কাট্টাইকুট্টু
কাট্টাইকুট্টু হল দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে অনুশীলিত একটি গ্রামীণ থিয়েটারের ধরন।[১] ঐতিহ্য অনুসারে শুধুমাত্র পুরুষ অভিনেতারাই গান, অভিনয় এবং নৃত্য করে। এবং সঙ্গীতজ্ঞরা তাদের সাথে হারমোনিয়াম, মৃদঙ্গ এবং মূকাভিনয় দিয়ে সঙ্গত করে। টেরুকুট্টু এবং কাট্টাইকুট্টু শব্দদুটি প্রায়শই একের বদলে অন্যের জায়গায় ব্যবহৃত হয়। তবে, ঐতিহাসিকভাবে শব্দ দুটি পৃথক বলেই মনে হয়, অন্ততপক্ষে কিছু গ্রামে, দুটি ভিন্ন ধরনের প্রদর্শনের মধ্যে: যেখানে টেরুকুট্টু বলতে গ্রামের দেবতার মরিয়াম্মানের শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া দুজন অভিনেতার সচল অভিনয়কে বলা হয়, কাট্টাইকুট্টু বোঝায় সারা রাতব্যাপী, একটি নির্দিষ্ট স্থানে প্রায় পনেরজন অভিনেতা এবং সংগীত শিল্পীর মিলিত পরিবেশনাকে।[২]
ইতিহাস[সম্পাদনা]
কাট্টাইকুট্টু নামটি এসেছে কাট্টাই শব্দ থেকে, যেটি অভিনয়ের সময় অভিনেতাদের দ্বারা পরিধান করা বিশেষ অলঙ্কারগুলি বোঝায়; কুট্টু বলতে বোঝায় থিয়েটারকে। দর্শকেরা অভিনেতাদের মস্তকাবরণের আকার এবং তাদের সাজসজ্জা থেকে বিভিন্ন চরিত্রকে চিনতে পারে।[২]
কাট্টাইকুট্টু বহু বছর ধরে গ্রামীণ তামিলনাড়ুতে প্রদর্শিত আসছে। ১৯৯০ সালের নভেম্বরে, কাট্টাইকুট্টু অভিনেতা পেরুংগাট্টু পি. রাজগোপালএর উদ্যোগে সতেরোটি গ্রামীণ অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী মিলে তামিলনাড়ুর কাঞ্চীপুরম শহরে তাঁদের থিয়েটার প্রচারের জন্য একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁরা কাট্টাইকুট্টু নামটি ব্যবহার করে সম্মিলিতভাবে এই তৃণমূল স্তরের সংঘের নাম দিয়েছিলেন তামিলনাড়ু কট্টাইকুট্টু কলাই ভালারকি মুন্নেরা সংঘম। তাঁরা শুধুমাত্র কুট্টু বা টেরুকুট্টু নাম ব্যবহার করেন নি। আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত এই সংঘের মূল লক্ষ্যগুলি ছিল কাট্টাইকুট্টুকে প্রচার করা, নিজস্ব অধিকারে এটিকে একটি থিয়েটারের ধরন হিসাবে প্রতিষিত করা এবং পেশাদার অভিনেতাদের আগ্রহ আরও বাড়ানো। কুড়ি বছরেরও বেশি আগে এর সূচনার পর থেকেই, এই সংঘ বেশ কয়েকটি কার্যক্রম সহ একটি ছাতা সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তাদের কার্যকলাপের মধ্যে রয়েছে তরুণ, প্রতিভাবান কাট্টাইকুট্টু অভিনয় শিল্পীর ভবিষ্যত প্রজন্মকে শিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া (কাট্টাইকুট্টু গুরুকুলম), গ্রামীণ বালিকা এবং নারীর জন্য এই থিয়েটারের দরজা খুলে দেওয়া, একটি বার্ষিক থিয়েটার উৎসবের আয়োজন করা এবং নতুন ও প্রায়শই অভিনব নাটক নির্মাণ। ২০০৯ সালে সংগঠনটির নাম সংক্ষিপ্ত করে কাট্টাইকুট্টু সংঘ করা হয়েছে।[৩]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ Jackie Assayag (১৯৯৯)। The Resources of history: Tradition, narration and nation in South Asia। École française d'Extrême-Orient। আইএসবিএন 978-2-85539-607-1।
- ↑ ক খ Bruin, Hanne M de (১৯৯৯)। Kattaikkuttu: The flexibility of a south Indian theatre tradition। E. Forsten। পৃষ্ঠা 85–99। আইএসবিএন 978-90-6980-103-2। ওসিএলসি 42312297।
- ↑ Bruin, Hanne M. de (২০০০)। "Naming a theatre in Tamil Nadu"। Asian Theatre Journal। 17 (1): 98–122। ডিওআই:10.1353/atj.2000.0001।
আরো পড়ুন[সম্পাদনা]
Frasca, Richard Armando (১৯৯০)। Theatre of the Mahabharata: terukkuttu Performances in South India। University of Hawaii Press। আইএসবিএন 978-0-8248-1290-4। ওসিএলসি 21147946।