paves way for more stable quantum computers"। International Business Times UK (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৭-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১০।